স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকার পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, এবার তাজিয়া মিছিলের সময় ‘তিন স্তরের’ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকছে। তিনি বলেন, আমরা অতীতের অভিজ্ঞতা পর্যবেক্ষণ করে এবারের নিরাপত্তা সাজিয়েছি। চারশ’ বছর ধরে মুসলিমরা উৎসাহ উদ্দীপনার সঙ্গে দিনটি উদযাপন করে আসছে। এ ধরনের একটি অনুষ্ঠানে গতবছর যে হামলা হয়েছে তা খুবই দুঃখজনক। গতবছরের হামলার ঘটনার পর এবার আশুরার দিন শিয়া সম্প্রদায়ের তাজিয়া মিছিলের নিরাপত্তার জন্য সময় ঠিক করে দেওয়ার পাশাপাশি বেশ কিছু বিধিনিষেধ দিয়েছে পুলিশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে পুরান ঢাকার হোসেনী দালানে ইমামবাড়া পরিদর্শনে এসে তিনি এ কথা বলেন।
আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, যেসব স্থান থেকে তাজিয়া মিছিলগুলো বের হয়, সেখানে সুদৃঢ়, নিরবচ্ছিন্ন নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এবার ১০ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৮টা, ১১ অক্টোবর সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা এবং আশুরার দিন ১২ অক্টোবর সকাল ১০টা থেকে দুপুরে নামাজের আগ পর্যন্ত তাজিয়া মিছিল বের করা যাবে, অন্য সময় নয়। এছাড়া তলোয়ার, ছুরি, কাঁচি ও বল্লম নিয়ে কেউ তাজিয়া মিছিলে অংশ নেওয়া যাবে না।মিছিলের সময় নিশানের উচ্চতা ১২ ফুটের বেশি হতে পারবে না। তাজিয়া মিছিল ও শারদীয় দুর্গা পূজায় সব ধরনের পটকা বা আতশবাজি নিষিদ্ধ থাকবে। হোসেনী দালান থেকে মূল তাজিয়া মিছিলে বাইরের কেউ অংশ নিতে চাইলে তাকে আগে ইমামবাড়া কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে।
হোসেনী দালানে সবাইকে আর্চওয়ে দিয়ে ঢুকতে হবে। পুরো হোসেনী দালান এলাকা সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারী করা হবে।
হিজরি পঞ্জিকার ১০ মহররম মুসলিম বিশ্বে আশুরা পালিত হয়। এক হাজার ৩৩২ বছর আগে এই দিনে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.) এর দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসেন (রা.) ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে শহীদ হন।
আশুরা উপলক্ষে পুরান ঢাকায় হোসনী দালান থেকে শিয়া সম্প্রদায়ের তাজিয়া মিছিল বের হয়। কারবালার রক্তাক্ত স্মৃতি স্মরণে এ সময় অনেককে ‘হায় হোসেন-হায় হোসেন’ মাতম তুলে নিজের দেহে আঘাত করে রক্ত ঝরাতে দেখা যায়। এ কারণে অনেকেই ছুরি, কাঁচি, বল্লম ও শেকল বহন করেন। এ বছর তাজিয়া মিছিলে এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকতে সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন পুলিশ কমিশনার।
গত বছর তাজিয়া মিছিলের প্রস্ততির সময় ভোররাতে হোসেনী দালানে জঙ্গি বোমা হামলায় হতাহতের ঘটনা ঘটে। এ কারণে এবার সেখানে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশের সার্বক্ষণিক নজরদারি চলবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
তিনি আরো বলেন,অতীতের অভিজ্ঞতা বিশ্লেষণ করে এবার পবিত্র আশুরা উপলক্ষে হোসনি দালান ইমামবাড়া থেকে বের হওয়া তাজিয়া মিছিলে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
কমিশনার বলেন, আমরা অতীতের অভিজ্ঞতা পর্যবেক্ষণ করে এবারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। চারশ বছর ধরে চলে আসা এ ধরনের একটি অনুষ্ঠানে গতবছর যে হামলা হয়েছে তা খুবই দুঃখজনক।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, পুরো এলাকা সিসিটিভি ক্যামেরার আওতাভুক্ত থাকবে। তিনস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। মিছিলে আগত সবাইকে আর্চওয়ে গেট দিয়ে প্রবেশ করতে হবে। মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে চেক করা হবে। এ সময় নিরাপত্তা নিশ্চিত করণের জন্য সবার সহযোগিতা চান কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া।
তিনি আরও জানান, আগেই তাজিয়া মিছিলে আতশবাজি নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এবার ১২ ফুটের বেশি উচ্চতার নিশানও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন