নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে তাক্বওয়া দারুস সুন্নাহ মাদরাসা দখলের অভিযোগ উঠেছে। মাদরাসার কক্ষ দখলে নেয়ায় খোলা আকাশের নিচে শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে। এতে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন অভিভাবকমহল। ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের উপর হামলার আশঙ্কা করছেন মাদরাসা কর্তৃপক্ষ।
মাদরাসা দখলে নেয়ায় স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। এলাকার একমাত্র দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মাদরাসা দখলমুক্তের দাবিতে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয়রা এশিয়ান হাইওয়ে সড়ক অবরোধসহ বড় ধরণের কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন। ঘটনাটি পূর্বাচল উপশহরের ২১ নম্বর সেক্টরের রঘুরামপুর এলাকায় ঘটেছে। মাদরাসার সভাপতি ও ওয়াকফ জমিদাতা মোহাম্মদ মজিবুর রহমান মোল্লাহ জানান, পূর্বাচল উপশহরের ৪ নম্বর সেক্টরে ৫৪ কাঠা জমিতে মসজিদ ও মাদরাসা ছিল। কিন্তু রাজউক অধিগ্রহণ করেনি। বাণিজ্যমেলার জায়গা বৃদ্ধির কারণে ৪ নম্বর সেক্টরের পরিবর্তে ২১ নম্বর সেক্টরে রাজউকের ৪৫ কাঠা জমিতে স্থানান্তর করতে বলা হয়। এরপর ২০১৯ সালে ওই জমিতে মসজিদ ও মাদরাসা গড়ে তোলা হয়।
গত কয়েকদিন ধরে রাজউকের সীমানা ঘেঁষা ফুলবাড়িয়ারটেক এলাকার আমির হোসেন, আরমান, মজিবুর খাঁন, কাজিম উদ্দিন, আরিফসহ আরো কয়েকজন মিলে মাদরাসা দখলে নিয়ে চারদিকে বাঁশের বেড়া টানিয়ে দেন। এরপর থেকে শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে খোলা আকাশে।
মাদরাসার শিক্ষার্থী আসাদুল আল গালিফ, কারিন আহাম্মেদ, মোহাম্মদ আনিছ, বাধন, হাফসা আক্তার, ওম্মে কুলসুম ও আয়শা আক্তার বলেন, আমাগো মাদরাসা দখল করে নিছে। এখন খোলা আকাশের নিচে পড়ালেখা করতে হচ্ছে। মাদরাসার প্রধান শিক্ষক হাসানুল হক বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে মাদরাসায় লেখাপড়া চালিয়ে আসছি। গত কয়েকদিন আগে স্থানীয় কয়েকজন মাদারাসাটি দখল করে নিয়েছে। এরপর থেকে ছাত্রছাত্রীদের খোলা আকাশের নিচে ক্লাস চালাচ্ছি।
মোবাইল ফোনে রিং করলে দখলদারদের একজন আমির হোসেন বলেন, ৪ নম্বর সেক্টরে মসজিদ মাদরাসা ছিল। পরে রাজউক ২১ নম্বর সেক্টরে মসজিদ করার জন্য জায়গা বরাদ্দ দেয়। কিন্তু অতিরিক্ত জায়গা দখলে নিয়ে মাদরাসার সভাপতি ও ওয়াকফ জমিদাতা মোহাম্মদ মজিবুর রহমান মোল্লাহ মাদরাসা করার কারনে এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে দখল করেছি।
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্রকৌশলী বদরুল আলম বলেন, রাজউকের ৪ নম্বর সেক্টরে জমির গড়ে তোলা মসজিদ-মাদরাসার পাশেই বাণিজ্যমেলা। আর বাণিজ্যমেলা বৃদ্ধির কারণে জমি রাজউক বুঝে নিয়ে ২১ নম্বর সেক্টরে বুঝিয়ে দিয়ে মৌখিক নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাকী কাজ প্রক্রিয়াধীন।
রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এএফএম সায়েদ বলেন, এমন কোন অভিযোগ পাইনি। যদি পাই অবশ্যই ব্যবস্থা নিবো। রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ নুসরাত জাহান বলেন, কোন অভিযোগ পাইনি। খোঁজ নিয়ে দেখবো।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন