বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাইলট ক্যাপ্টেন নওশাদ কাইউমের মৃত্যুতে গভীর শোকে ভাসছে নেট দুনিয়ার বাসিন্দারা। সাহসী এই বীরের মৃত্যুতে দুঃখ প্রকাশ করে মরহুমের শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন অসংখ্য মানুষ। নিজের জীবন বিপন্ন অবস্থায় ১২৪ জন যাত্রীকে নিরাপদে নামিয়ে আনায় নওশাদকে শ্রদ্ধায় ভাসিয়ে তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন নেটিজেনরা।
গত শুক্রবার (২৭ আগস্ট) সকালে ওমানের মাস্কাট থেকে শতাধিক যাত্রী নিয়ে বিজি-০২২ ফ্লাইটটি নিয়ে ঢাকা আসার পথে ভারতের আকাশে থাকা অবস্থায় ক্যাপ্টেন নওশাদ অসুস্থ বোধ করেন। সঙ্গে সঙ্গেই তিনি কলকাতার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের (এটিসি) কাছে ফ্লাইটটিকে জরুরি অবতরণের অনুরোধ জানান। একই সময় তিনি কো-পাইলটের কাছে ফ্লাইটের নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তর করেন। পরে ১২৪ জন যাত্রী নিয়ে নাগপুর বিমানবন্দরে ফ্লাইটটি অবতরণ করান। তারা সবাই নিরাপদে ছিলেন।
ফ্লাইটটি অবতরণের পর ক্যাপ্টেন নওশাদকে নাগপুরের কিংসওয়ে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে ২ দিন চিকিৎসার পর অবস্থার অবনতি হলে রবিবার তাকে হাসপাতালের সার্জিক্যাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (এসআইসিইউ) কোমায় নেওয়া হয়। সেখানে তাকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। হার্ট অ্যাটাকের পর তার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয় বলে জানান হাসপাতালের চিকিৎসকরা। তবে চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে আজ (সোমবার) বেলা ১১টার দিকে না ফেরার দেশে চলে যান ক্যাপ্টেন নওশাদ।
ইউনুস খন্দকার শোক জানিয়ে লিখেছেন, ‘‘ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিওন,,,,, এমন বীরের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। নিজের জীবন যখন সায়াহ্নে তখন অনেকের জীবন রক্ষার্থে নিজের শেষ চেষ্টাটুকু করেছেন। আল্লাহ আপনাকে জান্নাতুল ফেরদৌসের মেহমান হিসেবে কবুল করুক। আমিন।’’
মুহম্মদ সাদ্দাম হোসাইন লিখেছেন, ‘‘একজন দায়িত্বশীল ও অকুতোভয় বীর। স্যালুট জানাই। কেউ মনে না রাখলেও বিমানের যাত্রীরা আজীবন তাকে স্মরণ করবে ও শ্রদ্ধা জানাবে। আল্লাহ তাকে জান্নাত দান করবেন, আমিন।’’
মির্জা শোহাগ লিখেছেন, ‘‘বাংলাদেশ সরকারের উচিত ছিল ভারতে এয়ার এম্বুলেন্স পাঠিয়ে বাংলাদেশ বিমানের পাইলট ক্যাপ্টেন নওশাদ আতাউল কাইউমের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা! কারণ তিনি আন্তর্জাতিকভাবে এওয়ার্ড প্রাপ্ত একজন সিনিয়র পাইলট, যা বাংলাদেশের সম্পদ!ভারতের মাটিতে বাংলাদেশের কোন সম্পদের নিরাপদ নয়।’’
নওশাদের মাগফেরাত কামনা করে মোঃ রেজাউল মামুন লিখেছেন, ‘‘সমস্ত বাংলাদেশীদের এই পাইলটের জন্য গর্ববোধ করা উচিত। তিনি একজন জাতীয় বীর। আল্লাহর কাছে তার রুহের মাগফেরাত কামনা করি। আল্লাহ যেন তাকে জান্নাত দান করেন।’’
আরিফ আহমাদ লিখেছেন, ‘‘ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন, উনার বাবাও ছিলেন একজন পাইলট, উনার বাবা মারা গিয়েছেন ছয় মাস আগে, আর উনি মারা গেলেন আজ। জাতি মনে রাখবে এ পাইলটকে, আল্লাহ উনাকে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করুন, আমীন, এবং উনার পরিবারের সবাইকে ধৈর্য ধারণ করার তৌফিক দান করুন, আমীন।’’
আয়নুর রহমান লিখেছেন, ‘‘আসুন আমরা সবাই ওনার জন্য দোয়া করি। আললাহ্ যেন ওনাকে বেহেশতে নসীব করেন। আমার দৃষ্টিতে উনি যেমন ভালো মানুষ ছিলেন তেমনি আল্লাহর কোনো নেক বান্দা ঐ প্লেনের মধ্যে ছিলেন। যার ফলে আল্লাহর রহমতের ছায়াতলে প্লেনটি নিরাপদে অবতরণ করতে পেরেছে।’’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন