এক সপ্তাহের মধ্যে ৫টি পোল্ট্রি মুরগির খামারের প্রায় ২১ হাজার মুরগির মৃত্যুর ঘটনায় পথে বসতে চলেছে ওইসব মুরগির খামামিরা। খামারিরা জানায়, এসব মুরগি মারা যাওয়ায় তারা অন্তত ২৫ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। কুমিল্লাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের নিকট থেকে ওষুধ এনেও মুরগিগুলো রক্ষা করতে পারেন নি তারা। চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার ঘটনা এটি। খামারিরা রানীক্ষেত ও অজ্ঞাত রোগের কারণে এমনটি হয়েছে বলে দাবি করলেও ফরিদগঞ্জ উপজেলা প্রাণী সম্পদ কার্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তা জানান নি।
জানা গেছে, ফরিদগঞ্জ উপজেলার গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের পশ্চিম হাঁসা গ্রামে খাজে আহমেদ গাজীর মালিকানাধীন মেসার্স আল আকসা পোল্ট্রি এন্ড মৎস্য খামারের তিনটি শেডে ১৪ হাজার ও এর পাশেই খোরশেদ গাজীর মালিকানাধীন গাজী পোল্ট্রি খামার নামে দুটি খামারে ৭হাজার মুরগির ছিল। এতে প্রায় ২৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। সরেজমিন গেলে, আল আকসা পোল্ট্রি এন্ড মৎস্য খামারের তত্বাবধানকারী হুমায়ূন গাজী ও খোকন গাজী জানান, গত ৫ সেপ্টেম্বর থেকে ১২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে উক্ত তিনটি খামারের প্রায় ১৪ হাজার মুরগি রানীক্ষেত ও বার্ডফ্লু রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। পাশেই মারা যাওয়া মুরগিগুলোকে মাটি চাপা দেয়া হয়েছে। এসময় সর্বশেষ ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর মারা যাওয়া কয়েক হাজার মুরগিগুলো মাটি চাপা দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা।
অন্যদিকে গাজী পোল্ট্রি খামারের মালিক খোরশেদ গাজী জানান, প্রায় ১৫ বছর ধরে তিনি পোল্ট্রি খামারের ব্যবসা করে আসছেন। তার দুইটি পোল্ট্রি ফার্মের মধ্যে একটি তার নিজের ভূমিতে ও অপরটি ভাড়া নেয়া। এক সপ্তাহের ব্যবধানে রানীক্ষেত ও অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়ে তার ২টি পোল্ট্রি মুরগির খামারের প্রায় ৭ হাজার মুরগি মারা গেছে। সর্বশেষ গত ১১ সেপ্টেম্বর তার প্রায় দেড় হাজার মুরগি মারা যায়। মুরিগগুলো রক্ষা করতে কুমিল্লাসহ নানা স্থান থেকে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র আনলেও তাতে কোন কাজ হয়নি।
খাজে আহমেদ এর লোকজন জানান, খাজে আহমদ একসময় প্রবাসে ছিলেন তিনি। প্রায় ৮/৯বছর পুর্বে দেশে ফিরে গড়ে তোলেন মেসার্স আল আকসা পোল্ট্রি এন্ড মৎস্য খামার নামে প্রতিষ্ঠান। কিন্তু এক সপ্তাহের ব্যবধানে তার ৩টি পোল্ট্রি মুরগির খামারের সকল মুরগি মারা যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তিনি। এমতাবস্থায় বিভিন্ন ব্যাংক, এনজিও ও সমবায় সমিতি থেকে ঋণ নেয়া টাকার কিস্তি কিভাবে পরিশোধ করবেন এনিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি।
খোরশেদ গাজী জানান, এই খামার পরিচালনা করতে গিয়ে নিয়েছেন বিভিন্ন ব্যাংক, এনজিও ও সমবায় সমিতি থেকে ঋণ। এখন সর্বস্ব হারিয়ে তিনি চোখেমুখে সর্ষেফুল দেখছেন। তাই ফরিদগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় ও উর্ধ্বতন কতৃপক্ষ থেকে স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করলে হযতোবা তারা ব্যবসাটি পুনরায় চালু করতে পারবেন। ফরিদগঞ্জের অতি: দায়িত্বে থাকা ডা. জুলফিকার আলীকে পাওয়া যায়নি। তবে উপ-সাহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সংকর চন্দ্র সমাজপতি জানান, বিষয়টি সরেজমিন তদন্ত করে রোগ নির্নয় করে খামারিদের নিদের্শনা হবে। তবে মুরগিগুলো কোন রোগে আক্রান্ত হয়েছে, তা তিনি এই মুহূর্তে নিশ্চিত নন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন