অর্থনৈতিক রিপোর্টাও : দেশের বাজারে সব ধরনের ভোজ্যতেলের দাম তিন মাসের ব্যবধানে কেজিপ্রতি প্রায় ১৫ টাকা বেড়েছে। নতুন করে আবার কিছুদিন ধরে ভোজ্যতেল বাড়াতে পাঁয়তারা করছিল দেশের বিপণনকারী কোম্পানিগুলো। এ লক্ষ্যে ট্যারিফ কমিশনে দর বাড়ানোর প্রস্তাবও জমা দেয় ব্যবসায়ীরা। প্রস্তাব পাওয়ার পর দর বাড়ানোর যৌক্তিকতা পর্যবেক্ষণে কমিশন এটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। দাম বাড়ানোর প্রস্তাব এখনো পর্যবেক্ষণের পর্যায়ে রয়েছে। এর মধ্যেই সিদ্ধান্তের তোয়াক্কা না করে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে বিপণনকারী কোম্পানিগুলো।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ভোজ্যতেলের দাম বাড়ার ব্যাপরে কোন সিদ্ধান্ত দেয়নি বলে জানা গেছে। কোম্পানিগুলো নিজেদের সিদ্ধান্তেই দাম বাড়িয়েছে বলেও জানিয়েছে মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা। এদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব দেশে পণ্যটির দামে পড়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
এদিকে বাজারে দাম বাড়িয়ে গত সপ্তাহেই তেল ছাড়তে শুরু করে সিটি গ্রুপ। এরপর থেকে বাংলাদেশ এডিবল অয়েল ও মেঘনা দাম বাড়িয়েছে। অন্যদিকে এই তিন কোম্পানির দাম বাড়াতে বাকিরা দাম বাড়াচ্ছে বলে জানা গেছে।
খুচরা বাজারে দেখা গেছে, কয়েক দিন ধরে কোম্পানিগুলো নতুন দামে বাজারে তেল সরবরাহ শুরু করেছে। প্রতি কেজিতে দাম বাড়ানো হয়েছে ব্যান্ডভেদে ৫-৮ টাকা পযর্ন্ত। বাজারে সিটি ও মেঘনা গ্রুপের এক লিটারের বোতলের দাম এখন ১০২ টাকা, যা দাম বৃদ্ধির আগে ৯৫ টাকায় বিক্রি হতো। এছাড়া পাঁচ টাকা দাম বেড়েছে বাংলাদেশ এডিবল ওয়েলের ব্র্যান্ড রূপচাঁদা তেলের। নতুন দরে পাঁচ লিটার তেল কিনতে এখন ক্রেতাকে ৫০০ টাকা দিতে হবে, যা আগের চেয়ে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা বেশি। অথচ রাজধানীর খুচরা বাজারগুলোতে দুই মাস আগে সয়াবিন তেলের দাম ছিল কেজিপ্রতি ৮০-৮২ টাকা।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশে প্রতি বছর ভোজ্যতেলের সার্বিক চাহিদা প্রায় ১৫-১৮ লাখ টন। বিপুল পরিমাণ তেলের চাহিদার বিপরীতে দেশে উৎপাদন হচ্ছে মাত্র দুই থেকে চার লাখ টন। আমদানির মাধ্যমে সিংহভাগ তেলের চাহিদা পূরণ করতে হচ্ছে। মিরপুরের মুদিদোকানি আবুল কালাম জানান, পাইকারিতে সব ধরনের ভোজ্যতেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় তারাও বাড়তি দরে বিক্রি করছেন। তিনি আরো বলেন, কোম্পনির দাম বাড়ার কারণে আমাদের দাম বাড়াতে হয়। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলেন, মুক্তবাজার অর্থনীতিতে প্রতিযোগিতা মূল্যে দাম নির্ধারণ হয়। তবে দুঃখজনকভাবে আমাদের দেশে মাত্র কয়েকটি রিফাইনারের কাছে জিম্মি হয়ে আছে তেল ও চিনির বাজার। তারাই ইচ্ছামতো বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। এখন সরকারকেও তারা তোয়াক্কা করছে না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন