শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছে সে সকল দলের সঙ্গে আলোচনা করে ইসি গঠন করুন-বিএনপি

প্রকাশের সময় : ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার
সার্চ কমিটি নয়, অতীতে জাতীয় সংসদে যেসব রাজনৈতিক দল প্রতিনিধিত্ব করেছে, তাদের মতামত নিয়ে নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি। গতকাল সোমবার বিকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ দুইটি পৃথক আলোচনা সভায় এই দাবির কথা তুলে ধরেন।
নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা জেলার নবগঠিত কমিটির প্রথম সভায় গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমার বক্তব্য হচ্ছে, সার্চ কমিটি যিনি গঠন করবেন, তিনিও আওয়ামী লীগের, যাকে দিয়ে গঠন করবেন তিনিও আওয়ামী লীগের, যারা সার্চ কমিটি থেকে নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন, তারাও আওয়ামী লীগের। তারা কোনো নিরপেক্ষ ও সাহসী ব্যক্তিকে নির্বাচন কমিশন করবেন না। সেজন্য বলব, ইতোপূর্বে যেসব রাজনৈতিক দল সংসদে ছিলো তাদের মতামত, যারা সরকারে ছিলো তাদের মতামত- এসবের থেকে তালিকা নিয়ে যদি একটি নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করা হয়, সেক্ষেত্রে আস্থা আসতে পারে।
অপরদিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আওয়ামী লীগের সরকারের অধীনে যে সার্চ কমিটি হবে, তাদের প্রেসিডেন্ট যে সার্চ কমিটির মাধ্যমে যে নির্বাচন কমিশন উপহার দেবেন, সেটি রকীব উদ্দিন কমিশনের মতোই একটি কমিশন হবে। সুতরাং আমরা কেউ এদের কাছ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করি না। তবুও এদেশকে রক্ষা করার জন্য আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে আবেদন জানাবো- অতীতে যেসব রাজনৈতিক দল রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিলো, অতীতে যেসব রাজনৈতিক দল জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছে, তাদের মতামত নিয়ে একটি সার্চ কমিটি করা হোক।
কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ফেব্রুয়ারিতে। ৫ সদস্যের নতুন কমিশন নিয়োগে আগেরবারের এবারও ‘সার্চ কমিটি’ করা হচ্ছে বলে ইতোমধ্যে আভাস দিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
গতবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে ‘সার্চ কমিটি’র মাধ্যমে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করেছিলেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মো. জিল্লুর রহমান।
বর্তমান ইসির কার্যক্রমে অসন্তুষ্ট বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্প্রতি দলের এক আলোচনা সভায় বলেছিলেন, সার্চ কমিটি করেন, আর যাই করেন, জনমতের বাইরে গিয়ে কোনো কমিটি এদেশের মানুষ মেনে নেবে না। বর্তমান নির্বাচন কমিশনস সরকারের ‘আজ্ঞাবহ’ হয়ে কাজ করছে বলে বিএনপির অভিযোগ। গত সাধারণ নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপির সন্দেহ, একই ধরনের আরেকটি ইসি গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকার।
ঢাকা জেলা কমিটির প্রথম সভায় গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সার্চ কমিটি যিনি করবেন, তিনিই নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন- এ সব একটা ফরমালিটিজ। ঘুরে ফিরে দেখা যাবে, সবই কিন্তু ওই ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির থেকে আরো নিষ্কৃষ্টতম আরেকটি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বর্তমান সরকারের মেয়াদ আরো বৃদ্ধি করার একটি মহোৎসব চলছে। এ ব্যাপারে আমাদের সকলকে সজাগ থাকতে হবে। তিনি জানান, সার্চ কমিটি ও আগামী নির্বাচন কমিশন গঠনের ব্যাপারে শিগগির দলের নীতিনির্ধারকরা বসে দলের অবস্থান পরিষ্কার জানাবে।
ঢাকা জেলার নতুন সভাপতি দেওয়ান মো. সালাহউদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশরাফসহ কমিটির নেতৃবৃন্দ এই সভায় উপস্থিত ছিলেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের আলোচনা সভায় হাফিজ উদ্দিন আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, কাজী রকীব উদ্দিনের যে নির্বাচন কমিশন এটি ইতোমধ্যে পৃথিবীর সকল গণতন্ত্রকাম দেশের মুখে কলঙ্কের টিকা স্থাপন করে দিয়েছেন। কীভাবে কত প্রকার কারচুপি করতে হয়, এই কমিশন মানুষকে শিক্ষা দিয়েছেন। জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে শুরু করে সিটি করপোরেশন, উপজেলা, ইউনিয়ন পরিষদ, প্রত্যেকটি নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে। একটি রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ মনোনয়ন পাওয়ার পরে বিজয় মিছিল বের করেন, তারা নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করেন না।
সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, আমরা এদেশের ধ্বংসের মুখে দাঁড়িয়েছি, ধ্বংসের মুখ থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করার জন্য, জঙ্গিবাদের ভয়াল থাবা থেকে দেশবাসীকে মুক্ত করার জন্য অবিলম্বে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হোক।
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, যদি আগামীতে জনগণ ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়, সারাদেশে আগুন লেগে যাবে। গণতন্ত্রের সংকট আমাদের দেশের প্রতিটি মানুষের সংকট।
মুক্তিযুদ্ধের সেক্টার কমান্ডার শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার পদক প্রত্যাহার করে নেয়ার সরকারের সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেন হাফিজউদ্দিন আহমেদ।
মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সারোয়ার, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, আবুল হোসেন, লেবু গাজী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন