নাছিম উল আলম : হজরত মাওলানা শাহসুফি সৈয়দ খাজাবাবা ফরিদপুরী (কু.ছে.আ.) ছাহেব প্রতিষ্ঠিত বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে বিশ্ব উরশ শরিফ উপলক্ষে ইতোমধ্যেই দেশ-বিদেশের অসংখ্য মুরিদান, ভক্ত ও মুসুল্লীবৃন্দের শ্রোত শুরু হয়েছে। ফরিদপুরের বিশ্ব জকের মঞ্জিলে ঐতিহ্যবাহী বিশ্ব উরশ শরিফের আনুষ্ঠানিক সূচনা হচ্ছে আগামীকাল বাদ মাগরিব থেকে।
এ উরশ শরিফ উপলক্ষে দেশের প্রতিটি এলাকা ছাড়াও বিশ্বের অন্তত ৫০টি দেশ থেকে এবারো বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে অগণিত জাকেরান ও আশেকানবৃন্দের সমাগম ঘটবে বলে জানা গেছে। আগামী মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে এবারের উরশ শরিফের সমাপ্তি ঘটবে। ইতোমধ্যেই বিশ্ব জাকের মঞ্জিল ও সন্নিহিত প্রায় ৩৫ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে ৪ দিনব্যপী এ উরশ শরিফের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
লক্ষ লক্ষ জাকেরান ও আশেকানসহ ধর্মপ্রাণ মুসল্লীগণের ফরজ, সুন্নত ও নফল এবাদত-বন্দেগীতে বিশ্ব জাকের মঞ্জিল ও সন্নিহত এলাকাসমুহ ভিন্ন পরিবেশ লাভ করতে যাচ্ছে। সারা দেশ থেকে হাজার হাজার যানবাহনে জাকেরান ও আশেকানবৃন্দ বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে সমবেত হতে শুরু করেছেন। আগামীকাল সূচনা দিবসে কয়েক লাখ লাখ মুসুল্লী জুমা নামাজ আদায়ান্তে দু’রাকাত নফল নামাজ আদায়সহ মিলাদ শরিফ পাঠের পরে পীর ছাহেবের রওজা শরিফে ফাতেহা শরিফ পাঠান্তে দোয়া মোনাজাতে অংশ নেবেন। বাদ আসর তওবা কবুলিয়াতের ফয়েজ আদায়ের পরে মিালাদ এবং পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত শুরু হবে। মাগরিব নামাজ বাদে দুরাকাত করে তিন বারে ছয় রাকাত নফল নামাজ আদায় ও দোয়া-মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। এরপরে ফাতেহা শরিফ পাঠন্তে দোয়া মোনাজাতসহ উরশ শরিফের কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক সূচনা হবে। মাগরিব থেকে এশা পর্যন্ত পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, মিলাদ ও জিকির এবং দেশের বিশিষ্ট ওলামায়ে কেরামগণের ওয়াজসহ বয়ানের মাধ্যমে উরশ শরিফের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
তরিকায়ে নকশবন্দিয়া-মোজাদ্দেীয়ার আমল অনুযায়ী রাতের শেষ প্রহরে রহমতের সময়ে পবিত্র কোরয়ান তেলাওয়াতের মাধ্যমে প্রতিটি দিনের এবাদত-বন্দেগীর কার্যক্রমের সূচনা হয় বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে। এরপরে মিলাদ ও দোয়া-মোনাজাত ছাড়াও জিকির শেষে লক্ষ লক্ষ জাকেরান ও আশেকানবৃন্দ জামাতের সাথে ফজরের নামাজ আদায়ান্তে ফাতেহা শরিফ ও খতম শরিফ আদায়ের মাধ্যমে এ উরশ শরিফের কার্যক্রমে অংশ নেবেন।
এছাড়াও ফজর থেকে এশার নামাজ জামাতের সাথে আদায়সহ নফল নামাজ আদায়, মোনাজাত এবং মোরাকাবা-মোশাহেদা অনুষ্ঠিত হয় এ দরবারে। নকশবন্দিয়াÑমোজাদ্দেদীয়া তরিকার নিয়ম অনুযায়ী বাদ ফজর ও বাদ মাগরিব ফাতেহা শরিফ পাঠান্তে মোনাজাত এবং বাদ এশা ৫শ বার দরুদ শরিফ পাঠান্তে নবী করিম (সা.)-এর পাক কদম মোবারকে নজরানা দেয়া হয়। এছাড়াও জোহর, মাগরিব ও এশার নামজন্তে নফল নামাজ আদায় এবং দোয়াÑমোনাজাতও অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে।
এ উরশ শরিফে সমবেত লক্ষ লক্ষ মানুষের আহার ও বিশুদ্ধ পানি সরবারহ ছাড়াও জামাতের সাথে নামাজ আদায়ের সব ব্যবস্থা ইতোপূর্বেই নিশ্চিত করা হয়েছে। শান্তি-শৃংখলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের কয়েক হাজার স্বেচ্ছাসেবক ছাড়াও পুলিশ এবং র্যাবও মোতায়েন করা হচ্ছে। থাকবে বিভিন্ন বাহিনীর গোয়েন্দা নজরদারিও।
উরশ শরিফ উপলক্ষে বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের পীর ছাহেব হজরত মাওলানা খাজাবাবা ফরিদপুরী (কু.ছে.আ.) ছাহেবের আধ্যাত্মিক উত্তরাধিকারী এবং বড় ছাহেবজাদা আলহাজ খাজা মাহফুজুল হক মুজাদ্দেদী ছাহেব ও মেজ ছাহেবজাদা আলহাজ খাজা মোস্তফা আমীর ফয়সল মুজাদ্দেদী ছাহেবদ্বয় সমেবত জাকেরান ও আশেকানবৃন্দকে সাক্ষাৎ প্রদানসহ নানা অসিহত প্রদান করবেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন