হেমন্তের মধ্যভাগেই শীতের উপস্থিতি টের পাচ্ছেন ঠাকুরগাঁওবাসী। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলেই শুরু হয়ে যায় উত্তরের কনকনে বাতাস। সন্ধ্যার পর থেকে হালকা শীত এবং গভীর রাতে কুয়াশা। সব মিলিয়ে প্রকৃতির রূপ পরিবর্তনের সাথে সাথে শীত ঋতু নিবারনের বিশেষ কারিগরদের ব্যস্ততা বেড়ে গেছে।
শীত নিবারণের উপকরণ লেপ-তোষকের কারিগরদের বিরতিহীন কাজ শুরু হয়ে গেছে। হেমন্ত ঋতুর আগেই অনেকে লেপ-তোষক তৈরির অর্ডার দিয়ে রেখেছেন। আবার কেউ কেউ পুরনো লেপ-তোষক দোকানে দিয়েছেন নতুন করে তৈরি করতে। সব মিলিয়ে ঠাকুরগাঁও শহর ছাড়িয়ে উপজেলা পর্যায়ে কারিগরদের এই ব্যস্বতা চলবে শীত বিদায় না নেওয়া পর্যন্ত।
স্থানীয়রা বলছেন, ঠাকুরগাঁও থেকে হিমালয় তো বেশি দূরে নয়। উত্তরের শেষ জেলা পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁওয়ে প্রায় একই সময়ে শীতের আগমন ঘটে। তবে অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার কিছুটা আগেই শীত দরজায় কড়া নাড়তে শুরু করেছে। অনেকেই বলেছেন, শীত জেকে বসার আগেই প্রস্তুতি না নিলে ভীষণ দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বর্তমানে অনেকে হালকা শীত নিবারণে কাঁথা ও কম্বল ব্যবহার শুরু করেছেন।
জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত লেপ-তোষকের দোকান খোলা থাকে। শহরের গোধুলী বাজার, কালিবাড়ী, টেকনিক্যাল কলেজ মোড়, বাসস্ট্যান্ড, ঠাকুরগাঁও রোডসহ বিভিন্ন জায়গার সামনে লেপ-তোষক বানাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। কারিগরদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিনই তারা নতুন লেপ তৈরির অর্ডার পাচ্ছেন।
আর পুরনো লেপ খুলে নতুন করে বানাতে লোকজন প্রতিদিনই দোকানে আসেন। আকার অনুযায়ী প্রতিটি লেপের জন্য কারিগররা পান ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। আর সেলাইকর্মীরাও একই নিয়মে মজুরি নিয়ে থাকেন। দিন শেষে জনপ্রতি ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা রোজগার হয়।
লেপ-তোষকের দোকানের সামনে শহরের ঘোষপাড়ার গৃহিনী সানজিদা জানান, দিনে গরম থাকলেও রাতে অনেক শীত। তাই তিনি আগেভাগেই লেপ বানাতে এসেছেন। আগে আসার কারন হিসেবে তিনি জানান শীত যতই বাড়বে এসব দোকানে ভিড় ততই বাড়বে। ভিড় এড়াতে ওই গৃহিনীর মতো অনেকে আগাম প্রস্তুতি নেয়া শুরু করেছেন।
শহরের কালিবাড়ী বাজারের লেপ-তোষক ব্যবসায়ী আশির জানান, হালকা শীতের আমেজে লোকজন শীতবস্ত্রের প্রতি ঝুঁঁকছেন। প্রতিদিন ডজনের কাছাকাছি লেপ-তোষকের অর্ডার আসছে। শীত যতই বাড়বে অর্ডার ততই বাড়তে থাকবে। একই এলাকার তুলা ব্যবসায়ী মিন্টু ইসলাম জানান, তুলা ও কাপড়ের দাম বেড়েছে। এতে করে গত বছরের তুলনায় চলতি বছর লেপ-তোষক বানাতে খরচ কিছুটা বেশি হবে।
তিনি জানান, শিমুল তুলা প্রতি কেজি ৫৫০ থেকে ৬৫০ টাকা, কার্পাস তুলা ১৫০ থেকে ২০০ টাকা, গার্মেন্টস তৈরি কালো হুলু কালা পচা তুলা ২০ থেকে ৩০ টাকা, সাদা তুলা ৮০ থেকে ১০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। এছাড়াও কাপড়ের মান অনুযায়ী প্রতি গজ ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। সব মিলিয়ে ভালো মানের একটি লেপ বানাতে খরচ হবে এক হাজার থেকে দুই হাজার টাকার মতো। একই মানের একটি তোষকেও খরচ আসে আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার টাকা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন