সরকারি কর্মচারীদের কোনো দলের চামচাগিরি কিংবা তোয়াজ-তোষণ করার প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। প্রশাসনের কর্মকর্তা-রাজনীতিবিদদের বিরোধ প্রত্যাশিত নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গতকাল সচিবালয় চত্বরে বঙ্গবন্ধুর ৪৬তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, সচিবালয়ে যারা কাজ করেন, শেখ হাসিনার সরকার আপনাদের কাছে সততা চায়, স্বচ্ছতা চায় নিরপেক্ষতা চায়। পক্ষ নিয়ে এখানে তোয়াজ-তোষণ করবেন, এটা আমরা চাই না। এই তোয়াজ-তোষণের ফল ভালো নয়। পরিণতি শুভ নয়।
মন্ত্রী আরো বলেন, কর্মকর্তাদের সঙ্গে, প্রশাসনের সঙ্গে, ক্ষমতাসীন রাজনীতিবিদদের সঙ্গে একটা সেতুবন্ধ থাকতেই হবে। আইনপ্রণেতারা আইন প্রণয়ন করবেন। পলিসি নির্ধারণ করবেন রাজনীতিকরা, সেটা বাস্তবায়ন করবেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তবে সেখানে বিরোধপূর্ণ কোনো পরিবেশ প্রত্যাশিত নয়। সেখানে সংঘাতের কোনো অবস্থা মোটেই কাম্য নয়। যার যার অবস্থানে তার তার দায়িত্ব পালন করতে হবে।
শেখ হাসিনা সরকারের আমলে সচিবালয়ে একটা স্বস্তির পরিবেশ বজায় রয়েছে জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, সচিবালয়ে কথায় কথায় মারামারি দেখেছি। সচিবালয়ে দাবি-দাওয়া নিয়ে কর্মবিরতি দেখেছি, ধর্মঘট দেখেছি। অচল করার হুমকিও দেখেছি। আমি বঙ্গবন্ধুকে হত্যার আগের বাংলাদেশকে দেখেছি। ১৫ আগস্টের পরের ছবিও দেখেছি। আমার ভয় হয়, যখন আমি সচিবালয়ের আশপাশে বিলবোর্ড, পোস্টার আর ব্যানারে আকাশ পর্যন্ত ঢেকে গেছে, এমন পরিবেশ দেখি। চোখের পলকে ১৫ আগস্ট ঘটে গেল, যাদের দেখতাম নব্য আওয়ামী লীগার সেজে মুজিবকোট পরত, ১৫ আগস্টের পর মুজিবকোট লুকানোর দৃশ্যপটও ভুলিনি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, আজ বাংলাদেশের যত্রতত্র অনেকেই বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল তুলেছে। যদি হঠাৎ চোখের পলকে কোনো অঘটন ঘটে যায়, তখন কী এসব ম্যুরাল রাখবেন। যারা করেছেন তারাই ভেঙে ফেলবেন। এই দৃশ্যপট অনেক দেখেছি।
তিনি আরো বলেন, আমি আওয়ামী লীগ করি, আপনারা যদি আমার চেয়েও বড় আওয়ামী লীগার হন, তাহলে দুঃখ লাগে। এখন অনেকেই নব্য আওয়ামী লীগার আমাদের চেয়েও যেন বড় আওয়ামী লীগার। কথায় কথায় বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনার প্রশংসা করেন। কিন্তু এটা কী মনের কথা! অনেককেই দেখেছি ১৫ আগস্টের আগে কী বক্তব্য দিয়েছেন। ১৫ আগস্ট ঘটার পর রাতারাতি ভোল পাল্টে ফেলেছে। এ ভোল পাল্টানো আওয়ামী লীগারদের আমার প্রয়োজন নেই।
অনুষ্ঠানে তথ্য ও স¤প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবগণ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া বিকালে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আইন বিষয়ক উপকমিটির প্রোগ্রামে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক রূপ দিতে সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে বিএনপি। ১৫ই আগস্টের হত্যাকান্ডে জিয়াউর রহমান জড়িত না থাকলে খুনিদের এতো বড় দুঃসাহস হতো না। এদেশের খুনের রাজনীতির জনক হচ্ছে বিএনপি। সা¤প্রদায়িক শক্তির একমাত্র নির্ভরযোগ্য আশ্রয়স্থল হচ্ছে বিএনপি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন