ইখতিয়ার উদ্দিন সাগর : চলতি অর্থবছরের জুলাই ও আগস্ট মাসে রপ্তানি আয়ের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছে তৈরি পোশাক ও পাট ও পাটজাত পণ্য। এর ফলে পুরো রপ্তানি আয়ের উপরে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তৈরি পোশাক রপ্তানি করে অর্থবছরের প্রথম ২ মাসে লক্ষ্যমাত্রার থেকে ৫ দশমিক ০১ শতাংশ কম আয় হয়েছে। পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানিতেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৩ দশমিক ০২ শতাংশ কম আয় হয়েছে।
চলতি অর্থবছরের জুলাই ও আগস্ট মাসে তৈরি পোশাক খাত থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে ৪৮৪ কোটি ৩৮ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার। কিন্তু এই সময়ে তৈরি পোশাক রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত ছিল ৫০৯ কোটি ৯৫ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার। এ হিসাবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫ দশমিক ০১ শতাংশ কম আয় হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ খাতটি থেকে। এদিকে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৬ কোটি ১৮ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার। এর বিপরীতে আয় হয়েছে ১৪ কোটি ৭ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৩ দশমিক ০২ শতাংশ কম।
চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের আগস্ট মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানি খাতে আয় হয়েছে ২৭২ কোটি ৬২ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার; যা এর আগের মাসের তুলনায় ৬০ কোটি ৮৭ লাখ ১০ হাজার ডলার বা প্রায় ৪ হাজার ৭৭৪ কোটি টাকা বেশি। গত আগস্ট মাসে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়েছিল, জুলাই মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানি খাতে আয় হয়েছে ২১১ কোটি ৭৫ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার। যা সে মাসের মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৪ শতাংশ।
২০১৬-১৭ অর্থবছরের জুলাই ও আগস্ট মাসে নিটওয়্যার পণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছে ২৪৭ কোটি ২৮ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার। যা এ সময়ের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ এবং গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৯ দশমিক ৪৯ শতাংশ বেশি। ২০১৫-১৬ অর্থবছরের জুলাই ও আগস্ট মাসে নিটওয়্যার পণ্য রপ্তানিতে ২২৫ কোটি ৮৫ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার আয় হয়েছিল। সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরের প্রথম ২ মাসে ওভেন গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছিল ২২২ কোটি ৬৪ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার। চলতি অর্থবছরের জুলাই ও আগস্ট মাসে এই খাতে আয় হয়েছে ২৩৭ কোটি ১০ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১২ দশমিক ৮৬ শতাংশ কম।
এদিকে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৬ কোটি ১৮ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার। এর বিপরীতে আয় হয়েছে ১৪ কোটি ৭ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৩ দশমিক ০২ শতাংশ কম। তবে সদ্য সমাপ্ত ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসের তুলনায় এ খাতের রপ্তানি আয় ৫ দশমিক ৫২ শতাংশ বেড়েছে। গত অর্থবছরের এ সময়ে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছিল ১৩ কোটি ৩৩ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার।
চলতি বছরের জুলাই ও আগস্টে মাসে পাটের বস্তা ও ব্যাগ রপ্তানিতে আয় হয়েছে ১ কোটি ৭৩ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার; যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ কম। তবে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় এই খাতের আয় ৮ দশমিক ০২ শতাংশ বেড়েছে। সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরের একই সময়ে পাটের বস্তা ও ব্যাগ রপ্তানিতে আয় হয়েছিল ১ কোটি ৬০ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার। চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে পাটের অন্যান্য দ্রব্য রপ্তানিতে ৮৪ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার আয় হয়েছে; যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৬ দশমিক ২৯ শতাংশ কম। একই সঙ্গে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় এই খাতের রপ্তানি আয় ১৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ কমেছে।
বিকেএমএ’র সাবেক সভাপতি ফজলুল হক বলেছেন, প্রতিবছর আয় বাড়ছে। এ বছরও তৈরি পোশাকে রপ্তানি আয় বেড়েছে। আমি মনে করি, রপ্তানি আয় বাড়া মূল বিষয়। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ মূল বিষয় নয়। তিনি আরো বলেন, রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণে সরকারি কর্মকর্তা বেশি করে বেধে দেয়, এটা পূরণ করা অনেক সময় সম্ভব হয় না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন