‘হেপাটাইটিস সি’ হচ্ছে একটি নীরব ঘাতক। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির লক্ষণ শরীরে খুব কম প্রকাশ পায়। অনেক সময় ভাইরাসটি শনাক্ত করাও যায়না এবং প্রায় নীরবেই শুষে নেয় জীবনীশক্তি। তবে এই রোগের চিকিৎসা নিয়ে স্বস্তির সংবাদ পাওয়া গেছে। স¤প্রতি মালয়েশিয়া ‘হেপাটাইটিস সি’ চিকিৎসায় সবচেয়ে কার্যকরী ও খরচের দিক দিয়ে সাশ্রয়ী একটি ওষুধকে রেজিস্ট্রেশনের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) কাছে আবেদন করেছে। জানানো হয়েছে, হেপাটাইটিস সি চিকিৎসায় ব্যবহৃত সোফোসবুভির সাথে রাভিডাসভির মেডিসিনটি যুক্ত করে অনেক ভালো সাড়া পাওয়া যায়। বিগত ৫ বছর যাবত ড্রাগস ফর নেগলেক্টেড ডিজিজ ইনিশিয়েটিভের (ডিএনডিআই) সঙ্গে গবেষণার পর ইতিবাচক ফলাফল পাওয়ায় গত জুনে মালয়েশিয়া সরকার তাদের দেশে এটিকে অনুমোদন দেয়। এখন সারাবিশ্বে একই পদ্ধতি ব্যবহারের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদনের জন্য আবেদন করা হয়েছে। ডিএনডিআই’য়ের দক্ষিণপূর্ব এশিয়া বিষয়ক পরিচালক জিয়েন মাইকেল পিয়েডাগনেল বলেছেন, আমরা মধ্যম-আয়ের দেশগুলোর জন্য কার্যকরী চিকিৎসা পদ্ধতি উন্নয়নের চেষ্টা চালাচ্ছি। প্রথমে মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডের মত দেশে ক্লিনিকাল ট্রায়ালে যাবো। ধীরে ধীরে অন্যান্য দেশেও এই চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে কাজ করব। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশ্বে অন্তত ৭১ কোটিরও বেশির মানুষ হেপাটাইটিস সি নিয়ে জীবনযাপন করছে। এটি রক্তে বাহিত হওয়া একটি ভাইরাস যা লিভার সিরোসিসের দিকে নিয়ে যায় আক্রান্ত ব্যক্তিকে। এই ভাইরাস লিভার ক্যানসারের অন্যতম কারণ। এখন পর্যন্ত এই রোগের কোনো ভ্যাকসিন আবিস্কার হয়নি কারণ এই রোগের কোনো লক্ষণই ধরা পড়ে না। যখন ধরা পড়ে ততক্ষণে লিভার গুরুতরভাবে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। এই রোগের চিকিৎসায় বিগত বছরগুলোতে এমনসব ওষুধ ব্যবহার করা হয়েছে যা শুধু মাত্র সাধারণ লক্ষণগুলোর সুস্থতায় কাজে লাগতো। অনেক সময় দেখা যেত রোগীর উপর তা কাজও করছে না, বরং অবস্থা আরও খারাপের দিকে নিয়ে গেছে। পিয়েডাগনাল আরও বলেন, আমাদের এই আবিস্কার চিকিৎসাবিজ্ঞানে এক বিপ্লব বয়ে আনবে বলে আমি বিশ্বাস করি। আমরা রোগীদের প্রথমবারের এমন একটি ওষুধ উপহার দিচ্ছি যার নামমাত্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে এবং হেপাটাইটিস সি রোগীকে সুস্থ করে তুলতে অত্যন্ত কার্যকরি। আল-জাজিরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন