বিএনপির সিরিজ সভা সরকারের বিরুদ্ধে সিরিজ ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। কীভাবে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা যায়, কীভাবে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে উসকানি দেওয়া যায় এটা সেই সভা।
গতকাল শনিবার ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগের সম্পাদকমন্ডলীর সভার শুরুতে দেওয়া বক্তব্যে ওইসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন এবং আওয়ামী লীগের সম্মেলন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি নতুন নির্বাচন কমিশনও আইনানুযায়ী গঠিত হবে। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির মতো আওয়ামী লীগের জাম্বু জেট কেন্দ্রীয় কমিটি না। আমাদের বর্তমান কমিটির মেয়াদ আগামী বছর ডিসেম্বরে শেষ হবে। আমাদেরও আগে বিএনপি ৫০১ এক সদস্যের জাম্বু জেট কমিটি করেছিলো। মিডিয়াতে দেখলাম সেই নির্বাহী কমিটির এটাই তাদের প্রথম সভা। সিরিজ সভা হচ্ছে। এই সভায় তাদের দলের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের বিষয় নেই। অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের চর্চা না করে বিশেষ সিরিজ সভা সরকার বিরোধী সিরিজ ষড়যন্ত্রের গোপন সভা করছে। কীভাবে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা যায়, সরকার হঠাবে, সাম্প্রদায়িক শক্তিকে উসকানি দেবে এটা সেই সভা।
তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার ষড়যন্ত্র তারা করে। আগামী বছর নির্বাচন কমিশন গঠনকে কেন্দ্র করে বিএনপি আবার নতুন করে ষড়যন্ত্র করছে। বিএনপির সব ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাই। যেকোনো ধরনের বিশৃঙ্খলার জবাব দেওয়া হবে। কাদের বলেন, আমাদের এক বছর আগে বিএনপির কমিটি হয়েছে। যা সেই কমিটির মিটিং হয় তিন বছর। তারা কোনো জেলা উপজেলা সম্মেলন করেনি। তারা মুখে মুখে গণতন্ত্রের বুলি আওরায়। তাদের সম্মেলন হয় না, কমিটি হয় না, পার্টিতে গণতন্ত্র নেই তারা কীভাবে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে। অবৈধভাবে ক্ষমতা গ্রহণকারী জিয়ার দলে কোনো গণতন্ত্র নেই।
সেতুমন্ত্রী বলেন, আগামী ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে সরকারের মেয়াদ শেষ হবে। এর তিন মাসে আগে যেকোনো সময় নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচন হবে। আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির মেয়াদ আগামী বছর ডিসেম্বরে শেষ হবে। আওয়ামী লীগের সম্মেলন কখনও আগাম হয়নি। মেয়াদ শেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন যথাসময়ে যেভাবে হয় আমাদের দেশের আইনগত প্রক্রিয়ায়ই করার যে বিধান রয়েছে সেভাবে আমাদের সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠন হবে। এ ব্যপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। গতবারও প্রেসিডেন্ট সার্চ কমিটি গঠন করেছিলেন, সেই সার্চ কমিটিতে বিএনপিরও প্রতিনিধিত্ব ছিল। তাদের একজন এখনও আছে। বিভিন্ন সময় তিনি নোট অব ডিসেন্ট দেন। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন। এটা গণতন্ত্রের বিউটি।
মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগকে ‘চাঁদাবাজ’ আখ্যা দিয়ে সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, এসব দোকান অনেকে খুলে থাকে চাঁদাবাজির জন্য। এগুলো আসলে চাঁদাবাজদের প্রতিষ্ঠান। অবশ্য সবাই করে তা নয়, কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান আছে, এরা চাঁদাবাজিনির্ভর। এরা দলের নাম ভাঙায়।
অপর দিকে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানের আয়োজন করলে ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশে দলের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া সেখানে গিয়ে অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেন। পরে মঞ্চ ও অন্যান্য আয়োজন গুটিয়ে নেয় সংগঠনটি। সম্পাদকমন্ডলীর সভায় অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার ব্যাখ্যাও দেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে কিছুক্ষণ অগে খবর পেলাম, প্রতিষ্ঠালগ্নের কী আয়োজন করেছে আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগ। মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মের ব্যাপারে আমাদের কোনো দ্বিমত নেই। কিন্তু লীগ আর আওয়ামী যখন যুক্ত হয়, তখন এখানে আমাদের সংশ্লিষ্টতা এসে যায়। এখানে আমাদের ভাবমূর্তির বিষয়টা এসে যায়। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের উদ্দেশে বলেন, এসব সংগঠনের কোনো প্রকার আয়োজনে, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী হোক যেটাই হোক, আমি আমাদের কেন্দ্রীয় নেতাদের আহ্বান জানাব, আপনারা কোনো অবস্থায়ই এসব সংগঠনের সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে উপস্থিত থাকবেন না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন