‘বাংলাদেশে চীনের প্রভাব ভারতের জন্য বিপজ্জনক; চীনের সহায়তায় বাংলাদেশি মুসলমানদের ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ঠেলে পাঠানো হচ্ছে’ (ভারতের সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াত)। গত ২৩ অক্টোবর গোয়াহাটিতে দেয়া বিপিন রাওয়াতের এই উস্কানিমূলক বক্তব্য বাংলাদেশ ও ভারত ছাড়াও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে ফলাও করে প্রচার হয়েছে। বাংলাদেশ নিয়ে এই উস্কানিমূলক বক্তব্য ভারতের গণমাধ্যমগুলোয় বিতর্কের ঝড় তুলেছে। অথচ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও মাঠের বিরোধী দল বিএনপি এ ব্যাপারে নীরব। দুই বৃহৎ দলের কোনো নেতা ভারতের সেনাপ্রধানের এই বক্তব্যের প্রতিবাদ করেছেন এমন খবর মিডিয়ায় আসেনি। অথচ পূজামণ্ডপে হামলা ইস্যুতে দুই দলের নেতারা একে অপরের বিরুদ্ধে ব্লেইম গেইম নিয়ে ব্যস্ত। তাদের এই ব্লেইম গেইম শুধু গণমাধ্যমে নয়; সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে।
কুমিল্লার একটি পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন অবমাননা এবং ১৬ জেলায় পূজামণ্ডপে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনার খবর আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচার হচ্ছে। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এতে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের সম্প্রীতির ভাবমর্যাদা বিনষ্ট হচ্ছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা একে অপরকে দোষারোপ করেই যাচ্ছেন।
পবিত্র কোরআন অবমাননা এবং পূজামণ্ডপে হামলার পর সরকার সারাদেশে সৌহার্দ্য সম্প্রীতি রক্ষার সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। আওয়ামী লীগ ‘সম্প্রীতি সমাবেশ ও শান্তি শোভাযাত্রা’ করেছে। বিএনপিও আলোচনা সভা করে সৌহার্দ্যরে কথা বলেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদের নামে কিছু কিছু সংগঠন দেশে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির চেষ্টা করছে। এমনকি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের ভাবমর্যাদা নষ্ট করার অপচেষ্টা করছে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিজেপির পক্ষ থেকে জাতিসংঘে চিঠি দিয়ে বাংলাদেশের ব্যাপারে নাক গলানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে। দেশের সম্প্রীতির ভাবমর্যাদা রক্ষা করা রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্ব। অথচ দুই দলের দায়িত্বশীল নেতাদের কেউ রংপুরের হিন্দু পল্লী এবং কুমিল্লা, নোয়াখালী, চাঁদপুর সফর করে নিহতের পরিবারগুলোকে সান্ত¦না দিয়েছেন বা হিন্দু পূজারীদের আশ্বস্ত করেছেন এমন খবর মিডিয়ায় আসেনি। ঢাকায় থেকেই দুই দল একে অপরের দিকে বিষাক্ত তীর ছুঁড়ছেন।
রংপুরের মাঝিপাড়ায় অগ্নিকাণ্ড ও পূজামণ্ডপে হামলার ঘটনায় চাঁদপুর, নোয়াখালী, কুমিল্লা, ফেনী, রংপুর, সিলেট, চট্টগ্রাম, কুড়িগ্রাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, গাজীপুর, কক্সবাজার (পেকুয়া-চকরিয়া), দিনাজপুর, মৌলভীবাজার, নাটোর, বান্দরবান, বরিশাল (গৌরনদী) ১৬ জেলায় ৮৫টি মামলা হয়েছে। আসামি করা হয়েছে ২৩,৯১১ জন। অজ্ঞাত আসামি কয়েক হাজার। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছে ৬৮৩ জন। তারপরও ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনসাসনেস (ইসকন) ও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদসহ কয়েকটি সংগঠন সারাদেশে নানা আন্দোলন কর্মসূচি পালন করছে। তাদের ইন্দনে বিশ্বের প্রভাবশালী দেশগুলোতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অভিযোগ তুলে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। ‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের নির্যাতন করা হয়’ এমন ব্যান্ডিং করার চেষ্টা চলছে। এতে পরিষ্কার কোনো মহল বাংলাদেশের ভাবমর্যাদা নষ্টের জন্য এমন প্রচারণা চালাচ্ছেন। দলমত নির্বিশেষে এসব অপপ্রচারের বিরুদ্ধে একাট্ট হওয়া প্রয়োজন। একই সঙ্গে পর্দার আড়াল থেকে কারা ‘এমন পরিস্থিতি’ সৃষ্টি করছে তাদের চিহ্নিত করে কাজ করা দরকার। বিএনপি ও আওয়ামী লীগ নেতারা প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের দাবি এবং দেশের ভাবমর্যাদা রক্ষায় কোনো কার্যকর ভূমিকার বদলে একে অপরের বিরুদ্ধে ব্লেইম দিয়েই যাচ্ছেন। এটা ঠিক বেশির ভাগ ঘটনার সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের লোকজন জড়িত এমন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। অথচ বেশির ভাগ গ্রেফতার হচ্ছে বিএনপির লোকজন।
পূজামণ্ডপে হামলা ইস্যুতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করে বলেছেন, সরকারের মদদেই সারাদেশে পূজামণ্ডপে হামলার ঘটনা হয়েছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, হামলার পেছনে কারা মির্জা ফখরুল ভালো জানেন। দুই বৃহৎ দলের নেতাদের এই ব্লেইম গেইমে কি প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করার চেষ্টা নয়?
’৯০ সালে স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর সংসদীয় গণতন্ত্রের ৩১ বছর ধরে দেশে ব্লেইম গেইমের রাজনৈতিক-সংস্কৃতি চলছে। তারই ধারাবাহিকতা দেখা যাচ্ছে কুমিল্লার পূজামণ্ডপে কোরআন অবমাননা এবং পরবর্তীতে ১৬ জেলায় পূজামণ্ডপে হামলা-সংঘর্ষ পরবর্তী দুই দলের নেতাদের বক্তৃতা-বিবৃতি। রংপুরের হিন্দু পল্লীতে অগ্নিকাণ্ডের মানবিক বিপর্যয়ের ঘটনা কি বেদনাদায়ক নয়?
বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের এক মতবিনিময় সভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন, আমরা বারবার বলছিÑ দাঙ্গা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করা ক্ষমতাসীনদের মদদ ছাড়া সম্ভব নয়। নিঃসন্দেহে যারা আক্রমণ চালিয়েছে, তারা কোনো বিরোধী দলের রাজনৈতিক নেতাকর্মী নয়। দাঙ্গা করা ক্ষমতাসীনদের মদদ ছাড়া সম্ভব নয়। এটা পরিষ্কার হয়ে গেছে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাকে আরো দীর্ঘায়িত করার জন্য, আগামী নির্বাচনে যাতে তারা পার পেয়ে যেতে পারেÑ সেজন্য বিভিন্ন রকমের অপকৌশল গ্রহণ করতে শুরু করেছে, এটা তারই একটা প্রমাণ। অপরদিকে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ঘটনার পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই বলছেন, বিএনপি হচ্ছে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির পৃষ্ঠপোষক। দেশের সব অপকর্ম ও সাম্প্রদায়িকতার জনক হচ্ছে এই দল। আওয়ামী লীগের ‘সম্প্রীতি সমাবেশ ও শান্তি শোভাযাত্রায়’ অংশ নিয়ে তিনি বলেন, মন্দিরে হামলা, প্রতিমা ভাঙচুরÑ এগুলো ২০০১ সালে বিএনপি সরকার যে নির্যাতন চালিয়েছিল তারই পুনরাবৃত্তি। আন্দোলনে ব্যর্থ, নির্বাচনে ব্যর্থ বিএনপি সাম্প্রদায়িক শক্তিকে উসকে দিয়ে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে। অবস্থাদৃষ্টে জনমনে প্রশ্ন ও সন্দেহ দেখা দিয়েছে যে, পূজামণ্ডপে হামলার পর ইকবাল গ্রেফতারের পর বিএনপির অতিপ্রতিক্রিয়া বা আগ বাড়িয়ে কথা বলা তাদের নিজেদের অপরাধ লুকানোর কৌশল কি না? ভিডিও ফুটেজে চিহ্নিত হওয়া কুমিল্লার পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরীফ রাখা ইকবাল হোসেনের গ্রেফতারে যখন সবাই স্বস্তি প্রকাশ করছে তখন বিএনপি মহাসচিব প্রশ্ন তুলছেন। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির আরো কয়েকজন নেতা পূজামণ্ডপে হামলা ইস্যুতে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের দিকে আঙ্গুল তুলেছেন।
বড় দুই দলের ব্লেইম গেইম নিয়ে সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেছেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার পর আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একে অপরকে দোষারোপ করছে। এতে প্রকৃত অপরাধীদের পার পেয়ে যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে। বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেছেন, দোষারোপের রাজনীতির মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের রেহাই পাওয়ার একটা রাস্তা তৈরি হয়ে যায়। যারা এ কাজ করে, তারা অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে যতটা আন্তরিক, তার চেয়ে বেশি পারস্পরিক দোষারোপের মাধ্যমে রাজনীতির ফায়দা লাভে বেশি উৎসাহী।
দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর একে অপরকে দোষারোপের রাজনীতি করা যেন অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে কোনো একটি ঘটনার পরপরই একে অপরকে ঘায়েলের প্রতিযোগিতায় নামে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। প্রকৃত ঘটনা যাচাই না করেই একে অপরের বিরুদ্ধে কুৎসা রটানো ও ঘায়েল করা যেন রাজনৈতিক কৌশল হয়ে গেছে। সর্বশেষ কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনায়ও এর ব্যত্যয় ঘটেনি। তদন্তের আগেই কোনো প্রমাণ ছাড়াই ঘটনার জন্য একে অপরকে দায়ী করে প্রতিদিনই বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন দল দু’টির নেতারা। ঘটনার পেছনে একে অপরের ষড়যন্ত্র খুঁজছেন। এর আগে কক্সবাজারের রামু, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর, পাবনার সাঁথিয়া, রংপুরের গঙ্গাচড়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার পরও একে অপরকে দোষারোপ করতে দেখা যায়। ফলে ওই সব ঘটনার নেপথ্যের প্রকৃত অপরাধীদের অনেকেই পার পেয়ে গেছে। এবারও এমন আশঙ্কা করছেন রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টরা। বিশেষজ্ঞদের অভিমত তদন্তের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর এমন বিপরীতমুখী অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তবে ক্ষমতাসীনদের দায়িত্বশীল নেতাদের আগ বাড়িয়ে কিছু মন্তব্য নিরপেক্ষ তদন্তে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আবার কেউ কেউ মামলার আসামি ও গ্রেফতার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। প্রায় সকলেই একমত সাধারণ মুসলমানদের কেউ পবিত্র কোরআন শরীফ হিন্দুদের পূজামণ্ডপে রেখে আসবে না। আবার সাধারণ হিন্দু এবং পূজারীদের কেউ নিজেদের পূজায় পবিত্র কোরআন রাখবে না। তৃতীয় কোনো পক্ষ এই কাজ করে ফায়দা লুটতে চাচ্ছে। পূজামণ্ডপে হামলার পর ভারতীয় গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচারণা, ইসকনের আন্দোলন গড়ে তোলা, বিজেপি নেতার জাতিসংঘে চিঠি দেয়া ইত্যাদি দেখে বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ বলছেন এটা তৃতীয় কোনো পক্ষের কাজ। পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূলের নেতারা বলছেন বিজেপি আগামী নির্বাচনে হিন্দু-মুসলিম বিরোধকে পুঁজি করে নির্বাচনে ফায়দা লুটতে চায়। বাংলাদেশের বাম দলের একাধিক নেতা আশঙ্কা করেছেন ভারতের কয়েকটি রাজ্যের ভোটে বিজেপি ফায়দা নিতে হিন্দু-মুসলিম বিরোধ কাজে লাগাতে চায়। তদন্ত যেহেতু চলছে সেহেতু এ নিয়ে কোনো মন্তব্য নয়। তবে বাংলাদেশে সম্প্রীতি বিনষ্টের অপচেষ্টায় তৃতীয় পক্ষ কারা এসব করছে তাদের খুঁজে বের করার বদলে ঘটনার সঙ্গে রাজনৈতিক রঙ লাগানোর চেষ্টা চলছে। তা না হলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে গত ২৬ মার্চ হাটহাজারীতে বিক্ষোভ-সহিংসতা মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন চট্টগ্রাম বিএনপির ৩ নেতা। ১৬ এপ্রিল কারাগারে পাঠানো হয় চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি সৈয়দ ইকবালকে। কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সদস্য আকরাম উদ্দিন ওরফে পাভেলকে ১০ মে কারাগারে পাঠানো হয়। আর বিএনপির কর্মী জোনায়েদ মেহেদীকে ২০ এপ্রিল কারাগারে পাঠানো হয়। তখন থেকে তারা কারাগারে থাকলেও ১৩ অক্টোবর হাটহাজারী উপজেলার সরকারহাট বাজার সংলগ্ন সোমপাড়া সার্বজনীন পূজামণ্ডপের ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা ও মণ্ডপের গেট ভাঙচুরের ঘটনা মামলায় তাদের আসামি করার রহস্য কি?
মাঠের রাজনীতি না থাকলেও পূজামণ্ডপে হামলা ও রংপুরে হিন্দু পল্লীতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গন এখন বেশ উত্তপ্ত। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একে অপরকে বিষোদ্গারে ব্যস্ত। পবিত্র কোরআন অবমাননার ‘খবর’ কার্যত চাপা পড়ে গেছে। শুরু থেকেই সাধারণ মানুষ, নাগরিক সমাজ, বুদ্ধিজীবী মহল যতটা প্রতিবাদমুখর সরকার ঠিক ততটা তৎপর নয়। বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন না করা, রাজনৈতিক ব্লেইম গেইম শুরু করা, প্রথম থেকেই বিরোধী দলকে দায়ী করা অব্যাহত রয়েছে। অপরদিকে বিএনপি ঘটনার নেপথ্যের খলনায়করা চিহ্নিত হোক এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারেনি।
পূজামণ্ডপে হামলার ঘটনার পর আওয়ামী লীগ ও বিএনপি যতটা ব্লেইম গেইমে ব্যস্ত; জাতীয় স্বার্থে ততটা ব্যস্ত নন। ভারতের সেনাবাহিনীর প্রধান বিপিন রাওয়াত গোয়াহাটিতে এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সম্পর্কে যে ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন, তার প্রতিবাদ পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূলসহ অনেক দল করেছেন। ভারতের গণমাধ্যমে এর প্রতিবাদে খবর ছাপা হয়েছে। তারা অভিযোগ করছেন, বিজেপির এজেন্ডা বাস্তবায়নে বিপিন রাওয়াত এমন বক্তব্য দিয়েছেন। অথচ বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বিপিন রাওয়াতের বক্তব্যে কোনো প্রতিবাদ করেনি। মুখচেনা বুদ্ধিজীবীরাও এ ব্যাপারে নীরবতা পালন করছেন। মিডিয়াগুলোতেও তেমন প্রতিক্রিয়া নেই। বিপিন রাওয়াতের বক্তব্যের প্রতিবাদ করেনি বিএনপিও।
রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নানা বিষয় নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। কিন্তু তা হতে হবে জনগণের স্বার্থে। দেশের প্রধান দু’টি দল সব সময় প্রতিপক্ষকে ঘায়েলের মাধ্যমে নিজেদের দায় এড়ানো কাম্য নয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন