শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

এখনো কোনো আইপি টিভিকেই অনুমোদন দেয়া হয়নি

সাংবাদিকদের তথ্যমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩ আগস্ট, ২০২১, ১২:০১ এএম

তথ্য ও স¤প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, কোনো আইপি টিভিকেই এখনো অনুমোদন দেয়া হয়নি। রেজিস্ট্রেশন দেয়ার জন্য আমরা দরখাস্ত আহ্বান করেছিলাম। সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত ৬শ’র কাছাকাছি আবেদন পড়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে খুব সহসা এ মাসের মধ্যেই আমরা কিছু আইপি টিভি অনুমোদন দেব। রোডম্যাপ ঠিক করেই সরকার ব্যাপক হারে টিকা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে, বিএনপি পূর্বের ধারাবাহিকতায় এ নিয়েও বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা করছেন বলেন তিনি।
সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। তিনি বলেন, চলতি মাসেই কিছু আইপি টিভির অনুমোদন দেয়া হবে। নীতিমালা অনুযায়ী আইপি টিভি সংবাদ পরিবেশন করতে পারবে না। তিনি বলেন, দেশে কোনো আইপি টিভির অনুমোদন নেই। আমরা ইত্যোমধ্যে রেজিস্ট্রেশন দেয়া শুরু করেছি এবং আবেদন আহ্বান করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ৬০০’র মতো আবেদন জমা পড়েছে। আমরা খুব সহসা, এ মাসের মধ্যেই অনুমোদন দেব। যেহেতু আমরা অনুমোদন দেয়া শুরু করিনি, তাই কোনোটার অনুমোদন নেই।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, হেলেনা জাহাঙ্গীরের আইপি টিভিরও অনুমোদন নেই। কিছু আইপি টিভির বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আছে। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা সময় সময় ব্যবস্থা গ্রহণ করি। কিছু ছিু আইপি টিভি দেখা গেছে ব্যক্তিস্বার্থে পরিচালিত হয়। তারপর নানা ধরনের বিভ্রান্তি ছড়ায়, নানা ধরনের অনুষ্ঠান প্রচার করে, সংবাদ পরিবেশন করে। এ ধরনের কোনো অভিযোগ যদি আমাদের নজরে আসে, তাহলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করি। ইতোমধ্যে অনেকগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তার ক্ষেত্রেও একই ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দেশে বহু আইপি টিভি চালু আছে এবং বহু আইপি টিভি আসবে বা হবে। যে যার মতো করে সংবাদ পরিবেশন করে বিভ্রান্তি ছড়াবে, এটি কাম্য নয়। সুতরাং যে নীতিমালা পাস হয়েছে সেখানে বলা হয়েছে। আইপি টিভি রেজিস্ট্রেশনের অনুমোদন তথ্য ও স¤প্রচার মন্ত্রণালয় দেবে। তবে তারা সংবাদ পরিবেশন করতে পারবে না।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ‘সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ছাড়া মাসে এক কোটি টিকা দেয়ার ঘোষণা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা’ মন্তব্য নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান বলেন, সরকার রোডম্যাপ ঠিক করেই এ ঘোষণা দিয়েছে। বিএনপি নেতারা টিকা নিয়ে বরাবরই বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন। সিরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অ্যাস্ট্রাজেনেকার যে টিকা গবেষণায় অত্যন্ত সফল টিকা হিসেবে উঠে এসেছে, সেই টিকা নিয়েও তারা বিভ্রান্তি ছড়িয়েছিল যে এই টিকা দিলে বরং মানুষের স্বাস্থ্যহানি হবে। পরবর্তীতে তারা নিজেরাই আবার সেই টিকা নিয়েছেন। সুতরাং তারা আগে থেকে বিভ্রান্তি ছড়ানোর ধারাবাহিকতায়ই এই কথাগুলো বলছেন। একজন দায়িত্বশীল রাজনৈতিক নেতা হিসেবে বা একটি বড় রাজনৈতিক দলের মহাসচিব হিসেবে বিভ্রান্তি ছড়ানো কখনো সমীচীন নয়।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহর মন্তব্য সরকারের ভুল নীতির কারণে দেশে মৃত্যুহার বেড়েছে এর জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব ও উপমহাদেশের পরিস্থিতি তার অজানা থাকার কথা নয়। আপনারা জানেন যে, করোনাভাইরাসের ডেলটা ভেরিয়্যান্ট পৃথিবীর একশ’র বেশি দেশে ছড়িয়েছে। যে সমস্ত দেশে ৮০ ভাগ মানুষকে টিকা দেয়া হয়েছে। সেখানেও এই ভেরিয়্যান্ট ছড়িয়েছে। অনেক দেশে, অনেক অঞ্চলে যেখানে সবকিছু মুক্ত করে দেয়া হয়েছিল সেখানে আবার নতুনভাবে স্বাস্থ্যবিধি আরোপ করা হয়েছে। এগুলো জাফরুল্লাহ সাহেব জেনেও মাঝেমধ্যে জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য কিছু কথাবার্তা বলেন। তার এই বক্তব্য বিভ্রান্তিমূলক ছাড়া অন্য কোনো কিছু না।
তিনি বলেন, শুরু থেকেই করোনা মহামারি মোকাবিলায় সরকার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে এসেছে এবং সে কারণে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশে করোনার প্রথম ঢেউ আমরা অত্যন্ত সফলভাবে মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছি এবং দ্বিতীয় ঢেউও আমরা এখন পর্যন্ত অনেকটা মোকাবিলা করতে পেরেছি। তিনি বলেন, ইতোমধ্যেই গণটিকাদান শুরু হয়েছে এবং সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেয়া হয়েছে, এবছরের মধ্যে ১০ কোটি ডোজ টিকা আসবে এবং সম্ভব হলে প্রতিমাসে এক কোটি মানুষকে টিকা দেয়া হবে। এগুলো জাফরুল্লাহ সাহেবরা জেনেও না জানার ভান করেন আর জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য নানা বক্তব্য রাখেন।
লকডাউনের মধ্যেই রফতানিমুখী শিল্প কারখানা খুলে দেয়া, শ্রমিকদের দুর্ভোগ, ব্যাপক করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা এবং এ নিয়ে কেন সচিব পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান বলেন, ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকেই সরকারের কাছে দাবি উপস্থাপন করা হয়েছে এবং এক্ষেত্রে সচিব বৈঠক করলেও সিদ্ধান্তটি কোনো ব্যক্তি বা সচিবের নয়। এটি সরকারেরই সিদ্ধান্ত। তবে গার্মেন্টস কারাখানার মালিকদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল ঢাকায় অবস্থানরত বা ঢাকার আশেপাশে যে সমস্ত শ্রমিক আছে তাদের দিয়ে তারা আপাতত শুরু করবেন। কোনো কোনো গার্মেন্টস মালিক সেটির ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন। তাদের পক্ষ থেকে ঢাকার বাইরের শ্রমিকদেরও কাজে যোগদান করার জন্য ফোন করা হয়েছে। এখানেই বিভ্রান্তিটা হয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, মনে রাখতে হবে, আমাদের অর্থনীতি অনেকটা গার্মেন্টসের ওপর নির্ভরশীল। কারণ রফতানি আয়ের ৮০ ভাগ এখান থেকে আসে। এটা অত্যন্ত স্পর্শকাতর সেক্টর। সময়মতো ডেলিভারি দিতে না পারা বা এক সপ্তাহ দেরি হলে অর্ডার বাতিল হয়ে যায়। এটি ব্যাপক আকারে হলে দেশ অর্থনৈতিক ঝুঁকির মধ্যে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। সেই বিষয়টাও দেখতে হয় ব্যবসায়ী স্বার্থে নয়, দেশের স্বার্থে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন