শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

পাইলটদের কর্মসূচি আশ্বাসে স্থগিত

অসন্তোষে লোকসান বিমানের কোটি টাকা

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৯ জুলাই, ২০২১, ১২:০২ এএম

বেতন কাটা চলমান রাখায় রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাইলটরা অসন্তোষ প্রকাশ করে চুক্তির বাইরে কাজ না করার ঘোষণায় দিয়েছিল। আর তাতেই এক সপ্তাহে কমপক্ষে ১০ কোটি টাকা লোকসানে পড়ে বিমান। অন্যদিকে বর্তমান পরিস্থিতিতে চুক্তির বাইরে পাইলটরা কাজ না করলে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি রুটে ফ্লাইট বন্ধ হওয়ার শঙ্কা ছিল। এমন পরিস্থিতিতে বিমান কর্তৃপক্ষ দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে চুক্তির বাইরে কাজ না সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন পাইলটরা।

করোনাভাইরাসের প্রভাবে লোকসানের প্রভাব কাটাতে গত বছর থেকেই কর্মীদের বেতন কাটা, ওভারটাইম সুবিধা বাতিল করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। তবে সম্প্রতি বিভিন্ন পদের কর্মীদের বেতন কাটা বন্ধের ঘোষণা দিলেও, পাইলটদের বেতন কাটা চলমান রাখার ঘোষণা দিয়েছে বিমান। এ কারণে ক্ষুব্ধ হন বিমানের পাইলটরা।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিমান প্রশাসন বিভাগ গত ১৩ জুলাই এক আদেশে জানায়, ২৮ জুন অনুষ্ঠিত বিমান পরিচালনা পর্ষদের ২৫৬তম সভায় সিদ্ধান্ত হয় বেতনক্রম-৬ ও তার ওপরের কর্মকর্তাদের বেতন কর্তনের হার হ্রাস করা হয়েছে। সে আদেশে বলা হয়, বেতনক্রম ৬ হতে ৮ পর্যন্ত কর্মকর্তাদের জুলাই মাস থেকে আর বেতন টাকা হবে না, যা আগে গ্রস সেলারি থেকে ১০ শতাংশ কাটা হতো। বেতনক্রম ৯ থেকে তার ওপরের কর্মকর্তাদের জুলাই মাস থেকে আর বেতন টাকা হবে না, যা আগে গ্রস সেলারি থেকে ১৫ শতাংশ কাটা হতো।তবে পাইলটদের বেতন কাটা বন্ধ করা হয়নি।

আদেশে বলা হয়, ককপিট ক্রু যাদের চাকরির বয়স ৫ বছর পর্যন্ত শুধু তাদের জুলাই মাস থেকে আর বেতন টাকা হবে না, যা আগে গ্রস সেলারি থেকে ১৫ শতাংশ কাটা হতো। ৫ থেকে ১০ বছর যাদের চাকরি বয়স তাদের কর্মকর্তাদের জুলাই মাস থেকে ৫ শতাংশ কাটা হবে, যা আগে গ্রস সেলারি থেকে ২০ শতাংশ কাটা হতো। ১০ বছরের বেশি যে পাইলটদের চাকরির বয়স তাদের জুলাই মাস থেকে ২৫ শতাংশ বেতন কাটা হবে, যা আগে গ্রস সেলারি থেকে ৪০ শতাংশ কাটা হতো।

এ আদেশের পর বিমানের পাইলটদের সংগঠন সংগঠন বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স পাইলট অ্যাসোসিয়েশন (বাপা) কয়েক দফা বৈঠক করে। সর্বশেষ গত ১৪ জুলাই বৈঠক করে আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেয় তারা। বাপার নির্বাহী কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়ে বিমান কর্তৃপক্ষের এই প্রশাসনিক আদেশের প্রতিবাদে চিঠি দেওয়া হয়। ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে বিমানের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীর মতো বেতন সমন্বয় জন্য অনুরোধ করা হবে। ১৫ জুলাই থেকে লকডাউন শিথিল হলে সমস্ত পাইলটদের নিয়ে আলোচনা করা হবে। ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে বেতন সমন্বয় না করলে পাইলটরা শুধুমাত্র বিমান ও বাপার মধ্যে সম্পাদিত দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ফ্লাইট পরিচালনা করবে।

পাইলটদের এ ঘোষণার পর থেকেই মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন রুটে টিকিট বিক্রি বন্ধ ও রিফান্ড শুরু করেন যাত্রীরা। তাতে এক সপ্তাহ কমপক্ষে ১০ কোটি টাকা লোকসান হয় বিমানের। এরপর পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক করতে এয়ারলাইন্সটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক পাইলটদের আন্তরিক হওয়ার আহবান জানান। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে বাপা সভাপতি ক্যাপ্টেন মাহবুবুর রহমান বলেন, সমস্যাটি নিয়ে বিমান পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যানের সঙ্গে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে।

বেতন সমন্বয়ের বিষয়টি দ্রুত সমাধানের আশ্বাস পেয়েছি। বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকও আশ্বাস দিয়েছেন আগামী বোর্ড মিটিংয়ে এ বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হবে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন