স্টাফ রিপোর্টার ঃ রাজধানীর মহাখালীর ডিওএইচএস এলাকার নিজ বাসায় সাবেক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ওয়াজি আহমেদ চৌধুরী (৭৬)কে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। নিহতের বাড়ি সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ থানার ফুলবাড়ী এলাকায়। ঘটনার পর থেকে কাজের ছেলে পলাতক থাকায় ধারণা করা হচ্ছে হত্যাকা-ে তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল মর্গে নিহতের লাশ ময়না তদন্ত শেষে দাফনের জন্য স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিহতের ভাতিজা রিসাত আহমেদ চৌধুরী জানান, ওয়াজি আহমেদ ৯২ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিগ্রেডিয়ার জেনারেলের পদ থেকে অবসরে যান। এরপর থেকে মহাখালী ডিওএইচএস-এর ৪ নং রোডের ১৪৮ নং নিজ বাসায় ছোট ছেলে ফুয়াদ আহমেদ চৌধুরীকে নিয়ে বসবাস করতেন। ওয়াজির বড় ছেলে নাবিল আহমেদ চৌধুরী গত একযুগ ধরে আমেরিকা প্রবাসী। ছোট ছেলে বাকপ্রতিবন্ধী ফুয়াদ একটি সফটওয়্যার কোম্পানিতে চাকরি করেন। স্ত্রী আসিয়া চৌধুরী ৬ বছর আগে মারা যান। তিনি জানান, চারতলা ভবনের ২য় তলায় থাকতেন ওয়াজি। মাস দুয়েক আগে আব্দুল আহাদ (৩০) নামে এক ছেলেকে তার বাসায় গৃহপরিচারক হিসেবে নিয়োগ দেন। আহাদের বাড়ি সিলেটের বিশ্বনাথ এলাকায়। বুধবার রাত সাড়ে ৯টা-১০টার দিকে বাবা-ছেলে নিজেদের রুমে ছিলেন। হঠাৎ করে একটা শব্দ হলে ছেলে ফুয়াদ বের হতে চাইলে দেখেন তার রুমের দরজা ভেতর থেকে লাগানো। তার বাবার নাম্বারে ফোন দিয়েও মোবাইল বন্ধ পায়। পরে তিনি বারান্দা থেকে পাইপ বেয়ে নিচে নামে। ডিওএইচএস এলাকার দুই দারোয়ানসহ বাসার ভেতরে প্রবেশ করেন। এ সময় তিনি দেখেন তার বাবার রুমটিও বন্ধ। পরে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখেন তার বাবার গলায় রশি পেঁচানো। পা খাটের সাথে বাঁধা অবস্থায় মেঝেতে পড়ে ছিল। এরপর তাকে উদ্ধার করে সিএমএইচ-এ নিয়ে গেলে রাত সোয়া ২টার দিকে ডাক্তার তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। রিসাত আরও জানান, তার চাচার বাসায় ৪০ ইঞ্চি টিভি, ল্যাপটপ ও ২টি মোবাইল খোয়া গেছে। তবে টাকা-পয়সা কি পরিমাণ খোয়া গেছে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। ঘটনার পর থেকে কাজের ছেলে আহাদ নিখোঁজ। চুরির কারণেই নাকি অন্য কোনো কারণে তাকে খুন করা হয়েছে এ বিষয়ে নিশ্চিত নন তিনি।
গতকাল দুপুরে ঢাকা মেডিকেল মর্গে নিহতের লাশের ময়না তদন্ত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ময়না তদন্তের পর ঢাকা মেডিকেলের ফরেনসিক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সোহেল মাহমুদ বলেন, গলায় রশি পেঁচিয়ে পা বেঁধে শ্বাসরোধ করে সাবেক ওই সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে আলামত পাওয়া গেছে। নিহতের গলায় কালো দাগ, বুকের বাম পাশে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় নিহতের ভাতিজা রিসাত আহমেদ চৌধুরী গতকাল ভোরে কাফরুল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
পুলিশের মিরপুর জোনের উপ-কমিশনার মাসুদ আহমেদ বলেন, আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে মামলাটির তদন্ত করছি। আশা করছি, দ্রুত অপরাধীকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন