রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধির দাবি সংসদে : প্রধানমন্ত্রীর দিকে দৃষ্টি সবার

প্রকাশের সময় : ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আজিবুল হক পার্থ : চলমান অবস্থায় দেশের বেকারত্ব, উচ্চশিক্ষার হার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সেশনজট, সার্বিক গড় আয়ু বৃদ্ধি এবং চাকরি থেকে অবসরের সময়সীমা দুই বছর বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধির দাবি উঠেছে। বেশ কয়েক বছর ধরে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে এই দাবি তোলা হলেও তা এখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। শাহবাগে আন্দোলনের পর থেকে কয়েক দফায় সংসদে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ-সংক্রান্ত একটি বেসরকারি বিল এবং তার সংশোধনীর ব্যাপারে নয়জন এমপি দ্রুত দাবি বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন। আন্দোলনকারীদের মতো সংসদ সদস্যদেরও দৃষ্টি প্রধানমন্ত্রীর দিকে। প্রধানমন্ত্রীর সদয় দৃষ্টিতে এ দাবি বাস্তবায়ন হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।
চাকরি প্রত্যাশিতদের বয়সসীমা ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ করার দাবি রাজপথ থেকে সংসদে গড়িয়েছে। এই দাবি ক্রমেই জোরালো হচ্ছে। দশম জাতীয় সংসদের নবম অভিবেশনে একাধিক পয়েন্ট অব অর্ডারের পাশাপাশি বেসরকারি বিল হিসাবেও আনা হয়েছে দাবি। সংসদ সদস্যরা চাকরি প্রার্থীদের দাবির পেছনের বিভিন্ন দাবি সংসদে উপস্থাপন করছেন এবং জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসাবে দাবির প্রতি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
গত ৪ ফেব্রুয়ারি দশম জাতীয় সংসদের নবম অধিবেশনে চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধির জন্য একটি বেসরকারি বিল উত্থাপন করেন যশোর-৪ আসনের এমপি মনিরুল ইসলাম। সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ করা হোক Ñ এই প্রস্তাবের সাথে ৯ জন সদস্য অবিলম্বে বাস্তবায়নের কথা যোগ করতে বলেছেন এবং একজন বাস্তবায়ন ও কার্যকর করার দাবি জানিয়েছেন। গতকাল বিষয়টি নিয়ে সংসদে আলোচনা হওয়ার কথা থাকলেও স্পিকার তা স্থগিত করে রাখেন। চলতি অধিবেশনের যেকোনো দিনে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
সংসদে সদস্যরা জানান, আমরা দেশের বেকার শিক্ষিতদের জন্য কান্নাকাটি করছি। সরকারি চাকরিতে ঢোকার বয়সসীমা ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ করার দাবি জানাচ্ছি। এই  দাবি যুক্তিসঙ্গত। এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বিশিষ ক্ষেত্রে সরকারি প্রবেশের বয়সসীমা ৪০ রয়েছে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ৪০ বছর, শ্রীলঙ্কায় ৪৫ বছর, ইন্দোনেশিয়ায় ৪৫ বছর, ইতালিতে ৩৫ বছর, ফ্রান্সে ৪০ বছর, যুক্তরাষ্ট্রে ৫৯ বছর, কানাডা ও সুইডেনে ৪৭ বছর, কাতার ও নরওয়েতে ৩৫ বছর, এঙ্গোলায় ৪৫ বছর এবং তাইওয়ানে ৩৫ বছর। আমাদের দেশে ডাক্তারদের আবেদনের বয়স ৩২ বছর। নার্সদের ৩৬ বছর। অথচ সংবিধানে সকল নাগরিকের সমান অধিকারের কথা বলা হয়েছে। বিষয়টির গুরুত্ব বুঝে ২০১২ সালে ২ ফেব্রুয়ারিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে আবেদন করা হয়েছে।
এর গত মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে ঢাকা-৭ আসনের স্বতন্ত্র এমপি হাজী সেলিম এবং ১ ফ্রেব্রুয়ারি সরকারি চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে বয়সসীমা ৩০ থেকে ৩৫ করার দাবি জানিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা।
এর আগে গত ১ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদের অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা সরকারি চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে বয়সসীমা ৩০ থেকে ৩৫ করার দাবি জানান।
অবরোধকারীদের দাবি এখন সময়ের দাবি। আমার মনে হয় অবরোধকারীদের প্রতি দলমত সচেতন সব মানুষের সমর্থন রয়েছে। এ অবস্থায় এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সবার উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান। বয়সসীমা বৃদ্ধির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করে তিনি বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে ন্যূনতম বয়স ৩৫ করার দাবিতে আন্দোলন করছে। তাদের প্রতি দলমত সব সচেতন মানুষের সমর্থন রয়েছে।
এর আগে হওয়া শাহবাগের আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, রাজধানীর শাহবাগে এসব আন্দোলনকারীদের ব্যানারে বড় করে লেখা ছিল, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বয়স বাড়ান, জীবন বাঁচান। পুলিশি হস্তক্ষেপে আন্দোলনকারী নেতাদের আটক করে অবরোধ থামিয়ে দিলেও বিষয়টি অতীব গুরুত্বপূর্ণ।
জিয়াউল হক মৃধা বলেন, সেশনজট, রাজনৈতিক অস্থিরতাসহ নানা কারণে অনেক চাকরি প্রার্থীর বয়স ৩০ পেরিয়ে যায়। এ কারণে তারা সরকারি চাকরির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন। অপর দিকে অনেক প্রতিভাবান ছেলে শুধু বয়সের হেরফেরের কারণে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ পদে চাকরি থেকে বঞ্চিত হন। ফলে রাষ্ট্রও বঞ্চিত হয় তাদের সেবা থেকে। এটি জাতির জন্য দুর্ভাগ্যজনক।
তিনি বলেন, পৃথিবীর অনেক দেশেই সরকারি চাকরিতে ঢোকার বয়স অনেক বেশি হলেও আমাদের দেশে কম। এটি একটি ঔপনিবেশিক ব্যবস্থা। যার ফলে শিক্ষিত বেকারে দেশ ছেয়ে গেছে। অপর দিকে সব সরকারি দফতরে শূন্য পদের ছড়াছড়ি। আন্দোলনকারীদের প্রশ্ন Ñ চাকরিকালীন অবসরের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। অথচ চাকরিতে প্রবেশের সময়সীমা বাড়ানো হবে না কেন?
পৃথিবীর বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে তুলনা করে বাংলাদেশেও সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ থেকে ৩৫ করার দাবি জানানো হয়েছে। আর এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন হাজী মো. সেলিম।
তিনি বলেন, সর্বত্র ব্যাপকভাবে প্রচারিত  এবং বাস্তব সত্য পৃথিবীর রোল মডেল শেখ হাসিনার কাছে কিছু চাইতে হয় না। চাওয়ার আগেই তিনি দিয়ে দেন। তবুও একটি প্রবাদ আছে Ñ সন্তান না কাঁদলে মাও দুধ দেয় না।
সেলিম বলেন, বর্তমানে সেশনজটসহ বিভিন্ন কারণে চাকরির আবেদনের বয়স শেষ হয়ে যায়। ২০০৮ সালে শুধু মাস্টার্স ডিগ্রিতে সেশনজট ছিল দুই বছরের বেশি। ২০০৯ ও ২০১০ সালে তিন বছরের বেশি। তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে সংসদে মুলতবি প্রস্তাাবসহ বিভিন্ন সময় আলোচনা হয়েছে। সংবাদ মাধ্যমে খবর এসেছে। আমার দাবি মেনে নিলে আমরাও ধন্য হই। বয়সসীমা অন্যান্য দেশের সঙ্গে মিলিয়ে ৩৫ করা হলে সরকারি চাকরি প্রত্যাশীরা উপকৃত হবেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (16)
Md.Mohsin khan ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১:১১ পিএম says : 0
A decade ago the entry age limit was 27. then increased to 30 . but many educated and briliants are not getting jobs for want of posts. in some case there are posts but authorities are not interested to fillup the posts. so unemploment is the wrting on their fate. Try to fill up the existing posts and help them first .
Total Reply(0)
মো:নাজমুল হক ২৭ নভেম্বর, ২০১৬, ১:৩৭ এএম says : 0
ভাবছি, ৩০ বছর পার হলে(১মাস পর) দেশের ভালো কাজে যোগ দিতে না পারলে খারাপ কাজে যোগ দিবো!!!!!
Total Reply(0)
forhad ১১ অক্টোবর, ২০১৭, ৫:৪৬ পিএম says : 0
যা করবেন তারাতারি করেন অযথা সময় নষ্ট করবেন্না
Total Reply(0)
আল-আমিন ৩ জানুয়ারি, ২০১৮, ৪:৫৪ পিএম says : 0
বর্তমান সরকার ঘরেঘরে চাকরি দেবার অঙ্গিগার করেছিল।সেটা ঘটেনি। চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ালে তাদের অঙ্গিকারের কিছুটা পূরন হবে বলে মনে করি। বয়স বাড়ালে সরকারের কি ক্ষতি হবে সেটা বোধগম্য নয়। তবে বয়স না বাড়ালে লক্ষ লক্ষ যুবকের স্বপ্নের অপমৃত্যু ঘটবে এটা তাদের বুঝতে হবে।
Total Reply(0)
মোঃ সলায়মান ১১ জানুয়ারি, ২০১৮, ৫:৩৬ পিএম says : 0
বর্তমানে লক্ষ লক্ষ মেধাবী বেকার লেখাপরা শেষ করতে না করতে বয়স শেষ হয়ে গেছে। অনেক ছাত্র ছাত্রী আছে তারা পরাশুনা শেষ করে চাকরী করার পরিকল্পনা করে। কিন্তু তারে দুর্ভাগ্য যে তারা পরাশুনা শেষ করার সাথে সাথে চাকরীর সপ্ন বিলিন হয়ে যায় পরে তাদের বেকার জীবন কাটাতে হয়। অথচ যদি চাকরীতে প্রবেশের বয়স ৫ বছর বৃদ্ধি করা হয় তাতে কারো কোন ক্ষতি হবে না বং মেধাবী ছাত্রদের কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা হবে। সোনার বাংলাদেশ গড়ার সপ্ন বাস্থব হবে।
Total Reply(0)
Jamal Hossain ১৮ জানুয়ারি, ২০১৮, ১১:৫৫ এএম says : 0
চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করা আবশ্যক। ছাত্র/ছাত্রীদের অনেক স্বপ্ন থাকে যে মাস্টার্স পড়াশোনা শেষ করে ভাল চাকরি করবে, মা-বাবাকে সেবা-যত্ন করবে, ভাল সংসার গড়বে। এসব স্বপ্ন তাদের জন্য ভালো এবং আমাদের দেশের জন্য অনেক ভাল। কিন্তু সে স্বপ্ন যদি বয়সের কারণে ভেঙ্গে যায় তাহলে তার আর বেচে থাকার শখ থাকে না, আত্মহত্যা করতে চায়। তার জীবনে নেমে আসে অন্ধকার পাশাপাশি পুরো জাতি এবং দেশের উপর বোঝা নেমে আসে। বয়সের কারণে এদেশ অনেক মেধাবীকে হারাচ্ছে। সরকার এসব মেধাবীকে ঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারলে আমাদের দেশ অনেক অনেক উন্নত হয়ে যাবে। সরকারের উচিত ছাত্র/ছাত্রীদের সুযোগ করে দেওয়া যেন তারা তাদের মেধাকে অন্যায় কাজে ব্যবহার না করে এদেশের ভাল ও উন্নতির দিকে ব্যবহার করতে পারে।
Total Reply(0)
সানাউল্লাহ ৩০ জানুয়ারি, ২০১৮, ৭:৩৭ পিএম says : 2
বয়স বাড়িয়েই কি হবে বলুন সরকারি চাকরি মানেই নিম্নে ৭ থেকে ১০ লাখ টাকা কোথায় পাই বলুন?
Total Reply(0)
sohel ১৭ মার্চ, ২০১৮, ১২:১১ এএম says : 1
কোটামুক্ত ৩৫ বছর চাই।উন্নত বিশ্বে ৫৫,৬০ বছর হলে আমাদের দেশে তাদের সাথে তাল মিলিয়ে কেন ৩৫ হবে না?মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ৩৫ করে দিন
Total Reply(0)
মোঃ মাহমুদুল হাসান ৬ জুলাই, ২০১৮, ১২:১৯ পিএম says : 0
বয়স বারানো দরকার। কারন আমরা জখুন পরাশনা সেশ করি তখুন আমাদের বয়স প্রায় শেস হয়ে যায়। চাকরির পরাশনা করার সময় আমরা পাই না। মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন সরকারী চাকরীর বয়স ৩৫ বছর করুন আর আমাদের জিবন বাচান।
Total Reply(0)
বিপ্লব কুমার দাস ১০ জুলাই, ২০১৮, ৭:২৬ পিএম says : 1
দয়া করে একবার ভাবুন
Total Reply(0)
md.abdulla al mamun ২৩ জুলাই, ২০১৮, ৫:৫১ পিএম says : 0
জননেএী শেখ হাসিনার এমন একটি সহানুভূতি কোটি বেকার যুবকের মনের গহীনে মজবুতভাবে যায়গা করে নিতে পারে।
Total Reply(0)
md.abdulla al mamun ২৪ জুলাই, ২০১৮, ১:১৮ এএম says : 0
জননেএী শেখ হাসিনার এই একটি সহানুভূতি কোটি যুবকের মনের গহীনে আওয়ামিলীগ চির জায়গা করে নিতে পারে।
Total Reply(0)
AbdulMalek ৩১ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:১৩ এএম says : 0
PrimeMinisterএর কাছে আমি একান্তভাবে বলতে চাই আপনি সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স টা ৩৫ করে দেন আমি আমার কথা বলি ২০০৯ তে আমি অনার্সে ভর্ি হয়েছি অথচ ২০১৭ সালে শেষ হয় তা আপনি বলেন কি ভাবে আমরা সরকারি চাকরির জন্য আবেদন করবো
Total Reply(0)
জাকির হোসেন ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:৫০ এএম says : 0
সরকারি চাকরির বয়স বৃদ্ধি করা হউক।
Total Reply(0)
জাকির হোসেন ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:০৪ এএম says : 0
সরকারি চাকরির বয়স বৃদ্ধি করা হউক।
Total Reply(0)
রাবেয়া ২৭ অক্টোবর, ২০২০, ৭:০৯ এএম says : 0
primminister আপনি যদি দ্রুত চাকরির বয়সটা বাড়াতেন তাহলেতো primary তে আবেদন করার সুযোগ পেতাম।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন