শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

নতুন কাবুলিওয়ালাদের আবির্ভাব

মহাজন সুদখোরের শোষণে নিঃস্ব সারাদেশের হাজারো মানুষ অনিবন্ধিত সুদের ব্যবসা বন্ধ চেয়ে হাইকোর্টে রিট দেশে গোশতের চাহিদা মেটানো গরু প্রতিপালনকারীরা ঋণের জালে

স্টালিন সরকার | প্রকাশের সময় : ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০০ এএম

পরাক্রমশালী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও হিন্দুত্ববাদী ভারতের চানক্যদের হটিয়ে আফগানিস্তানের ভূমিপুত্র তালেবানরা কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয়ায় দেশটির রাজধানী ‘কাবুল’ এখন সারাবিশ্বে টক অব দ্য কান্ট্রি। সেই কাবুলের একজন দাদন ব্যবসায়ীর জীবনচিত্র নিয়ে ‘কাবুলিওয়ালা’ বিখ্যাত ছোটগল্প লেখেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৮২ সালে। গল্পে চিত্রায়িত হয়েছে কাবুলিওয়ালা গ্রামের মানুষকে টাকা ঋণ দিয়ে চড়া সুদসহ কিভাবে তা আদায় করতেন। সময়মতো সুদের কিস্তি আদায় করতে না পারলে কত হিংস্র হয়ে যেতেন। প্রায় দেড়শ বছর আগের সেই কাবুলিওয়ালার দাদন চিত্র এখন বাংলাদেশে গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে ছড়িয়ে পড়েছে। আফগানিস্তান থেকে আসা কোনো ‘কাবুলিওয়ালা’ নয়, এখন দেশে হাজারো কাবুলিওয়ালারর জন্ম হয়েছে। তারা চড়া সুদের টাকার ব্যবসা করছেন। জেলা, উপজেলা, চরাঞ্চল ও গ্রামের হাটবাজারে ‘বেশি সুদে টাকা দাদনে খাটানো’ হাজার হাজার কাবুলিওয়ালা ব্যবসা করছেন। প্রচুর টাকা পয়সার মালিক হওয়ায় গ্রামের সাধারণ মানুষ এদের ভয় পায়। ভয়ে সমীহ করে চলেন। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া, রুপসা থেকে পাথুরিয়া সর্বোত্রই এই কাবুলিওয়ালাদের দাপট। উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে এদের নাম দেয়া হয়েছে ‘সুদারু’।

রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা না থাকায় বিপন্ন অসহায় মানুষ টাকার প্রয়োজন পড়লেই সুদারুদের (মহাজন) দ্বারস্থ হচ্ছেন। প্রান্তিক কৃষক, বিত্তহীন, শ্রমজীবী, নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ নিরুপায় হয়ে উচ্চ হারে সুদের বিনিময়ে এই সুদারুদের (নতুন কাবুলিওয়ালা) কাছ থেকে ঋণ নিচ্ছে। এই সুদারুরা এতই প্রভাবশালী যে তারা টাকার জোরে গ্রাম, হাটবাজারে প্রভাব বিস্তার করে থাকেন। ফলে কেউ সময়মতো ঋণের সুদ পরিশোধ করতে ধরে এনে নির্যাতন করা হয়। বাধ্য হয়েই মানুষ সুদের কিস্তি দিতে ভিটেমাটি পর্যন্ত বন্ধক রাখতে বাধ্য হচ্ছেন। চক্রবৃদ্ধি সুদের জালে জড়িয়ে এক সময় সবকিছুই খুইয়ে ফেলছেন অসহায় মানুষ।

রাজশাহীর পদ্মার চর থেকে শুরু করে নিলফামারির তিস্তার চরাঞ্চল এবং বিভিন্ন হাটবাজারে মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের ঋণ মানুষের কাছে সোনার হরিণ। রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলো কৃষকদের কাছে প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ বিতরণের ফিরিস্তি প্রকাশ করলেও বাস্তবে ক্ষুদ্র চাষিরা ঘুষ না দিলে ঋণ পান না। আবার ব্যাংকে দলিল জমা দেয়ার পরও ঘুষ দিয়ে ঋণ নেয়ার জটিলতায় মানুষ যেতে চায় না। বাধ্য হয়েই স্থানীয় সুদের কারবারিদের কাছে বেশি সুদে ঋণ নিতে বাধ্য হন। সেই সুদের কিস্তি পরিশোধ করতে সংসারের ঘটিবাটি পর্যন্ত বিক্রি করতে হচ্ছে।

দাদন ব্যবসায়ীর কাছে ঋণ নিয়ে বিপদে পড়াদের একজন রাজশাহী জেলার পবা উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের মাঝেরদিয়া গ্রামের হুমায়ুন কবির। সীমান্ত এলাকার এই যুবক বিএ পাস করার পর চাকরি না পেয়ে ঋণ নিয়ে বাইক কিনে মানুষ আনা-নেয়াকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন। কিন্তু করোনালকডাউনের কারণে মানুষের যাতায়াত কমে যাওয়ায় অনেকদিন ঘরে বসে থাকায় আয় রোজগার বন্ধ ছিল। ফলে ঋণের টাকা দূরের কথা নিয়মিত সুদের কিস্তি পরিশোধ করতে না পারায় স্থানীয় দাদন ব্যবসায়ী মাস্তান দিয়ে তাকে ধরে নিয়ে যায়। অতপর জমি বন্ধক রেখে সুদের টাকা পরিশোধ করেন। ভুক্তভোগী হুমায়ুন জানালেন, পদ্মার চরের সর্বোত্রই সুদের ব্যবসা চলছে। আগে গ্রামে কারো এক থেকে দুই লাখ টাকা হলে ধান পাটের ব্যবসা করতেন। এখন করেন সুদের ব্যবসা। দাদন ব্যবসায়ীরা সুদের হার স্থান কাল পাত্র অনুযায়ী ঋণের পরিমাণ এবং ব্যক্তির চাহিদার ওপর নির্ভর করে নির্ধারণ করেন। এক হাজার টাকা নিলে এই সুদের হার এলাকাভেদে মাসিক ১০০ টাকা থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। গ্রহীতাদের যদি হঠাৎ টাকার প্রয়োজন পড়ে, তাহলে সুদের হার বেড়ে যায়। আবার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা গ্রামের হাটে পণ্য বেচাকেনার প্রয়োজনে কয়েক ঘণ্টার জন্য দাদনে টাকা নিলে সুদের হার বেড়ে যায়। হাটে পণ্য কেনাবেচার জন্য কোনো ব্যবসায়ী ১০ হাজার টাকা ঋণ নিলে হাজারে ৩০০ টাকা পর্যন্ত সুদ পরিশোধ করতে হয়।

গতকাল মঙ্গলবার সারা দেশের গ্রাম পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়া অনিবন্ধিত সুদের ব্যবসা বন্ধ চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করা হয়েছে। রিটে ৬৪ জেলার ডিসি-এসপিকে বিবাদী করা হয়েছে। বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি জাকির হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ রিট দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। তিনি জনস্বার্থে এ রিট দায়ের করেন বলে জানান। রিটের কারণ ব্যাখ্যা করে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, দেশের প্রতিটি গ্রামে সমবায় সমিতির নামে সুদের ব্যবসা চলছে। আবার অনেকে ব্যক্তিগতভাবে ঋণ দেয়ার নামে উচ্চহারে সুদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। সাধারণ মানুষ এসব সুদের কারবারিদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। তাদের সাপ্তাহিক ও মাসিক ভিত্তিতে আদায় করা সুদের পরিমাণ আকাশছোঁয়া। ১০ হাজার টাকায় প্রতি সপ্তাহের সুদ ৫শ’ থেকে ৬শ’ টাকা, কারোক্ষেত্রে ১ হাজার টাকা। মাসে সুদ হিসেবে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করেন তারা। অনেক পরিবার এসব সমবায় সমিতি ও সুদকারবারি থেকে ঋণ নিয়ে সুদের বোঝা টানতে টানতে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। অনেক ক্ষেত্রে প্রশাসনের চোখের সামনে তারা সুদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাই সারা দেশের অনিবন্ধিত সব ধরনের সুদের ব্যবসা বন্ধ করার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেছি। রিটে ৬৪ জেলার ডিসি-এসপিকে বিবাদী করা হয়েছে।

পেশাগত কাজে গত মার্চ মাসে সিরাজগঞ্জ থেকে শুরু করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, বগুড়া, রংপুর, কুড়িগ্রাম, নিলফামারী, নওগাঁ, দিনাজপুর, লালমনির হাটের কয়েকটি গ্রাম ঘুরেছি। পদ্মা, যমুনা, তিস্তা ও ব্রক্ষপুত্রে চরে মাইলের পর মাইল হেঁটেছি। বেশ কয়েকটি উপজেলা সদর, জেলাশহর, পৌরসভা ও গ্রামীণ হাটে আড্ডা দিয়েছি। নানা শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি। সরেজমিনে দেখেছি উপজেলা শহর, গ্রামীণ হাট-বাজারগুলোতে বিভিন্ন সমিতি, ক্লাব, মাল্টিপারপাস সোসাইটি নাম দিয়ে চোখ ধাঁধানো অফিস সাজিয়ে জমজমাট দাদন ব্যবসা চলছে। আবার কেউ ব্যাক্তিগতভাবে দাদন ব্যবসা করছেন। দাদন ব্যবসার নামে নীরবে হাজার হাজার কোটি টাকা খেটে খাওয়া নিরুপায় দুস্থ মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। অথচ দেখার যেন কেউ নেই। নাওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার নব্য কাবুলিওয়ালাদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করতে দেখেছি। স্থানীয় একজন জানান, উপজেলার অর্জুন গ্রামের আপেল মাহমুদ নামে এক মৎস্যচাষি এক বছর আগে শালগ্রাম এলাকার দাদন ব্যবসায়ী মো. বিপ্লবের কাছ থেকে মাসিক সুদে ৫ লাখ টাকা ঋণ নেন। প্রতি মাসে বিপ্লবকে শোধ করতে হয় ৩০ হাজার টাকা। আপেল মাহমুদ তার ৫ বিঘা জমি বিক্রি করে সুদ-আসলে ১৫ লাখ টাকা দাদন ব্যবসায়ীকে দিয়েছেন। আপেলের মতো শতাধিক বর্গাচাষি ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সুদের চক্রবৃদ্ধির কয়েকগুণ টাকা শোধ করতে গিয়ে পথে বসেছেন। এসব দাদন ব্যবসায়ীর খপ্পর থেকে বাঁচতে ওই এলাকায় নানা পেশার মানুষ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনায় মানববন্ধন করেছেন।

ভারত গরু বন্ধ করে দেয়ায় পদ্মা, তিস্তা, যমুনার চরাঞ্চল এবং সিরাজগঞ্জ, পাবনা, জামালপুর এলাকার মানুষ এখন প্রচুর গরু প্রতিপালন করেন। কেউ বাথান করেন কেউ ঘরেই গরু প্রতিপালন করেন। গরিব মানুষগুলো রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ব্যাংকের ঋণ না পেয়ে বাধ্য হয়েই চড়া সুদে স্থানীয় দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ঋণ নেন। করোনার কারণে দুধের চাহিদা কমে যাওয়া এবং নানা কারণে গরু প্রতিপালনকারী ওই সব গরিব মানুষ এখন সুদের কিস্তি পরিশোধ করতে না পারায় মহাজনের ফাঁদে পড়ে গেছেন। অথচ এই ক্ষুদ্র কৃষক ও গ্রামের মানুষ দেশে গরুর চাহিদা মিটিয়েছেন নিজেরাই গরু প্রতিপালন করে।

সম্প্রতি একাধিক জাতীয় দৈনিকের খবরে দেখা যায়, রাজধানী ঢাকার অদূরে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ, আড়াইহাজার ও কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার মেঘনা নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলোর হতদরিদ্র জেলেরা জীবিকার প্রয়োজনে দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিচ্ছে। জেলেদের কষ্টের আয়ের প্রায় সবটাই চলে যাচ্ছে দাদন ব্যবসায়ীদের পকেটে। খবরে বলা হয়, সোনারগাঁয়ের আনন্দবাজার, নুনেরটেক, সাতভাইয়াপাড়া, রামগঞ্জ; আড়াইহাজার উপজেলার কালাপাহাড়িয়া, খালিয়ারচর, হাজিরটেক; মেঘনা উপজেলার মৈশারচর, বড়ইকান্দি ও নলচর মেঘনার তীরের গ্রামগুলোর ৮০ শতাংশ মানুষ নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। জেলেরা মাছ ধরে বিক্রি করেন সোনারগাঁয়ের বৈদ্যেরবাজার ফিশারিঘাটে। হতদরিদ্র জেলেরা মাছ ধরার জাল, নৌকা ও ট্রলার কেনার জন্য বৈদ্যেরবাজার ফিশারিঘাটের আড়তদার ও মহাজনদের কাছ থেকে প্রতিবছর ঋণ (দাদন) নেন। ফলে দাদনে নেয়া ঋণের সুদের কিস্তি পরিশোধ করায় তাদের খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাতে হয়।

নীলফামারীর শত শত মানুষ এখন দাদন ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ছেন। দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে। সুদের টাকা দিতে ব্যর্থ হলে বাড়ি থেকে গরু-ছাগল নিয়ে যাওয়াসহ জোরপূর্বক জমি দখল করা হচ্ছে। স্থানীয়দের বক্তব্য, সহজ শর্তে ব্যাংক থেকে ঋণ না পেয়ে অভাবী মানুষ দাদন ব্যবসায়ীদের খপ্পরে পড়ছে। সদর উপজেলার ইটাখোলা ইউনিয়নের কানিয়াল খাতা গ্রামের চিনিকুটি বাজার এলাকায় সুদখোর মহাজনরা এলাকার কয়েকশ’ মানুষের কাছে লাখ লাখ টাকা বিতরণ করেছে। এই গ্রামে দাদন ব্যবসায়ীরা শতকরা মাসিক ১০ থেকে ১২ টাকা হারে সুদ নিচ্ছে। সুদখোর মহাজনদের অত্যাচারে জমিজমা বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করছেন। কেউ কেউ দাদন ব্যবসায়ীদের সুদের কিস্তি না দিলে বাড়ি-ঘরের টিন, গরু, ছাগল নিয়ে যাচ্ছে। দাদন ব্যবসায়ীরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলতে পারেন না।

নাটোরের চলনবিল অঞ্চলে দাদন ব্যবসা জমজমাট। গ্রামের প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষক, শিক্ষক-কর্মচারী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের অভাবে পড়ে চড়া সুদে মহাজনদের কাছে ঋণ নিতে হয়। চলনবিল অধ্যুষিত সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, রায়গঞ্জ, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর, পাবনার চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর, নাটোরের সিংড়া, গুরুদাসপুর, নওগাঁর আত্রাই উপজেলায় প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে দাদন ব্যবসায়ীরা ফুলেফেঁপে উঠছেন। কৃষকরা চাষাবাদের জন্য চড়া সুদে ঋণ নেন, কেউ ব্যবসার জন্য চড়া সুদ গ্রহণ করেন। এমনকি উপজেলা সদরে শিক্ষক-কর্মচারী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের চেক বন্ধক রেখে সুদের কারবার চলছে। টাকা দেয়ার আগে চেকগুলোতে স্বাক্ষর নেওয়া হচ্ছে।

রংপুর জেলার কাউনিয়া, পীরগাছা, গংগাছড়া, কুড়িগ্রামের উলিপুর, চিলমারী, রাজার হাট, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা, নিলফামারীর জলঢাকা উপজেলায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারি প্রাইমারি স্কুলে চাকরি করেন এমন অনেক গরিব শিক্ষকদের বেশির ভাগই নিরুপায় হয়ে চেক বন্ধক রেখে সুদের উপর টাকা নিতে বাধ্য হন। আর দাদন ব্যবসায়ীরা শিক্ষকদের চেক ক্রয় করে প্রচুর টাকা আয় করছে। শুধু তাই নয় অনেকে চেক, নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রেখে, স্বর্ণালঙ্কার বন্ধক রেখে চড়ামূল্যে দাদনে টাকা নিতে বাধ্য হন।

গ্রামের এই নতুন কাবুলিওয়ালাদের সুদের ব্যবসা রাষ্ট্র ও প্রশাসনের বিভিন্ন সংস্থার চোখের সামনেই ঘটছে। অথচ কোনো প্রতিকার নেই। ভুক্তোভোগীরা বলছেন, তারা রাষ্ট্রের কাছে সহায়তা না পেয়েই বাধ্য হয়ে মহাজনের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিচ্ছেন। গ্রামের সহজ-সরল খেটে খাওয়া বিপন্ন মানুষকে সুরক্ষায় প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। কোনোভাবেই দাদন ব্যবসায়ীদের হাতে সমাজকে ছেড়ে দেয়া যায় না। তবে আশার কথা হাইকোট এ নিয়ে রুল জারি করেছেন। রিটের শুনাতিতে কি হয় সেটা দেখার জন্য এখন অপেক্ষা করছে মানুষ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (11)
মোহাম্মদ দলিলুর রহমান ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১:২৬ এএম says : 0
সরকার ইচ্ছা করলে পাড়ায় পাড়ায় বাংক সিসটেম করে লোন দিতে পারেন।
Total Reply(0)
মনির ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ২:০৯ এএম says : 0
রাষ্ট্রীয়ভাবে যাকাত প্রতিষ্ঠা করা হলে, সুদ অটো বন্দ হয়ে যাবে
Total Reply(0)
মাহমুদ ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৩:৩২ এএম says : 0
চক্রবৃদ্ধি সুদের জালে জড়িয়ে এক সময় সবকিছুই খুইয়ে ফেলছেন অসহায় মানুষ।
Total Reply(0)
Uttam Singha ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৩:৩৩ এএম says : 0
গ্রামের এই নতুন কাবুলিওয়ালাদের সুদের ব্যবসা রাষ্ট্র ও প্রশাসনের বিভিন্ন সংস্থার চোখের সামনেই ঘটছে। অথচ কোনো প্রতিকার নেই।
Total Reply(0)
পান্নু ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৩:৩৪ এএম says : 0
এদের কারণেই সকল কিছুর দাম বাড়ে
Total Reply(0)
ডালিম ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৩:৩৫ এএম says : 0
সুদখোর মহাজনদের অত্যাচারে জমিজমা বিক্রি করে অনেকে ঋণ পরিশোধ করছেন।
Total Reply(0)
M Ahsan ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৭:০৬ এএম says : 0
Introduce social loan (no interest) in every Village.
Total Reply(0)
প্রিয়সী ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৮:৪৬ এএম says : 0
এই বিষয়গুলো তুলে ধরায় দৈনিক ইনকিলাব ও স্টালিন সরকারকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি
Total Reply(0)
মনিরুজ্জামান ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৮:৪৬ এএম says : 0
এভাবেই তারা গরীব মেহনতি মানুষগুলো রক্ত চুষে খাচ্ছে
Total Reply(0)
গিয়াস উদ্দিন ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৮:৪৭ এএম says : 0
এরা কাবুলিওয়ালাদের চেয়েও শত গুন খারাপ। প্রশাসনের উচিত দ্রুত এর বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
Total Reply(0)
সাখাওয়াত হোসেন ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১০:০৬ এএম says : 0
জরুরী মুহূর্তে টাকার প্রয়োজন হয় ধনি, গরিব সকলের উপস্থিত টাকা যদি কোথাও থেকে কম লভ্যাংশে পাওয়া যায় তাহলে মানুষ চড়া সুদে দাদন ব্যবসায়ীদের কাছে যাবেনা। তাহলে সবার আগে রাষ্ট্র কে পদক্ষেপ নিতে হবে যেন প্রয়োজনের সময় মানুষ টাকা পেতে পারে। এছাড়া সম্ভব হবে না এই পথ বের হয়ে আসার উপায় কারণ মানুষ গোপনে লেনদেন করে।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন