দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক মো.সালাহউদ্দিনের বিরুদ্ধে এবার যৌতুক দাবি এবং নির্যাতনের অভিযোগে মামলা করেছেন তার স্ত্রী। গত ২০ অক্টোবর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় এ মামলা (নং-৫২) দায়ের করেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ (সংশোধনী/২০০৩) এর ১১(গ)/৩০সহ দ-বিধির ৩২৩ ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলার বাদী, জান্নাতুল কৌশরী। মামলায় সালাহউদ্দিনের ছোট বোন শামিমা সুলতানাকেও আসামি করা হয়েছে।
এজাহারে কৌশরী উল্লেখ করেন,২০২০ সালের ২৫ জানুয়ারি ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক সালাউদ্দিন ইমনের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় আমার পরিবার বিবাদীর ঘর সাজানোর জন্য ২ লাখ টাকা দেয়। বিয়ের পর আমাদের সাংসারিক জীবন কিছুদিন ভালো চলে। কিছুদিন পর থেকে তার ছোট বোন শামিমা সুলতানার প্ররোচনায় সালাহউদ্দিন ফ্ল্যাট কেনার জন্য ২০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে শারীরীক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকেন। এক পর্যায়ে আমি আমার পরিবার থেকে ২০ লাখ টাকা এনে দেই। কিছুদিন পর যৌতুক হিসেবে আরও ১ কোটি টাকা দাবি করেন। কিন্তু পরিবার থেকে ওই টাকা আনতে অস্বীকৃতি জানালে সালাহউদ্দিন আমার ওপর শারীরীক ও মানসিক নির্যাতন চালাতে থাকে। সর্বশেষ গত ১৩ অক্টোবর রাত সাড়ে ৮টায় খিলগাঁওস্থ বর্তমান ঠিকানায় আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে এলোপাতাড়ি ভাবে কিলঘুষি লাথি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থান জখম করে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত আমার বড় মামা আবু হান্নান মো: মনোয়ার হোসেন এবং হুমায়রা ইসলাম এর সাক্ষী রয়েছেন। খিলগাঁও থানার সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) মো.নাজমুল হুদা মামলাটি তদন্ত করছেন। টেলিফোনে তিনি জানান, আসামি গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে দুদক উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন বলেন, আমি প্রতারকচক্রের ফাঁদে পড়েছি। সামাজিকভাবে বিয়ে হলেও কিছুদিন পর জানতে পারি কৌশরীর সঙ্গে বহু পুরুষের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। এসব সম্পর্ক ত্যাগ করার জন্য তাকে নানাভাবে বোঝানোর চেষ্টা করি। কিন্তু আমি ব্যর্থ হই। তার অবৈধ সম্পর্কের বহু তথ্য-প্রমাণ আমার হাতে রয়েছে। এসব নিয়ে কথা বলতেই সর্বশেষ গত ১৩ অক্টোবর তার মামা আমার ওপর চড়াও হয়। আমাকে আহত করে। এ বিষয়ে আমি আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ নিলে ওরাই আমার বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা দায়ের করে।
এদিকে মামলার বাদী জান্নাতুল কৌশরী বলেন, কোনো নারী সংসার ভাঙতে চায় না। তার মানসিক ও শারীরীক নির্যাতনে অতিষ্ট হয়ে মামলা করতে বাধ্য হয়েছি। আমার দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। তিনি বলেন, আমার আগেও ইমন একাধিক বিয়ে করেছে। আমি তার চতুর্থ স্ত্রী-এ কথা কারও কাছে বলতেও পারি না। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়–য়া দিনাজপুরের সহজ-সরল একজন মেয়ে।
প্রসঙ্গত: উপ-পরিচালক মো.সালাহউদ্দিন দুদকের বিশেষ অনুসন্ধান-তদন্ত শাখায় কর্মরত। পিকে হালদার, জিকে শামীম,শহিদ ইসলাম পাপুল এবং ক্যাসিনোকা-ের গুরুত্বপূর্ণ মামলার বাদী এবং তদন্ত কর্মকর্তা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন