স্টাফ রিপোর্টার : জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগদান শেষে দেশে ফিরে নির্বাচনকালীন দল নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিলে আওয়ামী লীগের মতো প্রধানমন্ত্রীকে বিএনপিও সংবর্ধনা দেবে বলে জানিয়েছেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। আর এই বক্তব্যকে ‘অত্যন্ত যথার্থ’ উল্লেখ করে সমর্থন করেছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ। গতকাল সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরাম আয়োজিত এক স্মরণ সভায় এসব কথা বলেন তারা।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরলে আওয়ামী লীগের মতো বিএনপিও তাকে সংবর্ধনা দিতে চায়। তবে সেজন্য দেশে ফিরে জাতির উদ্দেশে তাকে একটি ঘোষণা দিতে হবে। তা হচ্ছে, দেশবাসীর সেন্টিমেন্ট ও দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে বর্তমান সঙ্কট উত্তরণে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনকালীন দল নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য একটি ঘোষণা দিবেন। যাতে জনগণ নির্বিঘেœ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে। জাতিও এটি প্রত্যাশা করে। এই ব্যবস্থার জন্য অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করলেও বিএনপি প্রধানমন্ত্রীকে সংবর্ধনা দিবে, ধন্যবাদ জানাবে। আর এই বিচক্ষণতার জন্য জাতি তাকে গ্রহণ ও বরণ করবেন। শামসুজ্জামান দুদুর দাবি, দেশকে এগিয়ে নিতে ও সঙ্কট কাটানোর জন্য এর বাইরে আর দ্বিতীয় কোনো পথ আছে বলে জানা নেই।
বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুর দাবিকে অত্যন্ত যথার্থ উল্লেখ করে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, শেখ হাসিনা বিজ্ঞ প্রধানমন্ত্রী। তিনি অনেক কাজ করেছেন। তার আর বাকি আছে কী ? গণতন্ত্রকে প্রাণবন্ত করা, ফিরিয়ে আনা- এই কাজটিই তার বাকি আছে। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ, এইদিকে একটু দৃষ্টি দিন। আপনি বেঁচে থাকবেন, অনেকদিন বেঁচে থাকবেন। সুতরাং আমরা আপনার এই কাজের-পদক্ষেপের প্রতীক্ষায় রইলাম।
তিনি বলেন, ভোটাধিকার ছাড়া গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরে পাওয়া যাবে না। ওই অধিকার পেতে হলে নির্বাচন ব্যবস্থাকে আগাগোড়া ঢেলে সাজাতে হবে। আর অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য নিরপেক্ষ স্বাধীন শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন করা দরকার।
নির্বাচন কমিশনের জন্য সার্চ কমিটি গঠন প্রসঙ্গে দেশের এই বরেণ্য বুদ্ধিজীবী বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য গতবার যেভাবে সার্চ কমিটি করা হয়েছিল, ওইভাবে সার্চ কমিটি করার আর প্রয়োজন নেই। সরকারের অত্যন্ত অনুগত কর্মকর্তাদের দিয়ে সরকার ঘোষিত সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচিত কিছু ব্যক্তিকে মহামান্য প্রেসিডেন্ট নিয়োগ দেবেন। বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থায় এটি সঠিক প্রক্রিয়া হবে না। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে সার্চ কমিটি গঠিত হতে হবে, এটি ঠিক। এছাড়া কোনো পথও নেই। কিন্তু সার্চ কমিটি গঠনের জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা কিংবা তাদের প্রতিনিধিদের নিয়ে সর্বপ্রথম আলোচনা হওয়া দরকার। প্রয়োজন আছে একমত হওয়ার। কেননা, রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে একটি সমঝোতার ভাব, একটা আপোষ-মীমাংসার মতো পরিবেশ সৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত সার্চ কমিটি কোনো কাজ করতে সক্ষম হবে না।
সাংবাদিক মরহুম আতাউস সামাদের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করা হয়। ইয়ুথ ফোরামের উপদেষ্টা মেজর (অব.) মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় জাতীয় পার্টির (জাফর) প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক এমপি আহসান হাবিব লিংকনসহ আয়োজক সংগঠনের নেতারা বক্তব্য রাখেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন