শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

তিন তালাকে সমর্থন নেই ভারত সরকারের

প্রকাশের সময় : ৯ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : তিন তালাক কখনোই ধর্মের অবিচ্ছেদ্য অংশ নয়। তিন তালাকের বিরুদ্ধে মতপ্রকাশ করে এভাবেই শীর্ষ আদালতে নিজেদের অবস্থান জানিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে মহিলাদের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। হলফনামায় তাদের স্পষ্ট বক্তব্য, ভারতে কোনও কারণেই নির্দিষ্ট সাংবিধানিক অধিকার থেকে মহিলাদের বঞ্চিত করা হবে না। হলফনামায় ভারতীয় সংবিধানের ১৪ নং ধারার উল্লেখ করে লিঙ্গের সমতার উপরে জোর দিয়েছে কেন্দ্র। মহিলাদের প্রতি সম্মান এবং স্ত্রী লিঙ্গের সমতার বিষয়ের কথাও কেন্দ্রের হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে সংবিধানের ৫১-এ ধারাকে উদ্ধৃত করে। জাতিসঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ভারত আন্তর্জাতিক সনদ অনুযায়ী মহিলা এবং পুরুষের মৌলিক সার্বভৌম অধিকার রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, সেকথাও হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে। তিন তালাক বাতিল হওয়া উচিত কি না, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু হওয়া উচিত কি না, তা নিয়ে আইন কমিশন জনসাধারণের মতামত জানতে চেয়েছিল। মুসলিম ল’বোর্ডের বক্তব্য ছিল, তিন তালাক ‘পার্সোনাল ল’, আর তাই কেন্দ্র সেটাকে বদলাতে পারবে না। সরকার এদিন মুসলিম ল’ বোর্ডের দাবি অগ্রাহ্য বলে, ‘সংবিধান অনুযায়ী ভারত একটি ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক দেশ এবং এই দেশের কোনও ধর্ম নেই। তিন তালাক, নিকাহ হালালা বা বহুগামিতা কোন একটি ধর্মের আবশ্যক এবং অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ নয়, স্বাভাবিক ভাবেই তাকে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৫ অনুযায়ী সুরক্ষা দেবারও কোন প্রশ্ন নেই।’ কেন্দ্রের পক্ষ থেকে বিশ্বের ১০টি মুসলিম অধ্যুষিত দেশের উদাহরণ তুলে ধরা হয়েছে যেখানে পুরুষ এবং মহিলাদের মধ্যে শ্রেণী বিভাজন না করে বিবাহ বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে সমান অধিকারের কথাই বলা হয়েছে। এই দেশগুলির মধ্যে রয়েছে পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, মরোক্ক, তিউনিসিয়া, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, মিসর, ইরান এবং শ্রীলঙ্কা। এই দেশগুলি নিজেদের বিবাহবিচ্ছেদ আইন পরিবর্তন করে মুসলিম মহিলাদের সমান অধিকারের বিষয় সুরক্ষিত করেছে বলে হলফনামায় জানিয়েছে কেন্দ্র। তিন তালাকের বিষয়ে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে নেয়া এই কড়া অবস্থানের পরে মামলা যে নতুন সুদীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের দিকে এগোচ্ছে, সে বিষয়ে একমত আইনি মহল।
উল্লেখ্য, এর আগে আইনি লড়াইয়ের মধ্যে থেকে তিন তালাকের মামলার শরিক হয়েও তিন তালাকের বৈধতার বিষয়ে শীর্ষ আদালতের হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করেছিল মুসলিম পার্সোনাল ল’বোর্ড। এর আগে সুপ্রিম কোর্টে এই তিন তালাকের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলা করেছিলেন শায়রা বানু। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, তিন তালাকের মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে বিশদ পর্যবেক্ষণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি টি এস ঠাকুর এবং বিচারপতি এএম খানউইলকরের বেঞ্চ জানিয়েছিল, তারা এই মামলার শুনানি নিয়ে তাড়াহুড়ো করতে চান না। এ বিষয়ে বিস্তারিত শুনানির প্রয়োজনীয়তাও উল্লেখ করেছিল শীর্ষ আদালত। সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন