শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

এসএসসি এইচএসসি পরীক্ষায় সৃজনশীলে ৭টি প্রশ্নই থাকছে

প্রকাশের সময় : ১০ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

পরামর্শক কমিটির সভা শেষে শিক্ষামন্ত্রী
স্টাফ রিপোর্টার : এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় সৃজনশীলে সাতটি প্রশ্নই থাকছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি জানান, সৃজনশীলে ছয়টির স্থলে সাতটি প্রশ্নের মাধ্যমে ১০ নম্বর বাড়িয়ে ও এমসিকিউতে ১০ নম্বর কমিয়ে সময় বিভাজনের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হবে না। গতকাল (রোববার) সচিবালয়ে মাধ্যমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে করণীয় নির্ধারণে দেশের বরেণ্য শিক্ষাবিদদের নিয়ে গঠিত পরামর্শক কমিটির সভা শেষে মন্ত্রী এ তথ্য জানান। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় সৃজনশীল পদ্ধতিতে নম্বর বিভাজনের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামলেও সিদ্ধান্তে অনড় থাকার কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। মন্ত্রী বলেন, যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তা চলবে। এটা কোনো পরিবর্তন হবে না। ১০ নম্বর (এমসিকিউ) যে কমানো হয়েছে এটা পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই, যুক্তি নেই, কোনো কারণও নেই।’ এসএসসি, দাখিল, এইচএসসি ও আলিম পরীক্ষার সময় ও নম্বর নতুন করে বিভাজন করে গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিজ্ঞপ্তি জারি করে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক উপ-কমিটি। এ বিভাজন অনুযায়ী ১০০ নম্বরের পরীক্ষায় ৩০টি বহু নির্বাচনী প্রশ্নের (এমসিকিউ) উত্তরের জন্য সময় বরাদ্দ করা হয় ৩০ মিনিট। আগে এক্ষেত্রে ৪০টি প্রশ্নের জন্য ৪০ মিনিট ছিল। অপরদিকে নতুন নিয়মে সৃজনশীল অংশে ৬টির স্থলে ৭টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। সময় ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট। আগে ৬টি প্রশ্নের জন্য এ সময় ছিল ২ ঘণ্টা ১০ মিনিট। এ সিদ্ধান্ত ২০১৭ সাল থেকে কার্যকর হবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ২০১৫ সালে সিদ্ধান্ত নেই, এটা ২০১৭ সাল থেকে পরিবর্তনের ঘোষণা দেই। ২ বছর আগে কেউ এটার (নম্বর পরিবর্তন) বিষয়ে বলেননি। মাসখানেক আগে দেখলাম মফস্বলের দু’একটি স্কুলে দাবি উঠছে যে, আরেকটি প্রশ্ন বাড়লে আমাদের সময় তো বাড়বে না। কি করে ওই প্রশ্নের ফুল উত্তর দেব।’ তিনি বলেন, ‘সকলের অবগতির জন্য বলছি টেস্ট পরীক্ষা সেভাবেই (নতুন নিয়মে) হবে। এসএসসি ও এইচএসসির চূড়ান্ত পরীক্ষার সময় পরীক্ষা শুরু হওয়ার ১৫ মিনিট আগে খাতা দেব। যাতে পরীক্ষার মূল টাইমটা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। সেখানে দেখা গেছে অনেকগুলো বৃত্ত ভরাট করতে হয়। এতে তার বেশ সময় লাগে।’
‘পরীক্ষার মাঝখানে ১০ মিনিট সময় বন্ধ রেখে খাতা দেয়া ও নেয়া হতো তা বন্ধ রাখা হবে না। শিক্ষকরা একহাতে নতুন খাতা দেবেন আরেক হাতে এমসিকিউ’র উত্তরটা নিয়ে নেবেন। ওখানে এক মিনিটও নষ্ট হওয়ার সুযোগ নেই।’ নাহিদ বলেন, ‘আগে সৃজনশীল ৯টি প্রশ্নের মধ্যে ছয়টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হতো। এখন ১১টি প্রশ্নের মধ্যে সাতটি বাছাই করতে হবে। অপশনটা বেশি পাচ্ছে। এছাড়া ৭৫ নম্বরের ক্ষেত্রে ৬টি প্রশ্নের মধ্যে চারটি বাছাই করতে হতো। এখন ৮টি প্রশ্ন থেকে ৫টি বাছাই করতে হবে। অপশনটা বেড়ে যাচ্ছে।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আগে ১০০ নম্বরের মধ্যে প্রতি প্রশ্নের জন্য নির্ধারিত ছিল ২১ মিনিট ৪০ সেকেন্ড। এখন সময় পাবে ২১ মিনিট ২৬ সেকেন্ড। মাত্র ১৪ সেকেন্ডের পার্থক্য। এটা নিয়ে খুব একটা আপত্তির কারণ নেই।’
‘৭৫ নম্বরের পরীক্ষায় আগে ছিল ৩২ মিনিট ৩০ সেকেন্ড (প্রতি প্রশ্নের উত্তর দেয়ার জন্য), এখন হচ্ছে ৩১ মিনিট। আমরা মনে করি এ পার্থক্য খুব একটা সমস্যার সৃষ্টি করবে না’ বলেন মন্ত্রী। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে পাঠ্যক্রমে বড় ধরনের সংস্কার আনার প্রক্রিয়া চলছে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘সহজ, সুন্দর ও চমৎকার একটি পাঠ্যপুস্তকও তৈরি হবে। এসব কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। এজন্য স্যারদের নেতৃত্বেই বিভিন্ন ধরনের সাব কমিটি করা আছে। তারা এ সব কাজ করে যাচ্ছেন গবেষণা করে যাচ্ছেন। তথ্য সংগ্রহ করছেন। যার ফলে আমরা ভবিষ্যতে কারিকুলামেরও যুগোপযোগী উন্নতি করতে সক্ষম হব।’
‘আবার পরীক্ষা পদ্ধতি বারবার ঘুরেফিরে সমস্যা দেখা দেয়। নতুন করে পরীক্ষা পদ্ধতি সহজীকরণ, স্বল্প সময়ের মধ্যে এটা গ্রহণ করা এবং আমাদের ছেলেমেয়রা সহজে পরীক্ষা দিয়ে মূল্যায়ন করা যায় সেই সুযোগ আমরা সৃষ্টি করে দেব।’ তিনি বলেন, ‘সবকিছু মিলিয়ে আমরা পরীক্ষা পদ্ধতির একটি বড় ধরনের সংস্কার করব যার মূল উদ্দেশ্য হবে আমাদের ছেলে-মেয়েরা যেন পরীক্ষাকে চাপ মনে না করে। সহজে যাতে পরীক্ষা দেয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে পারে। পাঠ্যপুস্তকও সেই রকম হবে, পড়ানোও সে রকম হবে। পরীক্ষাও সেরকম হবে, প্রশ্নপত্রও সেরকম হবে। এটা অনেক সহজ ও সাবলীলভাবে আমাদের ছেলে-মেয়েদের কাছে গ্রহণযোগ্য বিষয় হয়ে দাঁড়াবে যেটা আমরা তৈরি করছি আমাদের এ সব স্যারদের (শিক্ষাবিদ) নেতৃত্বে। এসময় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওই সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর জাফর ইকবাল, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) কম্পিউটার কৌশল বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী, ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমান, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর এস এম ওয়াহিদুজ্জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন