মা-বাবা’র কবরের পাশে চির শায়িত
কাপাসিয়া (গাজীপুর) থেকে শামসুল হুদা লিটন : বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির প্রভাবশালী সদস্য সাবেক পাটমন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) আবু সাঈদ মতিউল হান্নান শাহ্ কাপাসিয়ায় দ্বিতীয় দফা জানাযা শেষে তার জন্মস্থান কাপাসিয়ার ঘাঘটিয়া গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে মা-বাবা’র পাশে চিরশায়িত হয়েছেন। এর আগে সকাল সাড়ে দশটায় কাপাসিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রথম ও বিকেল ৩টায় ঘাঘটিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ২য় দফা জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। কাপাসিয়ায় পৃথক ২টি জানাযায় যেন মানুষের ঢল নামে।
এদিকে হান্নান শাহ্’র জানাযায় দল মত নির্বিশেষে কাপাসিয়ার সর্বস্তরের মানুষ অংশ গ্রহণ করেন। কাপাসিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় বিশাল মাঠ জানাযা শুরু হওয়ার আগেই কানায় কানায় ভরে যায়। সকালে গাজীপুরের জানাযা শেষে কফিনবাহী একটি এ্যাম্বুলেন্সে হান্নান শাহ’র লাশ কাপাসিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। এ সময় এ্যাম্বুলেন্স-এর সামনে পিছনে ছিল হাজার নেতাকর্মীদের কালো পতাকাবাহী গাড়ীর বহর। সকাল ১০টার কিছু পর হান্নান শাহ্’র লাশ কাপাসিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে প্রবেশ করলে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। এ সময় অনেকেই একে অপরকে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
গাজীপুর থেকে কাপাসিয়া হয়ে গ্রামের বাড়ি ঘাগটিয়া চালা পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশে প্রিয় নেতাকে গভীর ভাবে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য কাপাসিয়ার বিভিন্ন স্থানে কালো পতাকা উড়তে দেখা যায়। ঢাকা-কিশোরগঞ্জ, ঢাকা-মনোহরদী সড়কের দু’পাশে কালো পতাকা টানিয়ে রাখা হয়। কাপাসিয়া, কালীগঞ্জ, শ্রীপুর, মনোহরদী, শিবপুর, পলাশ, পাকুন্দিয়া, গফরগাঁও বেলাবসহ আশপাশের জেলা-উপজেলার সর্বস্তরের মানুষ জানাযায় অংশ নেন। হান্নান শাহ’র জানাযার নামাজ ছিল কাপাসিয়ার স্মরণ কালের বৃহত্তম জানাযার নামাজ। অতীতে কোন জানাযায় এত মানুষের সমাগম হয়নি বলে অনেক বয়স্ক ব্যক্তি মন্তব্য করেছেন।
কাপাসিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাযায় হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে। কাপাসিয়া পাইলটের প্রথম জানাযা নামাজে ইমামতি করেন কাপাসিয়া কেন্দ্রীয় জমে মসজিদের ইমাম হাফেজ মো: মাহমুদুল হাসান মারুফ। ঘাঘটিয়া চালা স্কুল মাঠে ২য় জানাযা নামাজে ইমামতি করেন ঢাকা সরকারী আলিয়া মাদরাসার শিক্ষক মাওলানা ফারুক হোসেন।
প্রিয় নেতাকে শেষবারের মতো একটু দেখতে, শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বিএনপি, আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জামায়াতসহ বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীরা ও সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ জানাযায় শরিক হয়। প্রখর রোদের মধ্যে জানাযায় অংশ নিয়ে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন।
হান্নান শাহ’র জানাযায় অংশ নেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, বাংলাদেশ কৃষকলীগ সভাপতি মোতাহার হোসেন মোল্লা, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাজাহান খান, অধ্যাপক ডা. জাহিদ হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খায়রুল কবীর খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ও গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি একেএম ফজলুল হক মিলন, সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবু, সেলিমুজ্জামান, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক লে. কর্নেল (অব:) জয়নুল আবেদীন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, সাবেক এমপি আবুল হোসেন, সহ দফতর সম্পাদক মো: বেলাল আহাম্মেদ, ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা সানাউল হক নীরু, গাজীপুর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী সায়েদুল আলম বাবুল, গাজীপুর মহানগর জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ সানাউল্লাহ, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারী সেফাউল হক, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো: আকরাম হোসেন, সহ সম্পাদক মো: আনায়ার হোসেন, কাপাসিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খন্দকার আজিজুর রহমান পেরা, কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনিছুর রহমান, কাপাসিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সাবেক এমপি মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, শ্রীপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বজলুর রশিদ মোল্লা, কাপাসিয়া উপজেলা পরিষদের ভাইসচেয়ারম্যান এড. রেজাউর রহমান লস্কর মিঠু, হান্নান শাহ’র ছেলে শাহ রেজাউল হান্নান, শাহ রিয়াজুল হান্নান, কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি খলিলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সেলিম।
পারিবারিক সূত্রে জানানো হয়, আগামী শনিবার ঢাকার ডিওএইচএস জামে মসজিদে এবং শুক্রবার বাদ জু’মা ঘাঘটিয়া জামে মসজিদে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন