স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির মহাসচিবকে উদ্দেশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, আমি আপনাদের কাছে অনুরোধ করব ভারতের দালাল হওয়ার কোনো রকমের প্রতিযোগিতায় আপনাদের নামার দরকার নেই। আর ভারতের যারা দালাল আছে তারা এমন জায়গায় নিজেদের নিতে পারে, যা আপনারা চেষ্টা করেও পারবেন না বরং আপনাদের বাংলাদেশের কণ্ঠস্বর হওয়ার চেষ্টা সব সময়ে অব্যাহত রাখবেন। গতকাল সোমবার দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (অ্যাব) আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। রামপাল কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র কারিগরি, অর্থনৈতিক এবং পরিবেশ গত ত্রিমাত্রিক বিপত্তি শীর্ষক এ গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়।
আসিফ নজরুল বলেন, রামপালের ব্যাপারে আপনারা যে ভূমিকা রেখেছেন, তার আমি প্রশংসা করি। আপনারা কখনোই এ ভূমিকা থেকে বিরত হবেন না। আপনারা ক্ষমতায় যান কি না যান এসব আপনাদের মাথায় রাখার দরকার নেই। যখন দেশের অবস্থা বিপন্ন হয়েছে, সেখানে আপনাদের সবসময় কঠোরভাবে কথা বলতে হবে। তিনি বলেন, যাদের সন্তানরা এ দেশে থাকেন না, তাদের লাখ লাখ কোটি কোটি টাকা বিদেশের মাটিতে আছে। যারা এ দেশকে নিয়ে ভাবে না, তারা মনে করেন, আমাদের জেনারেশন এবং তাদের পরের জেনারেশন। বাংলাদেশ ধ্বংস হয়ে যাবে, বাংলাদেশ কোনো রাষ্ট্র্রের দাস-দাসীতে পরিণত হবে। বাংলাদেশ অনুন্নত হবে তাতে তাদের কিছু যায় আসে না। শুধুমাত্র তাদের পক্ষেই রামপালের পক্ষে কথা বলা সম্ভব। অন্য কারো পক্ষে সম্ভব নয়।
আসিফ নজরুল বলেন, একটি অদ্ভুত কথা বলা হয় যারা রামপালের বিরুদ্ধে কথা বলে তারা নাকি ভারতবিরোধী। আমার কথা হচ্ছে বাংলাদেশে সুলতানা কামাল, খুশী কবির, আনু মুহাম্মদরা যদি ভারতবিরোধী হয়ে যায় তাহলে ধরে নিতে হবে যারা ক্ষমতায় আছেন সেরকম কয়েকশ’ ছাড়া বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষই ভারতবিরোধী। তিনি বলেন, এখানে কোনো যুক্তিতর্কের বালাই নেই। ইউনেস্কো থেকে যে বিবৃতি দেয়া হয়েছে সেটাও নাকি ভারতবিরোধীদের মতামতের প্রভাবিত হয়ে দেয়া হয়েছে। আমাদের একটা কথাই বলার আছে রামপাল প্রজেক্টে অর্থনৈতিক, পরিবেশের ক্ষতি হবে। আমার নিজের কাছে মনে হয় রামপাল প্রজেক্ট বাস্তবায়নের হলে বাংলাদেশের অস্তিত ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, জনগণের স্বার্থে খালেদা জিয়ার উচিত হবে রামপালে প্রথম জনসভা করা। তিনি (খালেদা জিয়া) রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ না করে কিছু বিকল্প পরামর্শ দেন। সেগুলো হলো ভুটানের হাইড্রো ইলেকট্রিক প্রকল্পে বিনিয়োগ করা। সোলার বিদ্যুৎ করা বা রামপালে না করে পূর্ব সীমান্তে এই কেন্দ্র স্থাপন করা।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ বলেন, দুর্নীতির জন্য মহাক্ষেত্র বানানো হয়েছে রামপাল প্রকল্প। এই প্রকল্প নিয়ে কথা বললে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হতে পারে। কেউ কোনো মন্তব্য না করে শেয়ার করলেই তার জন্য জেলের ব্যবস্থা আছে। সরকার বলে এই সরকার উন্নয়নের মূলমন্ত্র। আসলে এই সরকারের মূলমন্ত্র হলো দুর্নীতি।
অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (অ্যাব)-এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রকৌশলী আ ন হ আখতার হোসেনের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি মোস্তাহিদুর রহমান, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও অর্থনীতিবিদ ড. মাহবুবউল্লাহ, ড. সুকোমল বড়–য়া, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, সাংবাদিক সৈয়দ আবদাল আহমেদ প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন