পাহাড়-ঝরনা কিংবা দিগন্ত জোড়া হাওর অথৈই পানি অথবা সবুজে ঘেরা চা বাগের অপরূপ সৌন্দর্য যে কাউকে মুগ্ধ করে। প্রকৃতির এমনি অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি মৌলভীবাজার। এ জেলায় রয়েছে অনেক পর্যটন স্পট। অপার সৌন্দর্যে ভরা এসব পর্যটন স্পট করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর গত ২০ আগস্ট থেকে খুলে দেয়া হয়েছে। করোনার কারণে দীর্ঘদিন ঘরবন্দি থাকা মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে প্রকৃতির সংস্পর্শে এসে প্রাণ ভরে নিঃশ্বাস নিতে ছুটে আসছেন মৌলভীবাজারের পর্যটন স্পটগুলোতে।
মাধবকুন্ডের জলপ্রপাত, কিংবা সমুদ্রের বিশালতা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা বাইক্কা বিল বা হাকালুকি বিলের মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই হাজার হাজার ভ্রমণপিপাসু মানুষ ছুটে আসছেন। দিগন্ত বিস্তৃত বিশাল হাওরের সূর্যাস্তের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য কিংবা জোছনা রাতের মায়াবি রূপ সবাইকে মুগ্ধ করে। এ ছাড়া ছোট ছোট টিলা ঘেরা সবুজ চা বাগানে ঘুরেও অনেকে আনন্দ উপভোগ করেন। তবে এসব পর্যটন স্পটে স্বাস্থ্যবিধি সঠিকভাবে মানা হচ্ছে না বলে, অনেকের অভিযোগ রয়েছে। স্পটে ঢুকে অধিকাংশ পর্যটক মুখের মাস্ক খুলে ছবি তুলছেন, কিংবা এমনিতেই খুলে রাখছেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার এ বিষয়টি দেখারও যেন কেউ নেই।
মৌলভীবাজার জেলার অনেক পর্যটন স্পটের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মাধবকুন্ড ইকোপার্কের জলপ্রপাত, হামহাম জলপ্রপাত, মাধবপুর লেক, বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের স্মৃতিসৌধ, বাইক্কাবিল, বর্ষিজোড়া ইকো পার্ক, মনু ব্যারেজ, হাকালুকি হাওর এবং সবুজে ঘেরা অনেক চা বাগান।
এ জেলার পর্যটন স্পটগুলোর মধ্যে বন বিভাগের আওতাধীন মাধবকুন্ড ইকোপার্কের জলপ্রপাত, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মৎস্য বিভাগের অধিনে বাইক্কা বিল ও ন্যাশনাল টি কোম্পানির অধিনে মাধবপুর লেকে প্রবেশ ফি পরিশোধে পর্যটন স্পট এর প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশ করতে হয়। এছাড়াও অন্যন্য পর্যটন স্পটগুলো উন্মুক্ত রয়েছে।
লাউয়াছড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, ধীরে ধীরে পর্যটকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। মাস্ক পরা বা স্বাস্থ্যবিধি না মানলে টিকেট বিক্রি করা হচ্ছে না। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পর্যটকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য বন বিভাগের লোক, ট্যুরিস্ট গাইড ও পর্যটন পুলিশ ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছে। মাস্ক পরা না থাকলে প্রধান ফটকের ভেতর কাউকে যেতে দেয়া হচ্ছে না। মুখে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারের পর ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। তবে অনেক পর্যটক ছবি তোলার জন্য মাস্ক খুলে পকেটে রেখে দেন। প্রতিদিন ৪ থেকে ৫শ’ দর্শনার্থী প্রবেশ করছেন। ছুটির দিনে এ সংখ্যা আরও বেড়ে যায়।
বড়লেখা রেঞ্জ কর্মকর্তা শেখর রঞ্জন দাস জানান, মাধবকুন্ড ইকোপার্কে দর্শনার্থী প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার পর থেকে দর্শনার্থীদের ভিড় ক্রমান্নয়ে বাড়ছে। ছুটির দিনে পর্যটকদের উপস্থিতি হাজার ছাড়িয়ে যায়। এছাড়া অন্যান্য দিনে ৪ থেকে ৫শ’ দর্শনার্থী টিকিট করে প্রবেশ করছেন। যারা প্রবেশ করছেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভেতরে প্রবেশ করতে হয়। তবে ভেতরে গিয়ে অনেকেই ছবি তোলার জন্য মাস্ক খুলে ফেলেন। টিকিট ক্রয়ের সময় সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য বলা হয়।
বিভিন্ন স্থান থেকে নানা বয়সী ভ্রমণপিপাসু ও প্রকৃতিপ্রেমীরা প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমিতে ছুটে বেড়াচ্ছেন। এখন থেকে যদি পর্যটন স্পটগুলো স্বাভাবিকভাবে খোলা থাকে তাহলে এখান থেকে সরকারের লাখ লাখ টাকা রাজস্ব আয় হবে বলে পর্যটন সংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন