যুক্তরাজ্যের ব্যবসায়ীদের প্রতি বাংলাদেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছে এফবিসিসিআই। লন্ডনে ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিবিসিসিআই)’র সাথে নেটওয়ার্কিং বিজনেস মিটিংয়ে গত শুক্রবার এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন এই আহ্বান জানান।
বৈঠকে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যে চমৎকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। যুক্তরাজ্যে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ব্যবসা ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার মাধ্যমে বাণিজ্য ও বিনিয়োগে সক্রিয় অংশগ্রহণ করছে। তবে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য অংশীদার হওয়ার পরেও, যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের রফতানি তৈরি পোশাক, টেক্সটাইল, হিমায়িত মাছসহ অল্প কিছু পণ্যের মধ্যে আটকে আছে। এশিয়া অঞ্চলে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম সেরা বিনিয়োগ গন্তব্য বলে মন্তব্য করেন এফবিসিসিআই সভাপতি। তাই অর্থনৈতিক উন্নয়নের পরিপ্রেক্ষিতে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা আরও বাড়ানোর বিশাল সুযোগ ও সম্ভাবনা রয়েছে।
এসময় এফবিসিসিকআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিংকে উন্নত করতে এবং রফতানি বৈচিত্র্যকে সহজতর করার জন্য একত্রে কাজ করতে পারে এফবিসিসিআই ও বিবিসিসিআই। এলডিসি পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যা কার্যকর ভূমিকা রাখবে। এসময় তিনি প্রবাসীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
এফবিসিসিআই-এর সহ-সভাপতি এম এ মোমেন ব্যবসায়িক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য এফবিসিসিআই ও বিবিসিসিআই-এর মধ্যে সম্পর্ক জোরদারের ওপর গুরুত্ব দেন। বাংলাদেশের শীর্ষ বাণিজ্য সংস্থা হিসেবে বাংলাদেশের যেকোনো ব্যবসায়িক স্বার্থের সুবিধার্থে এফবিসিসিআই সব সময় পাশে থাকবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন।
একই দিনে এফবিসিসিআই সভাপতির নেতৃত্বে বাংলাদেশি ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল লন্ডন চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এলসিসিআই) সিইও রিচার্ড বার্গের সাথে বৈঠক করেন। নিয়মিত প্রতিনিধিদলের আদান-প্রদান, ব্যবসায়িক তথ্য বিনিময়, যৌথ গবেষণা, বাণিজ্য মেলা এবং নেটওয়ার্কিং ইভেন্টসহ ব্যবসায়িক প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা করতে, দুই সংগঠনের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের বিষয়ে আলোচনা হয় বৈঠকে। এর আগে গত ৪ নভেম্বর লন্ডনে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আয়োজিত বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২১: বিল্ডিং সাসটেইনেবল গ্রোথ পার্টনারশিপ-এ অংশ নেয় বাণিজ্য প্রতিনিধি দল। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যোগ দেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্মেলনে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের বাজার নিয়ে যৌথ গবেষণার জন্য এফবিসিসিআই এবং এইচএসবিসি-র মধ্যে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া এফবিসিসিআই এবং ইউকে বাংলাদেশ ক্যাটালিস্টস অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ইউকেবিসিসিআই)’র মধ্যে সমঝোতা স্মারক নবায়ন করা হয়েছে। কমনওয়েলথ এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কাউন্সিল-এর ভাইস চেয়ারম্যান স্যার হুগো সোয়ারের সাথেও সাক্ষাৎ করেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে ২৯ সদস্যের বাণিজ্য প্রতিনিধি দলে আছেন এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন) এমপি, এফবিসিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, সহ-সভাপতি এম.এ. মোমেন, মো. আমিনুল হক শামীম, মো. আমিন হেলালী, এমসিসিসিআই’র সভাপতি নিহাদ কবীর, এফবিসিসিআই’র পরিচালক মো. রেজাউল করিম রেজনু, মো. সাইফুল ইসলাম, তাবারাকুল তোসাদ্দেক হোসাইন খান টিটু, ড. কাজী এরতেজা হাসান, শমী কায়সার, সৈয়দ সাদাত আলমাস কবীর, প্রীতি চক্রবর্তী, ড. নাদিয়া বিনতে আমিন, খান আহমেদ শুভ, ড. ফেরদৌসী বেগম, এফবিসিসিআই’র সাবেক সহ-সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন, সাবেক পরিচালক প্রবীর কুমার সাহা, খন্দকার মশিউজ্জামান (রোমেল), ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ মহব্বত উল্লাহ, সামিউল হক সাফা ও বিজিএমইএ’র পরিচালক আসিফ আশরাফ।
এছাড়াও বাণিজ্য প্রতিনিধিদলে আছেন বেঙ্গল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক জেসমিন আক্তার ও সাইফুল আলম, ব্রিটিশ বিজনেস গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. মাহবুব উর রহমান, ইকোচেম বাংলাদেশ (প্রা.) লি.-এর পরিচালক মো. শহীদুল ইসলাম (নিরু), পিপলস এনার্জি লি.-এর পরিচালক সাজেদা জামান ও অর্চার্ড গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এজাজ মোহাম্মেদ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন