ইনকিলাব ডেস্ক : বিশে^র বিভিন্ন দেশে বুরকিনি নিয়ে যে বিতর্কিত অবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল তার জের ধরে এটি এখন ৯০ ভাগ মুসলিম জনসংখ্যা অধ্যুষিত তুরস্কে ইসলামিক ফ্যাশন হিসেবে আবির্ভুত হয়েছে। ছড়িয়ে পড়ছে সারা বিশে^। জোয়ার এসেছে ইসলামিক ফ্যাশনের। বুরকিনি, হিজাব ও জুতাসহ মুসলমানদের জন্য বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী তৈরি করছে বিশ^খ্যাত সব প্রতিষ্ঠান। ২০১১ সালে মোদানিসা নামে একটি প্রতিষ্ঠান তুরস্কে মুসলমানদের জন্য অনলাইনে কাপড় বিক্রি শুরু করে। আজ তা ফুলেফেঁপে বিশাল আকার ধারণ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি ৩০ হাজারেরও বেশি পণ্য উৎপাদন করে থাকে। সকল বয়সীদের পোশাক, খেলাধুলার পোশাক, জুতা ও অন্যান্য সামগ্রীসহ প্রতিষ্ঠানটি তিনশো ব্র্যান্ড উৎপাদন করে এবং তা ৭৫টি দেশে রফতানি করে থাকে। মোদানিসার সিইও কেরিম তুরে বলেন, অতীতে ধর্মীয়ভাবে রক্ষণশীল তরুণী-যুবতীদের জন্য পোশাক পরিচ্ছদের ব্যাপারে পছন্দের ক্ষেত্র খুব কমই ছিল। তারা তাদের মায়েদের মতোই পোশাক পরতো। তিনি বলেন, ৯৯ ভাগ মুসলমানের একটি দেশে এ ভাবেই এতদিন চলে আসছিল এবং বৈশি^ক পরিস্থিতি কেমন ছিল, তাতে আমরা অবাকই হই। এ কারণেই আমরা বিশ^ব্যাপী ওয়েব ব্যাবসা শুরু করি। আমরা আশ্চর্য হই, যখন কট্টর ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র ফ্রান্সে মুসুলম নারীদের বুরকিনি পড়ার অধিকারের কথা বলার হয়। এটি এমন একটি পোশাক, যাতে শুধু হাত ও পায়ের পাতা এবং মুখ ছাড়া শরীরের বাকি অংশ আবৃত থাকে। ফ্রান্সের একটি আদালত ইতিমধ্যে রায় দিয়েছে, দেশটির ৩০টি শহরের ওপর বুরকিনির ওপর যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, তা অবৈধ এবং মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করে। তুরে বলেন বুরকিনি কোন প্রতীক নয় এটি একটি পছন্দের বিষয়। ফ্রান্সের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমার মাথায় এটা ঢুকছে না, যে দেশটির সংবিধানের প্রধান স্তম্ভ হচ্ছে স্বাধীনতা, তারা কি করে মুসলমানদের সাঁতারের পোশাকের বিরোধিতা করে। গত মে মাসে ইস্তাম্বুল ঐতিহাসিক হায়দার পাশা রেল স্টেশনের প্রথম রক্ষণশীল ফ্যাশন সপ্তাহের আয়োজন করে। এই প্রদর্শনীর আয়োজন করে ইন্দোনেশিয়ার ইসলামিক পোশাক প্রস্তুতকারক ফ্রাঙ্ক সোরিয়া। এর পর থেকেই তুরের প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন দেশে দ্রুত বাজার বিস্তার করতে থাকে। সোরিয়া বলেন, আমি এটাই দেখাতে চাই, আমি আধুনিক। আমি নিজেকে আবৃত করে রাখতে চাই এবং আমি ফ্যাশন পছন্দ করি। এটা শুধুই আমার একটা স্টাইল, একে মেনে নিন। তুরস্কের ফ্যাশন ডিজাইনার ওসমান ওজদেমির বলেন, আমি মনে করি ইস্তাম্বুল ইসলামিক ফ্যাশনের কেন্দ্রবিন্দু হবে। ইতিমধ্যে বড় বড় অনেক প্রতিষ্ঠান এ ধরনের কাজ শুরু করে দিয়েছে। ইতালির বিশ^খ্যাত ফ্যাশন হাইউজ ডলসি এন্ড গাবানা মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম ক্রেতাদের জন্য হিজাবসহ বিভিন্ন ধরনের পোশাক প্রস্তুত করছে। এএফপি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন