পটকা ও আতশবাজি ফাটানো নিষেধ পূজার দিন, নামাজ এবং আজানের সময় বাদ্যযন্ত্র বাজানো যাবে না
স্টাফ রিপোর্টার
বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে জঙ্গি হামলা বা নিরাপত্তা নিয়ে কোনও হুমকি নেই বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। গতকাল বুধবার বেলা ১২টার দিকে ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, পূজায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নেয়া হয়েছে। ঢাকা মহানগরীতে ২২৬টি পূজাম-প থাকবে। নিরাপত্তার জন্য ‘এ’ ক্যাটাগরিতে ঢাকেশ্বরী, রামকৃষ্ণ, ধানমন্ডি ও বনানী এবং ‘বি’ ক্যাটাগরিতে রমনার কালীমন্দির, সিদ্ধেশ্বরী ও উত্তরার মন্দিরগুলোর নিরাপত্তা দেয়া হবে। যার মধ্যে ৮৮টি অধিক গুরুত্বপূর্ণ, ৮৩টি তুলনামূলক কম গুরুত্বপূর্ণ এবং ৪৮টি মন্দিরকে সাধারণ ক্যাটাগরিতে রাখা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রত্যেক পূজাম-পে পর্যাপ্তসংখ্যক পুলিশ, র্যাবসহ গোয়েন্দা সংস্থার লোক কাজ করবে। প্রতিমা বিসর্জন দিতে যাওয়ার সময় কোনও ধরনের বাদ্যযন্ত্র বহন না করতে অনুরোধ করেছেন তিনি।
আসাদুজ্জামান মিয়া বলেন, প্রতিটি পূজাম-প সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকবে। পূজাম-পের ভেতরে ব্যাগ, ছুরি, কাঁচি বা দার্হ্য পদার্থ নিয়ে প্রবেশ করা যাবে না। পূজামন্ডপগুলো সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করতে রমনা এবং ঢাকেশ্বরীতে দুটি অস্থায়ী ক্যাম্প বসানো হবে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, পূজায় পটকা ও আতশবাজি ফাটানো নিষেধ। এছাড়া পূজার দিন নামাজ এবং আজানের সময় বাদ্যযন্ত্র বাজানো যাবে না। বিসর্জনের সময় অনেকে অতি উৎসাহী হয়ে নদীতে লাফ দেন, ফলে অনেক দুর্ঘটনা ঘটে। এ ধরনের কাজ না করার অনুরোধ জানান ডিএমপি কমিশনার।
তিনি বলেন, প্রতিটি পূজাম-পে প্রত্যেককে মেটাল আর্চওয়ে দিয়ে প্রবেশ করতে হবে। এছাড়া প্রতিটি ম-পে জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে নিরাপত্তা কমিটি করা হয়েছে বলেও জানান আছাদুজ্জামান।
দশমীর দিন প্রতিমা বিসর্জনের শোভাযাত্রায় ‘বাইরে থেকে কাউকে ঢুকতে দেয়া হবে না’ বলেও জানান তিনি। মূল শোভাযাত্রার সঙ্গে বিসর্জন দিতে হলে আগেই ঢাকেশ্বরীতে এসে যুক্ত হবেন।
প্রসঙ্গত, গত বছরজুড়ে হিন্দু সম্প্রদায়সহ বিভিন্ন ধর্মানুসারীদের উপর জঙ্গি হামলার প্রেক্ষাপটে এবার পূজার সময় সরকারের পক্ষ থেকে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। গুলশান ও শোলাকিয়ায় হামলার পর র্যাব-পুলিশের জঙ্গি দমন অভিযানের মধ্যে সে ধরনের ঘটনা কয়েক মাস ধরে না ঘটলেও বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তাপস কুমার পাল সম্প্রতি বলেছিলেন, তারা আতঙ্কিত না হলেও শঙ্কামুক্ত নন।
উল্লেখ্য, মহালয়ার মধ্য দিয়ে শুক্রবার থেকে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। দেবী দুর্গার বোধনের মধ্য দিয়ে ৭ অক্টোবর শুরু হবে মূল পূজা। ১১ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে দুর্গাপূজা। গত বছর সারাদেশে ২৯ হাজার ৭৪টি ম-পে দুর্গাপূজা হলেও এবার তা বেড়ে ২৯ হাজার ৩৯৫টি ম-পে হবে বলে জানিয়েছে পূজা উদযাপন কমিটি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন