শিশু সন্তানদের জিম্মাদারি নিয়ে জাপানি মায়ের সঙ্গে বাবার বিরোধ মীমাংসার দায়িত্ব এবার উভয়পক্ষের আইনজীবীদের দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক্ষেত্রে সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদকে ‘মুরুব্বি’র ভূমিকা নিতে বলা হয়েছে। আদালত বলেছেন, শিশুদের নিয়ে সুন্দর সমাধান হলে তাদের ভবিষ্যতও ভাল হয়। একই সাথে দেশের ভাবমূর্তিও উজ্জ্বল হয় এবং সবার ভালো হবে।
আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ মামলা মুলতবি করা হয়েছে। এ সময়ে পর্যায়ক্রমে গুলশানের বাসায় একদিন করে মা ও একদিন করে বাবা শিশুদের সঙ্গে থাকবেন-মর্মে নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল ডিভিশন বেঞ্চ ওই সিদ্ধান্ত দেন।
শিশু জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনার বাবা শরীফ ইমরানের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম এবং ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান। জাপানি মা নাকানো এরিকোর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।
এর আগে গত ৩১ আগস্ট হাইকোর্ট এই মর্মে আদেশ দেন যে, বাবা-মাসহ রাজধানীর গুলশানের চার রুমের একটি বাসায় থাকবে জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনা। সেখানে তারা আপাতত ১৫ দিন থাকবে। ফ্ল্যাটের ভাড়া উভয়পক্ষ বহন করবে। সমাজসেবা অধিদফতরের ঢাকার ডেপুটি ডিরেক্টর তাদের তত্ত্বাবধান করবেন। প্রয়োজনে এ কর্মকর্তা ওই ফ্ল্যাটে রাত্রিযাপন করতে পারবেন। গুলশানের বাসায় থাকাকালীন তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঢাকা মহানগর পুলিশ ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) বলা হয়।
প্রসঙ্গত, জাপানি চিকিৎসক মা নাকানো এরিকো এবং বাংলাদেশ বংশোদ্ভুত মার্কিন নাগরিক শরীফ ইমরানের মধ্যে তাদের দুই শিশু সন্তান জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনার জিম্মাদারী নিয়ে মধ্য আগস্ট থেকে উচ্চ আদালতে আইনি লড়াই চলছে। সংবাদ মাধ্যমের কল্যাণে বিষয়টি সারা দেশের আলোচনার বিষয়বস্তুতে পরিণত হয়।
বিশেষত শিশু সন্তানের জিম্মাদারী নিতে জাপান থেকে ছুটে এসে বাংলাদেশে অক্লান্ত আইনী লড়াইয়ের অবতীর্ণ হওয়ার বিষয়টি মানুষের মাঝে আগ্রহ সৃষ্টি করে। লড়াইয়ের বর্তমান পর্যায়ে হাইকোর্ট উভয়পক্ষের আইনজীবীদের দায়িত্ব দিয়েছেন সন্তান নিয়ে সাবেক স্বামী-স্ত্রীর বিরোধ মীমাংসার।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন