শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

এগিয়ে চলেছে বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর কাজ

জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের অপার সম্ভাবনা : উত্তরাঞ্চলবাসীর আর্শিবাদ স্বরূপ

সৈয়দ শামীম শিরাজী, সিরাজগঞ্জ থেকে : | প্রকাশের সময় : ৩০ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০২ এএম

দেশের কোটি কোটি মানুষের স্বপ্ন এখন বাস্তবে রূপ লাভ করতে চলেছে। যমুনার বুকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলেছে। করোনাকালেও থেমে নেই এই সেতুর নির্মাণ কাজ। এই রেলসেতুটি নির্মাণ হলে একদিকে যেমন উত্তরবঙ্গের যোগাযোগক্ষেত্রে নব দিগন্তের সূচনা হবে। অন্যদিকে খুলবে অপার অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দ্বার। আর্শিবাদ স্বরূপ হবে উত্তরাঞ্চলবাসীর জন্য।
জানা যায, একটি একটি করে পিলারের পাইলিং কাজ এগিয়ে চলেছে। ইতোমধ্যে ৮টি পিলারের পাইলিং কাজ শেষ হয়েছে। প্রতিনিয়তই একটু একটু করে দৃশ্যমান হচ্ছে সেতুর চিত্র। দিনরাত সমান তালে চলছে নির্মাণ কাজ।
দেশের মেগা প্রকল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু। যেটির বাস্তবায়ন এখন দৃশ্যমান। বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতুর ৩শ’ মিটার উজানে সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইলে সেতুর দু’প্রান্তেই দিনরাত চলছে সেতুর নির্মাণ কাজ। ৪.৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ ডুয়েল গেজ ডাবল ট্র্যাকসহ এ রেল সেতুর মোট ৫০টি পিলারের মধ্যে ইতোমধ্যে ৪২নং থেকে ৪৯নং পিলারের পাইলিং কাজ শেষ হয়েছে। আরও কয়েকটি পিলারের কাজ সমাপ্তের পথে। বাকিগুলোর কাজও দ্রুত এগিয়ে চলছে। জাপানের অর্থায়ন ও তাদের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ সেতু নির্মাণে কাজ করছে।
রেল সেতুটি বাস্তবায়িত হলে বিদেশ থেকে দেশে আসা মালবাহী ট্রেন রাজধানীর সাথে সরাসরি চলাচল করতে পারবে। এতে আমদানি-রফতানি খরচ কমে যাওয়াসহ বঙ্গবন্ধু সেতু ও মহাসড়কের ওপর চাপ কমবে। বর্তমানে বঙ্গবন্ধু সেতুর ওপর দিয়ে সমান্তরালভাবে গাড়ি ও রেল চলছে, যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এটি নির্মিত হলে বঙ্গবন্ধু সেতুর ঝুঁকিও হ্রাস পাবে। একই সঙ্গে উত্তরবঙ্গ থেকে পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা সহজ হবে, কমবে পণ্য পরিবহন খরচ, যা এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও সামাজিক জীবনযাত্রায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।
এই সেতু নির্মাণের ফলে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে মনে করে সচেতন মহল। রেল বিভাগের তথ্য মতে ডুয়েল গেজ ডাবল-ট্র্যাকের এ সেতুটি হবে দেশের সবচেয়ে বড় রেলসেতু। এটি রাজধানীর সঙ্গে দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগব্যবস্থা আরও সহজ ও উন্নত করবে। এছাড়া ট্রেন শিডিউল বিপর্যয় কমাতেও এ সেতু সহায়তা করবে বলেও রেল বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
বঙ্গবন্ধু সেতু ও রেল সেতুর পশ্চিমেই গড়ে উঠছে সিরাজগঞ্জ ইকোনমিক জোন ও বিসিক শিল্প পার্ক। এখানে উত্তর জনপদের ৭ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। ইতোমধ্যে এসব অঞ্চলে শিল্প কারখানা স্থাপনে আগ্রহ দেখিয়েছে দেশি বিদেশি শিল্প উদ্যাক্তোরা। বঙ্গবন্ধু রেলসেতু নির্মাণ হলে এই শিল্পাঞ্চল থেকে রেলপথ, সড়কপথ, স্থলপথ ব্যবহার করে বিশ্বের যে কোন দেশে পণ্য পরিবহন সহজ হবে। একই সাথে উত্তরবঙ্গে উৎপাদিত কৃষিপন্যসহ বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী পরিবহনও সহজ হবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীমহল। এতে এই জনপদের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের অপার সম্ভাবনা দেখছেন তারা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমান বলেন, বর্তমানে বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে ৩৮টি ট্রেন চলাচল করে। নতুন রেলসেতু নির্মিত হলে ডাবল লাইনে দ্রুত গতিতে মালবাহীসহ ৬৮টি ট্রেন চলাচল করার পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের সাথে ট্রেন চলাচলের আন্তঃসংযোগ সৃষ্টি হবে। তিনি জানান, ইতোমধ্যে এ রেল সেতুর ৩৩ শতাংশ কাজ বাস্তবায়িত হয়েছে। আমরা দ্রুত গতিতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। ২০২০ সালে ২৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৬ হাজার ৭শ’ ৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে এ সেতুটির নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেছেন। ২০২৪ সালের মধ্যে এ সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলে আশা করছেন তিনি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (5)
GM Abdul Zalil ৩০ অক্টোবর, ২০২১, ১:২১ এএম says : 0
নিশ্চয় ভালো খবর, বিশেষ করে এই রুটের মানুষদের জন্য।
Total Reply(0)
Jahidul Islam ৩০ অক্টোবর, ২০২১, ১:২২ এএম says : 0
দ্রুত কাজ শেষ করা হলে দেশের জন্য ভালো হবে।
Total Reply(0)
কায়কোবাদ মিলন ৩০ অক্টোবর, ২০২১, ১:২২ এএম says : 0
রেল সেতু আরও আগে নির্মাণ করার দরকার ছিল। যাইহোক দ্রুত নির্মাণ শেষ হলেই ভালো।
Total Reply(0)
নিজাম ৩০ অক্টোবর, ২০২১, ১:২৩ এএম says : 0
আমরা উত্তরাঞ্চলের মানুষ সরকারের কাছে কৃতজ্ঞ থাকবো।
Total Reply(0)
নিজাম ৩০ অক্টোবর, ২০২১, ১:২৩ এএম says : 0
আমরা উত্তরাঞ্চলের মানুষ সরকারের কাছে কৃতজ্ঞ থাকবো।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন