মরণঘাতী রোগ করোনাভাইরাস মানবদেহের শ্বাসতন্ত্রের ক্ষতির পাশাপাশি হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকিও বাড়ায় ব্যাপকভাবে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, করোনা থেকে সেরে ওঠা ব্যক্তিদের প্রথম দুই সপ্তাহে হার্ট অ্যাটাক-স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সাধারণ সময়ের তুলনায় অন্তত তিনগুণ বেশি থাকে। সুইডেনের উমেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় এ তথ্য জানা গেছে। সেই গবেষণার প্রতিবেদন সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক চিকিৎসা সাময়িকী ল্যানসেটে।
উমেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দলের প্রধান ওসভালডো ফনসেকা রডরিগুয়েজ এ সম্পর্কে বলেন, ‘করোনা থেকে সেরে ওঠার পর প্রথম দুই সপ্তাহ খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই সময়সীমায় হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি তিনগুণ বৃদ্ধি পায়।’
‘আমাদের গবেষণায় আরও দেখা গেছে- বয়স, লিঙ্গ, অর্থনৈতিক অবস্থান ও দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নির্বিশেষে করোনা থেকে সেরে ওঠা সব রোগীর ক্ষেত্রেই এই ঝুঁকি সমান থাকে।’
ল্যানসেটের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুইডেনে ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত ৮৬ হাজার ৭৪২ জন রোগীর তথ্য পর্যালোচনা করে সাম্প্রতিক এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছে উমেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দল।
দলের অন্যতম সদস্য ও উমেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আয়োনিস ক্যাটাসুলারিস এ সম্পর্কে বলেন, ‘আমরা আরও জানতে পেরেছি, করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার পর সব রোগীর ক্ষেত্রেই হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকে আক্রান্তের সম্ভাবনা তৈরি হলেও এতে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন বয়স্ক ও মধ্যবয়স্ক মানুষজন। করোনা গুরুতর রূপ নিলে সমানুপাতিকভাবে ঝুঁকির পরিমাণও বেড়ে যায়।
‘এই কারণে টিকার ডোজ খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ইতোমধ্যে এটি প্রমাণিত যে টিকার ডোজ সম্পূর্ণ করা হলে করোনায় গুরুতর অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই কম থাকে।’
গবেষক দলের সদস্যরা বলেছেন, ‘করোনার একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হার্ট অ্যাটক ও স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়া ঝুঁকি- তা এই গবেষণায় জানা গেছে। পাশপাশি আরও একবার জানা গেল- করোনা থেকে সুরক্ষায় টিকার ডোজ কতখানি গুরুত্বপূর্ণ।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন