শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইসলামী বিশ্ব

সিরিয়ায় বোমা হামলায় নিহত ৩০

প্রকাশের সময় : ৫ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর হাসাকায় কুর্দিদের এক বিয়ের আসরে বোমা হামলায় বর ও এক কুর্দি নেতাসহ অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছেন। কুর্দি বেসামরিক বাহিনী ও সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস নিহতের এ সংখ্যা জানালেও সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম নিহতের সংখ্যা অন্তত ৩০ জনে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় হাসাকা ও আরো উত্তর-পূর্বের কুর্দি নিয়ন্ত্রিত শহর কামিশলির মধ্যকার মহাসড়কের পাশের একটি হলে বোমা হামলাটি চালানো হয়। ওই হলেই বিয়ের অনুষ্ঠানটি চলছিল। পর্যবেক্ষক গোষ্ঠী অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বিস্ফোরণে ২২ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে। আহতদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলেও জানিয়েছে। নিহতদের মধ্যে বর ও কুর্দিদের প্রধান একটি দলের এক নেতা থাকার কথাও জানিয়েছে অবজারভেটরি।
এদিকে, সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর অভিযান চলছেই। তারা গত রোববার আলেপ্পোয় অভিযান চালিয়ে অগ্রসর হয়েছে। এর আগে রাশিয়ার যুদ্ধবিমান সেখানে বেশ কয়েক দফা হামলা চালায়। শহরটির বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত পূর্বাঞ্চলে একটি গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালে বোমাবর্ষণের কঠোর সমালোচনা করেছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের অনুগত সেনাবাহিনী গত ২২ সেপ্টেম্বর আলেপ্পোয় বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত পূর্বাঞ্চলে এগিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয় এবং মিত্র দেশ রাশিয়ার সহায়তায় সেখানে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানায়, শনিবার রাতে দীর্ঘক্ষণ ধরে আলেপ্পোয় রুশ বিমান হামলা হয়। এতে সরকারি বাহিনী শহরের উত্তর দিকে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায় এবং বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত আল-হেলুক এলাকার এক প্রান্তে পৌঁছে যায়। আগস্টে সিরীয় সেনাবাহিনী হাসাকা ছেড়ে যাওয়ার পর শহরটির দখল নেয় ওয়াইপিজি বেসামরিক বাহিনী। হাসাকা প্রদেশের অধিকাংশ এলাকা থেকেই আইএসকে হটিয়ে দেয়া হয়েছে, কিন্তু জঙ্গিগোষ্ঠীটি প্রায়ই কুর্দি বাহিনীকে লক্ষ্য করে বিক্ষিপ্ত হামলা চালিয়ে থাকে। সিরিয়ায় আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কুর্দিদের নিজেদের প্রধান মিত্র বিবেচনা করে যুক্তরাষ্ট্র তাদের অস্ত্র ও রসদ সরবরাহ করছে। অন্যদিকে, কুর্দি বেসামরিক বাহিনী পিপলস প্রটেকশন ইউনিট (ওয়াইপিজি) এক বিবৃতিতে অন্তত ২০ জন নিহত ও বহু আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে। বিস্ফোরণটি বিস্ফোরক ডিভাইস না আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী ঘটিয়েছে তা পরিষ্কার নয় বলে জানিয়েছে ওয়াইপিজি। সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা অন্তত ৩০ এবং ৯০ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে।
ইসলামিক স্টেটকে (আইএস) সমর্থনকারী বার্তা সংস্থা আমাক জানিয়েছে, শহরটির প্রান্তে কুর্দি ওয়াইপিজি যোদ্ধাদের এক জটলায় এক আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী বিস্ফোরণটি ঘটিয়েছে। ওই হামলাকারীর কাছে মেশিনগান এবং পরণে বিস্ফোরক ভেস্ট ছিল বলে জানিয়েছে, তবে বিস্তারিত আর কিছু জানায়নি। তবে নিশ্চিত করা হয়নি এমন কয়েকটি প্রতিবেদনে হাসাকার হামলাটি একজন আত্মঘাতী নারী চালিয়ে থাকতে পারেন বলে বলা হয়েছে। এর আগে গত সোমবার সকালে সিরিয়ার সরকার নিয়ন্ত্রিত শহর হামায় দুটি আত্মঘাতী বোমা হামলায় বেশ কয়েকজন নিহত হন, জানিয়েছে সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা এসএএনএ।
পুলিশ সূত্রের বরাতে এসএএনএ জানিয়েছে, প্রথম হামলাকারী শহরের আল হাদের এলাকায় বিস্ফোরণ ভেস্টের বিস্ফোরণে ঘটিয়ে নিজেকে উড়িয়ে দেয়, এর ১৫ মিনিট পরে একই এলাকায় অপর হামলাকারীও একই ঘটনা ঘটায়। সরকারি সেনারা আল-হেলুক, বুস্তান আল-বাশা ও সাখুর এলাকাগুলো বিদ্রোহীদের দখলমুক্ত করতে পারলে আলেপ্পোর অন্যান্য স্থানেও অধিকতর নিয়ন্ত্রণ নিতে পারবে। তবে সেখানে রুশ-সমর্থিত সামরিক অভিযানে ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিন্দা ও সমালোচনা শুরু হয়েছে। কারণ, এই হামলায় বেসামরিক অবকাঠামোর অনেক ক্ষতি হয়েছে। শহরের পূর্বাঞ্চলের বৃহত্তম হাসপাতালটি অতি সম্প্রতি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জাতিসংঘের ত্রাণবিষয়ক প্রধান স্টিফেন ও’ব্রায়ান ওই হামলার ব্যাপক সমালোচনা করে গতকাল রোববার অবিলম্বে আলেপ্পোর পূর্বাঞ্চলে ‘নরকদশা’ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। বিবিসি, রয়টার্স।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)