যশোর শিক্ষাবোর্ডে চেক জালিয়াতিতে অভিযুক্ত হিসাব সহকারী আবদুস সালাম আরও ১৫ লাখ ৯৮ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছেন। দুদকে মামলা হবার পর তিনি ডাকযোগে পে-অর্ডারের মাধ্যমে এই টাকা ফেরত দিয়েছেন। এর আগে ১১ অক্টোবর একই মাধ্যমে তিনি ১৫ লাখ ৪২ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছিলেন। বিষয়টি জানিয়েছেন যশোর শিক্ষাবোর্ডের হিসাব শাখার উপ-পরিচালক এমদাদুল হক।
চলতি অর্থবছরে যশোর শিক্ষা বোর্ড সরকারি কোষাগারে জমার জন্য আয়কর ও ভ্যাট বাবদ ১০ হাজার ৩৬ টাকার ৯টি চেক ইস্যু করে। এ টাকার জন্য ৭টি চেক জালিয়াতি করে ভেনাস প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের নামে ১ কোটি ৮৯ লাখ ১২ হাজার ১০ টাকা এবং শাহী লাল স্টোরের নামে ২টি চেকে ৬১ লাখ ৩২ হাজার টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়।
গত ৭ অক্টোবর বোর্ডের অভ্যন্তরীণ তদন্তে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। বোর্ডের চেয়ারম্যান ওইদিনই কলেজ পরিদর্শক কেএম রব্বানীকে প্রধান করে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। চেক জালিয়াতি করে আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে চেয়ারম্যান, সচিবসহ ৫ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন দুদক। দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় যশোরের সহকারী পরিচালক মাহফুজ ইকবাল বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
আসামিরা হলেনÑ যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোল্লা আমীর হোসেন, সচিব অধ্যাপক এএম এইচ আলী আর রেজা, হিসাব সহকারী আবদুস সালাম, প্রতারক প্রতিষ্ঠান ভেনাস প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের মালিক রাজারহাট এলাকার বাসিন্দা আবদুল মজিদ আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম বাবু ও শেখহাটী জামরুলতলা এলাকার শাহীলাল স্টোরের মালিক মৃত সিদ্দিক আলী বিশ্বাসের ছেলে আশরাফুল আলম। দুদকে মামলা হবার পর চেক জালিয়াতি চক্রটির সদস্য পলাতক হিসাব সহকারী আবদুস সালাম নিজেই এই চক্রের সাথে একা জড়িত দাবি করে আত্মসাতের টাকা ফেরত দিচ্ছেন।
গত ১১ অক্টোবর তিনি ১৫ লাখ ৪২ হাজার টাকা এবং গত বৃহস্পতিবার ডাকযোগে পে-অর্ডারের মাধ্যমে আরও ১৫ লাখ ৯৮ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছেন। পলাতক থেকে তিনি এই টাকা ফেরত দিচ্ছেন। এদিকে মামলা হবার পরও কোন আসামি আটক না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আসামিরা বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তারা মামলা থেকে বাঁচতে তদবিরে ব্যস্ত সময় পার করছেন ছুটি নিয়ে।
দুর্নীতি দমন কমিশন যশোর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. নাজমুচ্ছায়াদাত জানান, আমরা প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় ৫ জনকে আসামি করে মামলা করেছি। দুদকের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হবে। আত্মসাতকৃত টাকার শেষ গন্তব্যস্থল খুঁজে বের করা হবে। যশোর শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মাধব চন্দ্র রুদ্র জানান, হিসাব সহকারী আবদুস সালাম টাকা ফেরত দিয়েছেন। আর সচিব মেডিকেল রিপোর্ট জমা দিয়ে ৭ দিনের ছুটির আবেদন করেছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন