মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়েন্ডি শেরম্যান চলতি সপ্তাহের শুরুতে ভারত সফরের সময় বলেছিলেন যে, ওয়াশিংটন আর পাকিস্তানের সাথে ‘বিস্তৃত ভিত্তিক সম্পর্ক’ তৈরি করতে চাইছে না। এটি ছিল শুক্রবার তার ইসলামাবাদ সফরের সময় দেয়া বক্তব্যের সম্পূর্ণ বিপরীত।
ভারতে দুই দিনের সরকারি সফরের দ্বিতীয় দিনে তিনি বলেন, ‘আমরা (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) নিজেদেরকে পাকিস্তানের সাথে আমাদের বিস্তৃত সম্পর্ক গড়ে তুলতে দেখি না এবং আমাদের ভারত, পাকিস্তানের জটিল দিনগুলোতে ফিরে যাওয়ার কোনো আগ্রহ নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘সেখানে আমরা নেই, সেখানে আমরা যাচ্ছি না।’ তিনি জানান, তার ইসলামাবাদ ভ্রমণের লক্ষ্য ছিল ‘নির্দিষ্ট এবং সংকীর্ণ উদ্দেশ্য’ অর্জন করা। যাইহোক, এর পরে শুক্রবার পাকিস্তান সফরের সময় শেরম্যান বলেছিলেন যে, পাকিস্তানের সাথে ওয়াশিংটনের ‘দীর্ঘদিনের সম্পর্ক’ ছিল। সেখানে তিনি ভারতে করা মন্তব্য উপেক্ষা করে পাকিস্তানের সাথে সহযোগিতার কথা বলেন।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হোয়াইট হাউসের দায়িত্ব নেয়ার পর পাকিস্তান সফরকারী প্রথম উচ্চপদস্থ মার্কিন কূটনীতিক শেরম্যানও ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন শীঘ্রই প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে টেলিফোন করতে পারেন। বাইডেন প্রশাসন দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে, দুই দেশের সম্পর্ক থমকে আছে কারণ, পর্যবেক্ষকরা বিশ্বাস করেন যে, আফগানিস্তান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর মার্কিন অগ্রাধিকার পরিবর্তিত হতে পারে। ক্যাপিটল হিলে এমন একটি মতও রয়েছে যে, আফগানিস্তানে মার্কিন পরাজয়ের জন্য পাকিস্তান দায়ী ছিল। যদিও ইসলামাবাদ জোর দিয়ে বলেছিল যে, তাদেরকে অন্যের ব্যর্থতার জন্য বলির পাঁঠা করা যাবে না।
নয়াদিল্লি থেকে পাকিস্তানে উড়ে আসা শেরম্যান পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ডক্টর মইদ ইউসুফ এবং সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়ার সঙ্গে আলোচনা করেন। দুই দিনের সফর শেষ করার আগে তিনি মার্কিন দূতাবাসে একদল সাংবাদিককে বলেন, ‘আমাদের কথোপকথন স্পষ্ট, গভীর এবং সরাসরি ছিল।’ তিনি বলেন, ‘আমরা আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছি, এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পাকিস্তান এবং প্রকৃতপক্ষে, সমগ্র আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তালেবানদের কাছ থেকে কী আশা করে, তা স্পষ্ট করেছি।’ পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার সময়, তিনি তালেবানদের প্রতিশ্রুতির প্রতি দায়বদ্ধতার গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘কারণ স্থিতিশীল এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক আফগানিস্তান থাকা আমাদের সকলের স্বার্থে যা সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে কাজ করে না।’
সরকারী সূত্র জানায়, তিনি পাকিস্তান কর্তৃপক্ষকে বলেছিলেন যে তারা তালেবান সরকারকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে দেয়া সমস্ত প্রতিশ্রুতি পূরণ করার আগে তাদের স্বীকৃতি দেবে না। তিনি এটা স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন যে, এই মুহুর্তে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানের কোনো সরকারকে স্বীকৃতি দেবে না, যেমন সেক্রেটারি ব্লিংকেন বলেছিলেন, বৈধতা অর্জন করতে হবে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এবং কিছু পদক্ষেপের মাধ্যমে। সূত্র: ট্রিবিউন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন