খলিলুর রহমান, সিলেট থেকে : কলেজ ছাত্রী খাদিজার উপর হামলাকরী ছাত্রলীগ নেতা বদরুলের ফাঁসির দাবিতে ফুঁসে উঠেছেন সিলেটবাসী। গতকাল বৃহস্পতিবার সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধন করেছে কয়েকটি সংগঠন। সকাল পৌনে ১১টার দিকে অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) সিলেট ইউনিট, সিলেট সরকারি মহিলা কলেজ এলামনাই অ্যাসোসিয়েশন, জৈন্তা ছিন্নমূল সংস্থা (জেছিস) ও আমরাই পারি পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ জেলা জোট, সিলেট।
এছাড়াও সিলেটের এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে কথিত প্রেমিক বদরুল আলমের দৃষ্টামূলক বিচারের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন খাদিজার সহপাঠিরা। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেটের জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর এই স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। জেলা প্রশাসকের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মো. আমিনুর রহমান স্মারকলিপি গ্রহণ করে তা প্রধানমন্ত্রী বরাবর পৌঁছে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন খাদিজার সহপাঠিদের।
এর আগে তারা সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী ‘খাদিজার উপর বর্বর আক্রমণকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই’ শীর্ষক ব্যানার নিয়ে ক্যাম্পাস থেকে মিছিল বের করে। মিছিলটি নগরীর চৌহাট্টা থেকে জিন্দাবাজার পয়েন্ট দিয়ে বন্দরবাজারস্থ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যায়। মিছিল থেকে ‘বদরুলের ফাঁসি চাই’ ‘অন্যায় হবে যেখানে, লড়াই হবে সেখানে’ ‘নারী নির্যাতন যেখানে, লড়াই হবে সেখানে’সহ বিভিন্ন ধরনের সেøাগান দেয়া হয়। এছাড়া ‘তনু খাদিজা আফসানা, নিরাপত্তার নমুনা?’ শীর্ষক প্ল্যাকার্ডও মিছিলে বহন করা হয়। স্মারকলিপিতে বর্বর বদরুল আলমের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন দাবি জানানো হয়েছে।
এদিকে, বদরুলের শাস্তি দাবির আন্দোলনের মুখপাত্র ফজিলাতুন্নেসাকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে তার মায়ের মোবাইল ফোনে কল করে এ হুমকি দেয়া হয়। ফজিলাতুেেন্নসা নিজেই গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, অপরিচিত একটি নাম্বার থেকে আমার আম্মুর মোবাইল ফোনে কল দিয়ে আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা বলা হয়। অন্যথায় আমাকে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেয়া হয়। তবে হুমকি-ধামকি দিয়ে বদরুলের শাস্তি দাবির আন্দোলনকে দমানো যাবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। ফজিলাতুন্নেসা সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী।
প্রসঙ্গত, শাবি ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক বদরুর আলমের ধারালো চাপাতির আঘাতে গত সোমবার বিকেলে গুরুতর আহত হওয়া সিলেট মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী খাদিজা আক্তার নার্গিস (২৩) ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এদিকে, খাদিজাকে দেখতে সউদী আরব থেকে ছুটে এসেছেন তার বাবা মাসুক মিয়া ও চীন থেকে দেশে ফিরেছেন তার বড় ভাই শাহীন আহমদ। মাসুক মিয়া গতকাল ভোরে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে নেমেই স্কায়ার হাসপাতালে ছুটে যান। সেখানে গিয়ে তিনি তার মেয়েকে দেখেন। শাহীন আহমদও শাহজালাল বিমানবন্দনে নেমেই বোনকে দেখতে হাসপাতালে ছুটে যান। এ তথ্য জানিয়েছেন খাদিজার চাচা আব্দুল কুদ্দুস।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন