শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

ফুলেল ভালবাসায় সিক্ত প্রধানমন্ত্রী

বিমানবন্দর থেকে গণভবন পর্যন্ত লাখো নেতাকর্মীর ঢল

প্রকাশের সময় : ১ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ৯:৩০ পিএম, ২ অক্টোবর, ২০১৬

তারেক সালমান : নির্ধারিত সময়ের প্রায় দেড় ঘণ্টা দেরিতেও প্রধানমন্ত্রীর অপেক্ষায় লাখো নেতাকর্মীর ধৈর্য্য ও আবেগের একটুও চিড় ধরাতে পারেনি। গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গণসংবর্ধনা দেয়ার জন্য হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গণভবন পর্যন্ত দীর্ঘপথে লাখ লাখ নেতাকর্মী দুপুর থেকেই অবস্থান নিয়ে থাকে। প্রধানমন্ত্রীর আগমন নির্ধারিত সময়ের দেড় ঘণ্টা পর হলেও এ দীর্ঘ সময় নেতাকর্মীরা শ্লোগানে শ্লোগানে সারাক্ষণ মাতিয়ে রাখে। প্রধানমন্ত্রীর বিমান বিমানবন্দরে পৌঁছার পর নেতাকর্মীদের আবেগ যেন আরও বেড়ে যায়। হয় তাদের অপেক্ষার অবসান। বিমানবন্দরে দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে প্রধানমন্ত্রীর গাড়ী বহর যখন গণভবনের দিকে যাচ্ছিল, তখন লাখো নেতাকর্মী তাদের প্রিয় নেত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছা দিয়ে সংবর্ধনা জানায়। প্রধানমন্ত্রীও নেতাকর্মীদের ফুলেল ভালবাসায় সিক্ত হন। আপ্লুত হন।
গণঅভ্যর্থনার মধ্যদিয়ে জাতিসংঘ সফর শেষে টানা ১৭দিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা সফর শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৭ দিন আগে ঈদুল আজহার পরদিন কানাডার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন তিনি। কানাডা জিএফ (গ্লোবাল ফান্ড) সম্মেলনে অংশ নিয়ে নিউ ইয়র্কে গিয়ে জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দেন তিনি।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭১তম অধিবেশনে ভাষণ দেয়ার পাশাপাশি ‘প্ল্যানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন’ ও ‘এজেন্ট অব চেঞ্জ অ্যাওয়ার্ড’ গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২৬ সেপ্টেম্বর দেশে ফেরার কথা থাকলেও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কিছু সময় কাটানোর জন্য তা পরিবর্তন হয়। নিউ ইয়র্ক থেকে ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বাড়ি ভার্জিনিয়ায় যান তিনি। ভার্জিনিয়ার ডালেস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গত বৃহস্পতিবার এমিরেটসের ফ্লাইটে ঢাকার পথে রওনা হন শেখ হাসিনা। দুবাইয়ে যাত্রাবিরতির পর নির্দিষ্ট সময় ফ্লাইট ছাড়তে দেরি হওয়ায় দেশে পৌঁছান প্রায় দেড় ঘণ্টা দেরিতে।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামার পর বোর্ডিং ব্রিজেই প্রধানমন্ত্রীকে ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ। শুভেচ্ছা বিনিময়ের সময় প্রধানমন্ত্রীকে জড়িয়ে ধরেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর প্রবীণ সদস্য ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী।
বিমানবন্দরে মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররাফ হোসেন, মহীউদ্দীন খান আলমগীর, ওবায়দুল কাদের, দীপু মনি, ফারুক খান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, আসাদুজ্জামান নূর, এবি তাজুল ইসলাম, আবদুর রাজ্জাক, সাহারা খাতুন, এ কে এম রহমতউল্লাহ, কামরুল ইসলাম, আবদুস শহীদ, আবদুর রহমান, আব্দুল মান্নান, মুজিবুল হক, আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, তারানা হালিম, মেহের আফরোজ চুমকি, ইসমত আরা সাদেক, হাবিবুর রহমান খান সিরাজ, নাহিম রাজ্জাক প্রমুখ। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমাম ও তারিক আহমেদ সিদ্দিক, ঢাকার দুই মেয়র আনিসুল হক ও সাইদ খোকনও উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহর বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে সরাসরি গণভবনের উদ্দেশে রওনা হয়। আধা ঘণ্টার মধ্যে গণভবনে পৌঁছান তিনি।
গণভবনের পথে শেখ হাসিনাকে
ফুলেল শুভেচ্ছা দিয়ে গণসংবর্ধনা
টানা ১৭দিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা সফর শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী এবং তার সফর সঙ্গীদের বহনকারী এমিরেটস এয়ার লাইন্সের ফ্লাইট ইকে-৫৮৬ সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বিমান থেকে নেমে আসার পর সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ফুলের তোড়া দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। এ সময় মন্ত্রী পরিষদের সদস্য ও দলীয় নেতারা ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র এবং পদস্থ সরকারি কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
শেখ হাসিনা এমিরেটসের ফ্লাইটে গত বৃহস্পতিবার রাতে ওয়াশিংটনের ডুলেস ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট ত্যাগ এবং ঢাকার পথে দুবাইয়ে চার ঘন্টা যাত্রাবিরতি করেন। প্রধানমন্ত্রী উত্তর আমেরিকার দুটি দেশ সফরে ১৪ সেপ্টেম্বর ঢাকা ত্যাগ করেন। শেখ হাসিনা প্রথম পর্যায়ে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুুডোর আমন্ত্রণে ঘাতক ব্যাধির ওপর পঞ্চম রিপ্লেইসমেন্ট কনফারেন্স অব গ্লোবাল ফান্ড (জিএফ) সম্মেলনে যোগ দিতে ১৫ থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর কানাডায় চারদিনের সফর করেন।
তিনি দ্বিতীয় পর্যায়ে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭১তম অধিবেশনে (ইউএনজিএ) যোগ দিতে নিউইয়র্ক যান। সেখানে অবস্থানকালে তিনি বিশ্ব নেতৃবৃন্দের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন এবং আন্তর্জাতিক ইস্যু নিয়ে আলোচনায় অংশ নেন।
বিমানবন্দর থেকে গণভবন। দীর্ঘ ১৪ কিলোমিটার সড়কের দুই পাশ যেন জনারণ্য। জনতার ঢল নেমেছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানাতে। ফুল ছিটিয়ে, বাদ্য বাজনার তালে শ্লোগানে শ্লোগানে মানুষ বরণ করে নিয়েছেন প্রিয় নেত্রীকে। জাতিসংঘের ৭১তম অধিবেশনে যোগদান শেষে দেশে ফেরার পর গতকাল শুক্রবার এভাবেই লাখো মানুষ তাকে সংবর্ধনা জানিয়েছেন। গণভবনেও দেশের বিশিষ্টজনদের উষ্ণ অভ্যর্থনায় সিক্ত হয়েছেন তিনি।
জাতিসংঘের অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্র পরিচালনাসহ বহুমাত্রিক অবদানস্বরূপ জাতিসংঘ পদক ‘প¬্যানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন’ ও ‘এজেন্ট অব চেঞ্জ’ পদকে সম্মানিত করা হয়। আন্তর্জাতিক এই পুরস্কার প্রাপ্তিতে মানুষের এই বিপুল ভালোবাসায় উচ্ছ্বসিত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
রাজধানী ছাড়াও গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সাভার এবং আশুলিয়াসহ আশপাশের এলাকা থেকে আওয়ামী লীগসহ ১৪ দল এবং সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম ও সমমনা সংগঠনের নেতাকর্মীরা জড়ো হন সংবর্ধনার ৮ রুটে। এমপিদের নেতৃত্বেও ছিলেন বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী। তাদের সঙ্গে ছিলেন পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ, প্রকৌশলী, চিকিৎসক, কৃষিবিদ, ডিপ্লোমা প্রকৌশলী, আইনজীবী, সাংবাদিক, শিক্ষক, ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব, সংস্কৃতি কর্মী, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট; হিন্দু বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ; পূজা উদযাপন পরিষদ; নারী সংগঠন ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষও। জাতীয় ও দলীয় পতাকা এবং ব্যানার- ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড, পোস্টার ও বেলুনসহ ফুল হাতে সমবেত এসব মানুষ দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় থেকেছেন প্রধানমন্ত্রীর জন্য। রাস্তার দুই পাশে প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন সাফল্য তুলে ধরে বড় বড় বিলবোর্ড ও ব্যানার শোভা পায়। আর প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে সমবেত মানুষ গান ও বিভিন্ন বাদ্য-বাজনার পাশাপাশি শ্লোগানে মুখর রাখেন গোটা এলাকা। মাইকে বাজে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণসহ মুক্তিযুদ্ধ ও প্রেরণামূলক দেশাত্মবোধক গান। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গণভবনমুখি সড়ক জনারণ্যে পরিণত হয়। মানুষের ভিড়ে বেলা ১২টা থেকে ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় সাধারণ মানুষকে তীব্র দুর্ভোগেও পড়তে হয়।
শেখ হাসিনাকে অভ্যর্থনা জানাতে বিমানবন্দর থেকে গণভবন পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে হাজারো নেতাকর্মী সড়কের দুইপাশে দাঁড়িয়ে ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে সংবর্ধনা জানায়।
প্রসঙ্গত, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে ১৭ দিনের সফর শেষে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় পৌঁছান।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
Rasel ১ অক্টোবর, ২০১৬, ১:৫০ পিএম says : 2
we are proud of you
Total Reply(0)
Kasem ১ অক্টোবর, ২০১৬, ২:৫৫ পিএম says : 1
She is the popular leader in our country
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন