শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

ছাত্রীর আত্মহত্যার চেষ্টা শিক্ষক ময়েন আলীর অশ্লীল কান্ডে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী

প্রকাশের সময় : ৯ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

গোদাগাড়ী (রাজশাহী) উপজেলা সংবাদদাতা : রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে কলেজ ছাত্রীর অশ্লীল ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার ঘটনায় জড়িত শিক্ষকের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করেছে এলাকাবাসী। সেই ছাত্রী আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গোদাগাড়ী উপজেলার গুলগফুর বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষক এবং বালিয়াঘাটা গ্রামের আশরাফুল মাস্টারের ছেলে ময়েন আলী (৪২) তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক ছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করে। আর ধর্ষণের দৃশ্য ধারণ করে কলেজ ছাত্রীটিকে ব্লাকমেইল করে একাধিকবার ধর্ষণ করে ভিডিও চিত্র ধারণ করে শিক্ষক ময়েন আলী। স্থানীয় কম্পিউটারের দোকানে ময়েন আলী তার ব্যক্তিগত ল্যাপটপ মেরামত করতে গেলে ছাত্রীর সঙ্গে ময়েন আলীর ধর্ষণের ভিডিও চিত্র ইন্টারনেট ও এলাকার শতশত মোবাইল ফোনে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি জানতে পেরে কলেজ ছাত্রী ঢাকায় তার স্বামীর বাড়ীতে আত্মহত্যা করার চেষ্টা চালায়। তখন তার স্বামী কলেজ ছাত্রীকে তার পিতার বাড়ী বালিয়াঘাটা গ্রামে পাঠিয়ে দেয়। এখন ধর্ষিত ছাত্রীটি অসুস্থ হয়ে বাড়িতে অবস্থান করছে। ক্ষোভে ঘৃণায় তার স্ত্রী ২ ছেলে নিয়ে বাবার বাড়ী চলে গেছেন। নাম না প্রকাশ করার শর্তে একজন শিক্ষক জানান, ধর্ষণকারী শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেছেন বলে ওই ছাত্রী নয় ৭/৮ ছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করে পার পেয়ে যাচ্ছে, তা না হলে ওই প্রতিষ্ঠানে কেউ তাদের ছেলে মেয়েদের পড়ার জন্য ভর্তি করবেন না বলে তিনি জানান।
তার বাড়ীর লোকজন অভিযোগ করেন, এই ঘটনায় জড়িত শিক্ষক ময়েন আলী অত্যন্ত প্রভাবশালী হওয়ায় তার লোকজন আইনী আশ্রয় না নিতে ধর্ষিত ছাত্রীটির পরিবারকে চাপ দিচ্ছে এবং ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, এর আগে আরও কয়েক জন ছাত্রীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলে শিক্ষক ময়েন আলী। কিন্তু লজ্জায় ও নিজের মানসম্মান হারানোর ভয়ে ওই সব ছাত্রী কোন অভিযোগ করেনি। অনৈতিক কর্মকা-ে জড়িত থেকে ছাত্রীদের জীবন নষ্ট করলেও ময়েন আলী কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি গুলগফুর বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজ কর্তৃপক্ষ। ছাত্রী ধর্ষণ ভিডিও চিত্র ছড়িয়ে পড়ার অভিযোগ পেয়ে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে জড়িত শিক্ষক ময়েন আলীর পক্ষ নিয়েছে বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ। জড়িত শিক্ষক ময়েন আলী তিনদিনের ছুটি নিয়ে গা ঢাকা দিয়েছে। গুলগফুর বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম বলেন, তার কাছে প্রথম দিকে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। তবে বৃহস্পতিবার অভিযোগ পাওয়ায় গভর্নিং বডির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে গত বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টার দিকে এলাকার শত শত লোক বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করে জড়িত শিক্ষক ময়েন আলীর বিচারের দাবিতে। বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে এলাকাবাসী বিদ্যালয় ও কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দিতে গেলে অধ্যক্ষ ঢাকা গেছে, এমন অজুহাতে লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করেনি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। লিখিত অভিযোগ গ্রহণ না করা ও জড়িত শিক্ষক ময়েন আলীর পক্ষ নেওয়ায় এলাকাবাসী রাজশাহী-চাঁপাইনবাগঞ্জ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেয়। প্রায় ১ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ থাকে। পরে পুলিশ জড়িত শিক্ষকের বিচারের আওতায় এনে শাস্তির প্রতিশ্রুতি দিলে সড়ক অবরোধ তুলে নেয় এলাকাবাসী। এ প্রসঙ্গে গোদাগাড়ী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিপজুর আলম মুন্সী বলেন, লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে থানায় মামলা দায়ের করে জড়িত শিক্ষক ময়েন আলীর বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গুলগফুর বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা অভিযোগ করেন, লম্পট শিক্ষক ময়েন আলীকে প্রতিষ্ঠান থেকে বহিষ্কার না করলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বর্জন করবে সকল শিক্ষার্থী। গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহিদ নেওয়াজ বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত আছেন। এ ঘটনায় জড়িত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন