ইনকিলাব ডেস্ক : মার্কিন নির্বাচনে প্রথম টেলিভিশন বিতর্কের মঞ্চে রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হারিয়ে জয়ী হলেন হিলারী ক্লিনটন। বাংলাদেশ সময় গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৭টায় নিউইয়র্কে শুরু হওয়া ৯০ মিনিটের এই বিতর্কে সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করছেন এনবিসি টিভির উপস্থাপক লেস্টর হল্ট। ১০ কোটি লোক এই বিতর্ক দেখেছেন। বির্তকের শুরুতে ট্রাম্প ক্যাম্পেইন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীতার দিকে একধাপ এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখলেও ঘোড়ার লাগাম এখন হিলারির হাতে। যদিও এর আগেই বিশেষজ্ঞ মহল থেকে শোনা গিয়েছিল, বিতর্কে জেতার সম্ভাবনা হিলারিরই বেশি, অন্তত তিনি হারবেন না। কারণ মার্কিন ফার্স্ট লেডি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, সিনেট সদস্য, আইনজীবি হিসেবে দায়িত্ব পালন করা হিলারীর ঝুলিতে আছে ৩০ বছরের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা। বির্তকে ট্রাম্প তার অন্যান্য পরিচয়, সফল ব্যবসা সম্পর্কে বলেন। হিলারিকে খোঁচা মেরে তিনি বলেছেন, আমরা কেন যে কাউকে বিশ্বাস করব না তার কারণ ৩০ বছর ধরে রাজনীতি করেও তিনি জাতির সমস্যা সমাধান করতে পারেন নি। ট্রাম্প বিপজ্জনক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান থেকে আমেরিকার স্বার্থ সুরক্ষা কথা বলেন। ফক্স নিউজের এই প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্প তার ধৈর্য ধরে রাখতে পেরেছিলেন, তিনি অনন্ত শুরু করেছেন।
অন্যদিকে, হিলারি ক্লিনটন অনড় ছিলেন। তিনি তার রাজনৈতিক জ্ঞান এবং কথা বলার দক্ষতা প্রমাণ করেছেন। এটি নির্বাচনী হাওয়াকে বদলে দিবে। হিলারী আমেরিকাকে অর্থনৈতিক ভাবে এগিয়ে নেয়ার কথা বলেন ও সবার জন্য কাজ করার অঙ্গীকার করেন। তবে হিলারী এটি প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন যে কিভাবে তিনি পরিবর্তন আনবেন।
প্রশ্ন হল হিলারী কেন জিতলেন? অবশ্যই তার অভিজ্ঞতা, যোগ্যতা এবং প্রতিটি পুলে স্থিরতা বজায় রাখার জন্য। অন্যদিকে ট্রাম্প কিছু সুযোগ হাতছাড়া করেছেন। হিলারী যখন সাইবার নিরাপত্তার কথা বলেছেন বা একজন বিশেষ আইনজীবির কথা উল্লেখ করেছেন এ সময় ট্রাম্প তার ব্যক্তিগত সার্ভার নিয়ে তাকে আক্রমণ করতে পারতেন।
এদিকে, ট্রাম্প যখন বলেছেন, তিনি ফেডারেল ট্যাক্স প্রদান করেন না কারণ সরকার ডলারের অপব্যবহার করে, একথা বলে তাকে কিছুটা লড়াই করতে হয়েছে। অন্যদিকে হিলারি পররাষ্ট্রনীতি এবং বারাক ওবামার প্রেসিডেন্সি ইস্যু নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছেন। ক্লিনটন তার বিরুদ্ধে ট্রাম্পের কথা শব্দগুলো কার্যকরভাবে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন। বিশেষ করে পারমাণবিক বোমার গুরুত্ব এবং মিত্রদের পাশে আমেরিকার থাকার বিষয়টি। এছাড়া আমেরিকায় বর্ণবাদী উত্তেজনা নিরাময়ের জন্য হিলারী উদ্বিগ্নতা প্রকাশের কারণে তিনি আরো বেশি নাম্বার পেয়েছেন। এছাড়াও হিলারী তার বক্তব্যে সাধারণ মানুষের গল্প তুলে ধরেছেন যা তার মানবিকতা তুলে ধরেছে এবং এটি প্রকাশ করেছে যে তিনি জনগণের জন্য কাজ করবেন এবং সকল আমেরিকানদের সাহায্য করবেন। ট্রাম্প অকাট্য এবং অপ্রাসঙ্গিক ছিলেন।
উল্লেখ্য, এই দুই প্রার্থী ইতিমধ্যে প্রায় দেড় বছর কাটিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণে। অসংখ্য বিতর্কও নির্বাচনী সভায় অংশ নিয়েছেন, পত্রিকা-টিভিতে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। তবে এই বিতর্কের গুরুত্ব আগের সবকিছুকেই ম্রিয়মাণ করে দেবে। কারণ এই বিতর্কের ওপরই নির্ভর করছে যুক্তরাষ্ট্রের অর্ধেক ভোটারের সিদ্ধান্ত। তিন পর্বের বিতর্ক দেখেই আমেরিকার ভোটারদের প্রায় ৫০ শতাংশ সিদ্ধান্ত নেবেন, ৮ নভেম্বরের নির্বাচনে কাকে ভোট দেয়া যায়। -ওয়েবসাইট
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন