স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকেশ্বরী মন্দিরে দুর্গাপূজা পরিদর্শন করে হিন্দু সম্প্রদায়কে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল শারদীয় দুর্গোৎসবের অষ্টমীতে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গিয়ে দলের চেয়ারপার্সনের দুর্গাপূজার এই শুভেচ্ছার কথা জানান তিনি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমি বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে আজকে এসেছি আপনাদের কাছে তার শারদীয়া শুভেচ্ছার বাণী পৌঁছিয়ে দিতে। যেখানে তিনি বলেছেন যে, আসুন আমরা আমাদের প্রিয় বাংলাদেশকে দলমত নির্বিশেষে সকলের অধিকারকে রক্ষা করে একটা সুন্দর সৃষ্টিশীল বাংলাদেশ গড়ে তুলি। সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আসুন আমরা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি, হে ঈশ্বর যেন আমাদের বাংলাদেশকে ভালো রাখেন, সবার যেন কল্যাণ করেন। আমি আপনাদের কল্যাণ কামনা করছি। রাত ৭টায় বিএনপি মহাসচিব নেতৃবৃন্দকে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে যান। তিনি মন্দির প্রাঙ্গণে পূজাম-প পরির্দশন করেন এবং ভক্তদের শুভেচ্ছা জানান। এরপর মন্দিরের নির্ধারিত শারদীয়া আলোচনা সভার মঞ্চে হিন্দু সম্প্রদায়ের অগণিত সদস্যের উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, হাজার বছর ধরে এই দেশের মাটিতে সকল সম্প্রদায়ের মানুষ সৌহার্দের মধ্যদিয়ে, ভ্রাতৃত্বের মধ্য দিয়ে বাস করে আসছে। বিশেষ করে আমাদের হিন্দু-মুসলমান ভাইয়েরা বোনেরা- আমরা একই বৃন্তে দুইটি ফুলের মতো আমরা এখানে বাস করেছি।
আমরা বিভিন্ন সময়ে সংগ্রাম করেছি, আমাদের সুখ-দুঃখ ভাগ করে নিয়েছি। আমরা ১৯৭১ সালে পাকিস্তান হানাদারবাহিনীর সঙ্গে লড়াই করেছি আমাদের স্বাধীনতার জন্যে, অধিকার রক্ষার জন্যে, আমাদের ভবিষ্যৎ নির্মাণের জন্যে। এই দেশ নির্মাণ করতে চেয়েছি সত্যিকার অর্থে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ, প্রগতিশীল বাংলাদেশ, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হিসেবে। গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যাশার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আজকে আমরা বাংলাদেশকে আরো সুন্দর করে নির্মাণ করতে পারি যদি আমরা সত্যিকার অর্থে দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশে বাস করতে পারি। যদি আমাদের অধিকারগুলোকে কাজে লাগাতে পারি, আমাদের যে ভোটের অধিকার, আমাদের যে অন্নের অধিকার, আমাদের যে বেঁচে থাকবার অধিকারগুলো যদি সত্যিকার অর্থে আমরা ভোগ করতে পারি। একই সঙ্গে সকল ধর্মের যে সমান অধিকার সেটা নিশ্চিত করতে পারি।
এটা সম্ভব ১৯৭১ সালে যে গণতান্ত্রিক চেতনা নিয়ে আমরা যুদ্ধ করেছিলাম হাতে হাত মিলিয়ে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে, আজকে বাংলাদেশকে একইভাবে আমরা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে, একটা সমৃদ্ধ বাংলাদেশে, আধুনিক বাংলদেশে পরিণত করতে পারি কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সকল ধর্মের মানুষের একটা অভুতপূর্ব ঐক্যতান সৃষ্টি করে। সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার শারদীয়া শুভেচ্ছাও পৌঁছিয়ে দেন মির্জা ফখরুল। সাদেক হোসেন খোকা সাহেব চিকিৎসার জন্য বিদেশে আছেন, তিনি আপনাদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। যিনি এই মন্দিরের জমিগুলো ফেরত পাওয়ার জন্য, এই মন্দিরের উন্নয়নের জন্য তিনি তার সামান্য অবদান আপনাদের সাথে রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন। মহানগর সার্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি ডিএম চ্যাটার্জি বিএনপি নেতৃবৃন্দকে শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন।
ঢাকেশ্বরী মন্দিরে পূজাম-প পরির্দশনকালে মির্জা ফখরুলের সঙ্গে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সুকোমল বড়ুয়া, পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক গৌতম চক্রবর্তী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কু-, সহ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু অপু, স্থানীয় নেতা শাহিদা মোর্শেদ, কামাল পারভেজ বাদল, হুমায়ুন কবির, মো. রাসেল প্রমূখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পরে ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে বিএনপি মহাসচিব বনানী পূজাম-প পরিদর্শন করেন। এর আগে দুপুরে কেরানীগঞ্জে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বাড়ির পূজাম-পেও যান তিনি। এছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন পূজাম-পও পরিদর্শন করেন।
এদিকে গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর রামকৃষ্ণ মিশন মন্দির পরিদর্শন করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগরীর আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস। এ সময় তার সাথে ছিলেন- কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা রমেশ দত্ত, মহানগর বিএনপির নেতা কাজী আবুল বাশার প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন