স্টাফ রিপোর্টার : মুহাররম হিজরি সনের প্রথম মাস। ইসলামী তাহযীব-তামুদ্দুন বিকাশের মাস। বিশ্বের মুসলমানদের স্বকীয় সংস্কৃতির আলোয় উদ্ভাসিত উজ্জীবিত হওয়ার মাস। বিজাতীয় সংস্কৃতি ও অপসংস্কৃতির খোলস থেকে বের হয়ে সুষ্ঠু সুন্দর সুনির্মল সংস্কৃতির আবহে নবজীবনের উšে§ষ ঘটানোর স্বর্ণালী মাস। এ মাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ইসলামের জয়-পরাজয়, উত্থান-পতন ও সুখ-দুঃখময় বিভিন্ন ঘটনা। মুহাররম আরবি শব্দ। এ শব্দটি সম্মানিত, পবিত্র ইত্যাদি অর্থে ব্যবহৃত হয়। মুহাররম মাসের ১০ তারিখকে ‘আশুরা’ বলা হয়। আশুরা দিবসের কারণে মহররম মাস বেশি ফজিলতপূর্ণ। হজরত ইমাম হোসাইনের (রা.) শাহাদত আশুরাকে আরো স্মরণীয় করেছে। মূলত রাসুল (সা.) হিজরতের ঘটনাকে স্মরণ করে হিজরি সনের প্রবর্তন হয়েছে। এ সনের গণনা হয় চাঁদের হিসেবে। এ জন্য হিজরি বর্ষকে চান্দ্রবর্ষও বলা হয়। ইসলাম অন্যান্য জাতি-ধর্মের মানুষের মত বর্ষবরণ ও আনন্দ্যোৎসব পালনে লাগামহীন কর্মকা- সমর্থন করে না। বাংলা নববর্ষ পালনের নামে পহেলা বৈশাখে তারুণ্যের উচ্ছল তরঙ্গমালা যেভাবে ঢেউ খেলে যায় তা কোনো আল্লাহ প্রেমী পরকাল বিশ্বাসী তাকওয়াবান মুসলমানের নিকট গ্রহণীয় নয়। মুসলমানদের প্রত্যেকটি আনন্দ উৎসবের সূচনা হয় মহান আল্লাহকে স্মরণ ও সেজদার মাধ্যমে। হিজরি বর্ষবরণ শুরু হয় তওবা তাহ্লীলের মাধ্যমে। আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়া তায়ালার নির্ধারিত সময় হতে একটি বৎসর যে আমাদের জীবন থেকে অতিবাহিত হয়ে গেল তার জন্য অনুতপ্ত হওয়া ও রাব্বুল আলামীনের দরবারে পানাহ্ চাওয়ার মাধ্যমে। আল্লাহর কাছে সেজদার মাধ্যমে। যে সময় বিশ্বের মুসলমানেরা তাদের নিজ সংস্কৃতিক ঐতিহ্য ভুলে গিয়ে বিজাতীয় সংস্কৃতি সভ্যতার দিকে ধাবিত হচ্ছে সেই মুহূর্তে হিজরি নববর্ষ হাতছানি দিচ্ছেÑ ইসলামী সংস্কৃতি সভ্যতার আঙিনায় ফিরে আসার। তাই হিজরি নববর্ষকে স্বাগত। হƒদয়ের সব উষ্ণতা দিয়ে তাকে গ্রহণ করি। কালের গর্ভে হারিয়ে গেল ১৪৩৭ হিজরি। চলে এলো ১৪৩৮ হিজরি।
হিজরি সনের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট বিষয়ে আমরা অনেকেই অবহিত নই। সেইদিন ছিল ১২ সেপ্টেম্বর ৬২২ খ্রিস্টাব্দ। প্রিয়নবী, বিশ্বনবী, নবীকুল শিরোমনি হযরত মুহাম্মদ (স.) আল্লাহর নির্দেশ মক্কা হতে মদীনায় হিজরত করেছিলেন। তারপর তার খলিফা আমীরুল মোমেনীন হযরত ওমর (রা.) ১৭ হিজরি অর্থাৎ রসূল (স.)র ওফাতের ৭ বছর পর হতে হিজরি সনের প্রবর্তন করেন।
তাই আজকের এই হিজরি নববর্ষে আমাদেরকে রসূল (স.) এর এই হিজরতের ঐতিহাসিক পটভূমি হƒদয়ে জাগরুক করতে হবে। রসূল (স.) এর জামানার শান্তিময় সোনালী সমাজ বিনির্মাণে নিজ নিজ স্থান থেকে সাধ্যমত প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। আল্লাহ আমাদের সেই তাওফীক দান করুন, আমীন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন