মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিতে ৪২ হাজার কারখানা পরিদর্শন হবে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০১ এএম

২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে সারা দেশে যেসব খাতের কারখানায় সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেগুলোই পরিদর্শন করা হবে। এ ক্ষেত্রে তৈরি পোশাকসহ রফতানিমুখী শিল্পকে বাদ দিয়ে সারা দেশে ৩২ খাতের ৪১ হাজার ৬০৪টি কারখানা চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রাথমিকভাবে পাঁচ হাজার কারখানা পরিদর্শন করা হবে। পরবর্তী সময়ে ধাপে ধাপে অন্য কারখানাগুলোও পরিদর্শন করা হবে। এসব কারখানায় অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র আছে কি না, থাকলে সেটি কার্যকর কি না, ফায়ার অ্যালার্ম ঠিক আছে কি না, নিরাপদে কারখানা থেকে বের হওয়ার পথ আছে কি না—এসব বিষয় দেখা হবে। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

দেড় মাস আগে নারায়গঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুডস কারখানায় অগ্নিকান্ডে প্রাণ হারান ৫২ শ্রমিক। ওই কারখানায় অগ্নিনিরাপত্তাসহ বেশ কিছু ত্রুটি থাকার তথ্য উঠে আসে সরকারি প্রতিবেদনে। এত ত্রুটি নিয়ে কীভাবে একটি কারখানা প্রশাসনের চোখের সামনে চলছিল, তা নিয়ে সরকারের ব্যাপক সমালোচনা হয়।
হাসেম ফুডস কারখানায় অগ্নিকান্ডের পর নড়েচড়ে বসে সরকার। গঠন করা হয় উচ্চপর্যায়ের কমিটি। সে অনুযায়ী কমিটির সদস্যরা সরেজমিন সারা দেশে কলকারখানার নিরাপত্তাব্যবস্থা দেখতে যাচ্ছেন। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে শুরু হবে তাদের এই পরিদর্শন অভিযান। হাসেম ফুডস কারখানায় অগ্নিকান্ডের পর কলকারখানায় নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে প্রধান করে ২৪ সদস্যের ওই উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়। সে কমিটি ইতিমধ্যে একাধিক বৈঠকে বসেছে। গঠন করেছে একাধিক উপকমিটি। কমিটিগুলো ইতোমধ্যে তাদের কাজ শুরু করেছে। বিডার নির্বাহী সদস্য অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, আমরা অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ থেকে কারখানা পরিদর্শনে যাচ্ছি। প্রতিটি দলে ১০ থেকে ১২ জন সদস্য থাকবেন। প্রতিটি খাতেই কারখানা পরিদর্শন করা হবে। প্রথম দফায় পরিদর্শন হবে পাঁচ হাজার কারখানায়। পরে ধাপে ধাপে কারখানার সংখ্যা বাড়বে। বিডার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, কারখানা পরিদর্শন শুরু করার আগে মোট ৩৭টি দল গঠন করা হবে। এর মধ্যে ঢাকায় ১৫টি দল, চট্টগ্রামে ১১টি দল, নারায়নগঞ্জে নয়টি দল ও গাজীপুরে তিনটি দল গঠন করা হবে। পরিদর্শন দলে বিদ্যুৎ, গ্যাস, গণপূর্ত, স্থাপত্য ও বিস্ফোরক অধিদফতরের একজন করে সদস্য থাকবেন। প্রতিটি দল দিনে দুটি করে কারখানা পরিদর্শন করবে। এভাবে তিন মাস চলবে অভিযান। সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসককে পরিদর্শন কার্যক্রমে সহযোগিতা করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। কারখানা পরিদর্শনের আগে কমিটির সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
বিডা বলছে, প্রতিটি দল পরিদর্শনের পর সংশ্লিষ্ট কারখানার ত্রুটি-বিচ্যুতি প্রতিবেদন তুলে ধরবে। প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের নেতৃত্বে গঠিত কমিটির কাছে। সরেজমিন পরিদর্শনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব পেয়েছে বিডা। জানতে চাইলে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, আমাদের দেশে সবচেয়ে বেশি অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে। এর কারণ, দেশে ১০ থেকে ১৫ বছরেও অনেকেই বিদ্যুতের তার পরিবর্তন করে না। সে জন্য সরকার কারখানা পরিদর্শনের যে উদ্যোগ নিয়েছে, তা ভালো। এটাকে কাজে লাগানো যেতে পারে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন