বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বিএনপি কার্যালয়ে আতঙ্ক কাটছে না

নেপথ্যের কারণ খুঁজতে তিন সদস্যের কমিটি আজীবন বহিষ্কৃত হতে পারে কয়েক ছাত্রনেতা

প্রকাশের সময় : ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৪৫ পিএম, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬

স্টাফ রিপোর্টার : ‘আসল বিএনপি’ ‘ছাত্রদলের বিদ্রোহী গ্রুপ’ নানা নামের ব্যানার সামনে এনে দফায় দফায় বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুরসহ অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটছে। দলের বিপর্যয় কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর আপ্রাণ চেষ্টায় নেতাকর্মীরা। কাক্সিক্ষত জাতীয় কাউন্সিল আসন্ন। প্রস্তুতি চলছে জোরেশোরে। এই মুখ্যম সময়ে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা।
এদিকে সমন্বয় ঘটাতে ছাত্রদলের কমিটির আকার এবার দ্বিগুণেরও বেশি। তারপরও কেন বিদ্রোহ? এর নেপথ্যের কারণ খুঁজছে বিএনপির নীতি-নির্ধারকরা। দলের স্থায়ী কমিটির এজ নেতাসহ দুই সম্পাদককে দায়িত্ব দিয়েছেন শীর্ষ নেতা বেগম খালেদা জিয়া। তদন্ত চলছে গোপনে। দোষীদের আজীবন বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে দলে।
গত সোমবার হামলা, ভাঙচুর ও তান্ডবের কারণে পরের দিন গতকাল মঙ্গলবার দিনব্যাপী বিএনপির নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ছিল আতঙ্ক। দলের হাইকমান্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী সকাল থেকে পালা করে কার্যালয় পাহাড়া দিয়েছে ছাত্রদল নেতারা। এরই মধ্যে বিকেলে কথিত ছাত্রদলের বিদ্রোহীরা কার্যালয়ের সামনে এলেও পুলিশি কড়া নজরদারির কারণে তেমন কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তবে সন্ধ্যায় কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটায়। পাশে মসজিদের গলিতে হালকা ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
গতকাল সকালে সরেজমিন দেখা গেছে, সোমবারের তা-বের চিহ্ন রয়েছে পুরো কার্যালয়ে । বিশেষ করে চারতলায় ছাত্রদেলের কেন্দ্রীয় কার্যালযে পোড়া ধ্বংসযজ্ঞ ছাড়া কিছুই নেই। আর আগের রাত থেকেই গুঞ্জন ছিল দুর্বৃত্তরা আবারও আসতে পারে যেকোন সময়ে। এজন্য দলের হাইকমান্ড ছাত্রদলের বর্তমান কমিটির নেতাদের কার্যালয় পাহাড়া দেওয়ার নির্দেশনা দেয় সোমবার রাতেই। নির্দেশনা অনুয়ায়ী মঙ্গলবার সকাল থেকে ছাত্রদলের প্রায় পাঁচ শতাদিক নেতাকর্মী বিএনপির কার্যালয়ের সামেন ও আশপাশে অবস্থান নেয়। আর দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, কেন্দ্রীয় নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, খায়রুল কবির খোকন, আব্দুস সালাম আজাদ, আসাদুল করীম শাহিন, কাজী আবুল বাশার, বেলাল আহমেদ, রফিক শিকদার কার্যালয়ে আসেন সকালেই। বেলা সাড়ে ১২টায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আসেন ছাত্রদল সভাপতি রাজিব আহসান। প্রায় ঘন্টাব্যাপী অবস্থান করেন নেতাকর্মীদের নিয়ে।
এদিকে সকাল থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ছাত্রদলের নেতাকর্মী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে থাকে। ৩টার পরপরই পুলিশ ছাত্রদল কর্মীদের কার্যালয়ের সামনে থেকে সরিয়ে দেয়। এর কিছুক্ষণ পরই বিদ্রোহী নেতাকর্মীরা আসেন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। তারা পুলিশের পাহাড়ায় প্রায় আধাঘণ্টা অবস্থান করে এবং নতুন কমিটির নেতাদের বিরুদ্ধে শ্লোগান দেয়। এসময় ছাত্রদলের নতুন কমিটিতের নেতাকর্মীরা কার্যালয়ের আশপাশে থাকলেও গ্রেফতারের আশঙ্কায় বিদ্রোহীদের কিছু বলেনি। তবে বিদ্রোহীরা মিছিল নিয়ে চলে যাওয়ার সময় মসজিদ গলির সামনে ওত পেতে থাকা ছাত্রদলের নেতারা তাদের ধাওয়া করে। এসময় বিদ্রোহীরা পালিয়ে যায়। দিনব্যাপী কার্যালয় পাড়াহার দায়িত্বে থাকা অন্যতমদের মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আসিফুর রহমান বিপ্লব জানান, উপরের নির্দেশনায় তারা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দিনব্যাপী পাহাড়া দিচ্ছেন। রাতেও পালা করে ছাদত্রদল নেতাকর্মীরা কার্যালয়ের আশপাশে থাকবে। কোন অবস্থাতে আর অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে দেওয়া হবে না। বিপ্লব জানান, পুলিশের ছত্রছায়ায় তারা পার্টি অফিসে এসেও সুবিধা করতে পারেনি। ছাত্রদল কর্মীরা তাদের ধাওয়া দিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছে।
এদিকে বিএনপি অফিসে থাকা কেন্দ্রীয় নেতা ও স্টাফদের সঙ্গে আলাপকালে জানায়, তারা চরম আতঙ্কে আছেন। কারণ একটাই পুলিশের ছত্রছায়ায় যদি বহিরাগতরা আসে তাহলে তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না। কিন্তু এমনিতে বাইরের কেউ আসলে তা মোকাবেলা করার মতো ক্ষমতা তাদের আছে।
এ বিষয়ে দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী জানান, এ সরকারের আমলে আতঙ্কে নেই এমন কাউকে পাওয়া যাবে না। আর বিএনপিতে আতঙ্ক না থাকার কারণও নেই। কারণ সরকার বিএনপিকে বেকায়দায় ফেলতে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। এর অংশ হিসেবে একবার আসল বিএনপির নামে একবার ছাত্রদলের কথিত বিদ্রোহীদের নামে হামলার চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু এসব করে সরকারের শেষ রক্ষা হবে না।
গত শনিবার ছাত্রলের নতুন কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে ফের ক্ষোভ দেখা দেয়। পদবঞ্চিত, প্রত্যাশানুযায়ী পদ না পাওয়া, পদ দেওয়ার ক্ষেত্রে বৈষ্যমতার অভিযোগ এনে সোমবার বিকালে নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তান্ডব চালায় দুর্বৃত্তরা। তাতে যোগ হয় ছাত্রদলেরই কিছু নেতাকর্মী। এর আগেও দল গোছানোর অংশ হিসেবে ২০১৪ সালে ১৪ অক্টোবর রাজিব আহসানকে সভাপতি ও মো. আকরামুল হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে ছাত্রদলের ১৫৩ সদস্যের আংশিক কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণার পর পদবঞ্চিত এবং অবমূল্যায়িত নেতাকর্মীরা ব্যাপক বিক্ষোভ করেন।
এছাড়া কামরুল হাসান নাসিমের নেতৃত্বে আসল বিএনপি সম্প্রতি দুদফা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে তান্ডব চালায়। সঙ্গত কারণেই নিয়া পল্টনের বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আতঙ্ক।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
Tania ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১:০১ পিএম says : 0
everybody should be careful
Total Reply(0)
Faisal ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১:০৪ পিএম says : 0
ober ke bihisker korte hobe
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন