সিরাজগঞ্জ থেকে সৈয়দ শামীম শিরাজী : লাগাতার বর্ষণ ও ভারতের আসাম থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিরাজগঞ্জের কাছে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে যমুনা স্রোতে ঘূর্ণাবর্তার সৃষ্ট হওয়ায় নদী পাড়ের ভাঙন এবং নদীতীর রক্ষা বাঁধে ধস নামছে। ইতিমধ্যে শহরের নিকটবর্তী পাঁচঠাকুরী পয়েন্টে এ ভাঙন শুরু হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ১৫০ মিটার এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। স্রোতের তীব্রতা বৃদ্ধি পেলেও এ অংশের ভাঙন আরো তীব্র থেকে তীব্রতর হবার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ভাঙন অব্যাহত থাকলেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোনো কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে পৌঁছেনি বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন। অপরদিকে সিরাজগঞ্জ জেলার ৫টি উপজেলার নদী তীরবর্তী এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে। পুনরায় ব্যান্যার আশঙ্কায় নদী কূলের মানুষ ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। জানা গেছে, ৩৬ ঘণ্টার লাগাতার বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে যমুনা নদীর পানি স্ফিত হয়ে পড়েছে। এর সঙ্গে দক্ষিণা বাতাস যুক্ত হওয়ায় নদীরপাড় নেতিয়ে পড়ায় দু’পাড়ের কূলে আছড়ে পড়ছে। জেলার বেলকুচি, চৌহালী, শাহজাদপুর, কাজিপুর ও সদর থানার এলাকায় ভাঙন তীব্র হচ্ছে। নদীর তীরবর্তী নিম্ন অঞ্চলের ফসল ডুবে গেছে। তৃতীয় দফা বন্যার আশঙ্কায় ভুগছে জেলাবাসী।
স্থানীয়রা জানান, রাত থেকেই ভাঙন শুরু হয়। এ সময় ভাঙনে বাঁশঝাড় ও গাছপালা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। ভাঙন রোধে পর্যন্ত পাউবোর কোনো কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে না আসায় জনমনে ক্ষোভ বেড়েছে। এমনকি এলাকায় কোনো জনপ্রতিনিধি ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেনি। এলাকার এক বৃদ্ধ জানায়, এ পর্যন্ত নয়বার বাাড়ভাঙা পড়েছে। এবার ভাঙলে দশবার হবে। আর পারছি না নদী ভাঙনের যন্ত্রণা সহ্য করতে। সিরাজগঞ্জ পাউবো সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালে নদী তীর রক্ষা প্রকল্পের এ ১৮নং প্যাকেজের ৫’শ মিটার সংস্কার কাজ শেষ হয়েছে। কাজ শেষ হওয়ার এক বছরের মাথায় বাঁধটির ২শ’ মিটার অংশে ভাঙন দেখা দেয়। ওই ভাঙন সংস্কারের পর গত বন্যা ভালোভাবে কেটে গেলেও শুস্ক মৌসুমের শুরুতে আবারও ভাঙন দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও (সেকশন অফিসার) রনজিত কুমার সাহা বলেন, ২০১৪ সালে নদী তীর সংরক্ষন কাজের ওই ১৮নং প্যাকেজটির কাজ শেষ হয়। ২০১৫ সালের বন্যায় বাঁধটিতে ভাঙন দেখা দেয়। ওই ভাঙন সংস্কারের পর চলতি বছর বন্যায় প্যাকেজটির কোনো অংশেই সমস্যা দেখা দেয়নি। কিন্তু পানি কমার সাথে সাথে যমুনার ঘূর্ণাবর্তের কারণে পাঁচঠাকুড়ি এলাকায় আকস্মিক ভাঙন দেখা দিয়েছে। তবে এতে আতংকিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন