আটটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার। ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৫০ কোটি ১৭ লাখ ৬৩ হাজার ৬৯৩ টাকা। এদিকে রাজউকের আওতায় রাজধানীর শান্তিনগর থেকে ঢাকা-মাওয়া রোড (ঝিলমিল) পর্যন্ত ফ্লাইওভার নির্মাণ প্রকল্পটি তালিকা থেকে বাতিলের প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
গতকাল বুধবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এসব ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক সরকারি ফান্ড থেকে ১৬৭ কোটি ৭৯ লাখ ৫৪ হাজার ৯০০ টাকা এবং দেশীয় ব্যাংক, বিশ্বব্যাংক, এডিবি ও সউদী উন্নয়ন তহবিল ৯৮২ কোটি ৩৮ লাখ ৮ হাজার ৭৯৩ টাকা এসব প্রকল্পে অর্থায়ন করা হবে।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সামসুল আরেফিন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, গণপূর্ত অধিদফতর বাস্তবায়নাধীন নরসিংদী জেলা কারাগার নির্মাণ প্রকল্পের একটি লটের নির্মাণকাজ বিশ্বাস ট্রেডিং অ্যান্ড কনসোটিয়ার লিমিটেডকে ৬০ কোটি ৪ লাখ ১৫ হাজার ১৮৪ টাকায় দেওয়া হয়েছে। সড়ক ও জনপথ অধিদফতর বাস্তবায়নাধীন নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু নির্মাণ প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে যৌথভাবে বাংলাদেশের এসএআরএম অ্যাসোসিয়েটস লিমিটেড, পাকিস্তানের উমর মুন্সি অ্যাসোসিয়েটস এবং সউদী আরবের আল মুহানদিস এনকে কনসালটিং ইঞ্জিনিয়ার্সকে ৩ কোটি ৬৫ লাখ ৪০ হাজার ৭১৬ টাকা ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে ক্রয় কমিটি।
অতিরিক্ত সচিব বলেন, খুলনা ওয়াসা বাস্তবায়নাধীন খুলনা পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে যৌথভাবে নিয়োগ পেয়েছে কোরিয়ার দোহা ইঞ্জিনিয়ারিং এবং বাংলাদেশের ডেভ কনসালটেন্ট লিমিটেড, ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিং ও বিইটিএস কনসালটিং সার্ভিস লিমিটেড। পরামর্শক কাজের জন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর পেছনে ব্যয় হবে ৭১ কোটি ৩৮ লাখ ৪০ হাজার ৬৫২ টাকা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে নরসিংদীর ঘোড়াশাল চতুর্থ ইউনিট রি-পাওয়ার্ড কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সরঞ্জাম সুইজারল্যাল্ডের জেনারেল ইলেকট্রিক গ্লোবাল পার্টাস অ্যান্ড প্রোডাক্টের কাছ থেকে কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৩০১ কোটি ৯৮ লাখ ৯৭ হাজার ৬০০ টাকা। এ ছাড়া নৌপরিবহন অধিদফতরকে এজিআইএমএনএস প্রকল্পে ১০৪ কোটি ৯ লাখ ৯৯ হাজার টাকা ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে ক্রয় কমিটি। তিনি বলেন, বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনকে (বিসিআইসি) ৬০৫ কোটি ২৫ লাখ ২৯ হাজার ৮২৫ টাকায় ৯০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার (অপশনাল) ইউরিয়া সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে।
সামসুল আরেফিন বলেন, সউদী আরবের বেসিক ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরশেন থেকে ২০৬ কোটি ৩১ লাখ ৪৫ হাজার টাকায় ৩০ হাজার টন, ২০০ কোটি ৩১ লাখ ২৮ হাজার ৫৭৫ টাকায় ৩০ হাজার টন এবং কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেডের কাছ থেকে ১৯৮ কোটি ৭২ লাখ ৫৬ হাজার ২৫০ টাকায় আরও ৩০ হাজার টন ইউরিয়া সার আমদানি করবে বিসিআইসি।
অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরকে রামপুরা-আমুলিয়া-ডেমরা মহাসড়ক চার লেইনে উন্নীতকরণ প্রকল্পটি পিপিপি ভিত্তিতে বাস্তবায়নে প্রকল্পে বিনিয়োগকারী হিসেবে যৌথভাবে চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড এবং চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ করপোরেশনকে নিয়োগের প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া রাজউকের আওতায় শান্তিনগর থেকে ঢাকা-মাওয়া রোড (ঝিলমিল) পর্যন্ত ফ্লাইওভার নির্মাণ প্রকল্পটি পিপিপি তালিকা থেকে বাতিলের প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, যে প্রকল্পটি আনা হয়েছিল সেটি তারাই প্রত্যাহার করে নিয়েছে। কারণ ১৫ বছর আগে যখন প্রকল্পটি নিয়ে কাজ শুরু হয় সেসময় যে প্রেক্ষাপট নিয়ে প্রকল্পটি তৈরি করা হয়েছিল সেটি এখন বিদ্যমান নয়। আমরা রাস্তা অনেক সোজা করে দিয়েছি। আরও কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। ফলে এর ভলিয়ম কমে গেছে। তাই যেভাবে প্রকল্প হওয়ার কথা ছিল সেভাবে হয়নি। তাহলে কি দেশে আর ফ্লাইওভার নির্মাণ হবে না? এ প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, আদৌ হবে না কেন? ফরমালওয়েতে কম্পোনেন্টগুলো বিবেচনায় নিয়ে রিভাইজড যে প্রকল্প দাঁড়াবে সেটি সরকার বাস্তবায়ন করতে পারে। আমরা অবশ্য পাবলিক প্রাইভেট পাটর্নারশীপে গুরুত্ব দিয়ে আসছিলাম।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন