শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বিপর্যয়ে ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্প

ঝরে পড়ছেন হাজারো উদ্যোক্তা : ঋণ দিতে অনীহা ব্যাংকারদের ঘুষ ছাড়া প্রণোদনা প্যাকেজের টাকা মেলে না ষ ৬৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠান কোনো টাকাই পায়নি ষ পাবনা-সিরাজগঞ্জেই ৪ লাখ তাঁত বন্ধ হয়ে গেছ

হাসান সোহেল/মো. জাহিদুল ইসলাম | প্রকাশের সময় : ২৩ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০৫ এএম

করোনা-পরবর্তী সময়ে কর্মজীবী মানুষ যখন মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে; তখন কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধি, ব্যাংক ঋণ জটিলতাসহ নানান কারণে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে অনেক ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প। ফলে নতুন করে আশায় বুক বাঁধলেও কর্মস্থলে যোগদান করতে পারছেন না অনেক পেশাজীবী। বাংলাদেশ হ্যান্ডলুম অ্যান্ড পাওয়ারলুম মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মো. হায়দায় আলী জানিয়েছেন, দেশের অন্যতম বৃহত্তম তাঁত সমৃদ্ধ এলাকা পাবনা ও সিরাজগঞ্জের ৬ লাখ তাঁতের মধ্যে এখন প্রায় ৪ লাখ তাঁতই বন্ধ হয়ে গেছে। কুষ্টিয়া, জামালপুর, নরসিংদী, টাঙ্গাইলসহ অনেক জেলায় তাঁতশিল্পের একই চিত্র। শুধু তাঁত নয়; দেশের অন্যান্য ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ফলে কাজ হারাচ্ছেন বিভিন্ন বিভিন্ন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে কর্মরত শ্রমিকরা। ভুক্তভোগীদের মতে কাঁচামালসহ প্রতিটি পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি এবং ঋণ সহায়তা ও আর্থিক প্রণোদনা না পাওয়ায় এই শিল্পগুলো বিপর্যয়ের মুখে পড়ে গেছে। মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতের (এসএমই) অবদান ২৫ শতাংশ। দেশের কর্মসংস্থানের ৯০ শতাংশই এ খাতের অবদান হলেও দফায় দফায় করোনার আঘাত সামলে বিপর্যয়ে এ খাতের উদ্যোক্তারা। ঋণ করে গত দেড় বছর চললেও করোনায় ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের স্বপ্নভঙ্গ হয়ে গেছে। গত কয়েক মাস করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে দেশের রফতানি আয় ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে। যার নেতিপ্রভাব পড়েছে দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের ব্যবসাতেও। উদ্যোক্তারা বলছেন, করোনার ক্ষতি কাটিয়ে আবারও চাঙা হচ্ছে ব্যবসা। কিন্তু তারা আছেন নানান অসুবিধায়। কাঁচামালের চড়া দাম ও পরিবহন খরচ বেড়েছে। আর তাই করোনা-পরবর্তী সময়ে বাণিজ্যিক সুবিধা কাজে লাগাতে দরকার তৈরি পোশাক খাতের মতই নানামুখী বাণিজ্য সহায়তা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগামী দিনে দেশকে উন্নত করতে হলে এসএমই’র বিকল্প নেই। সামগ্রিক মূল্যায়নে এ খাতই অর্থনীতির প্রাণ। কিন্তু এ খাতের উদ্যোক্তাদের দুঃখের যেন শেষ নেই। বৈশ্বিক মহামারি করোনায় অর্থনীতি গতিশীল রাখতে সরকার প্রণোদনা ঘোষণা করলেও বঞ্চিতদের তালিকায় রয়ে গেছেন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা।

খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, বড়রা যে করেই হোক টিকে থাকার চেষ্টায় কারখানা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে ছোট অনেক প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। আবার ঋণ নেয়ার আগেই তা পরিশোধ নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন থাকেন তারা। যদিও বড় গ্রাহকের অনেকের মধ্যে সে তুলনায় উদ্বেগ কম। কারণ বাংলাদেশে এ যাবৎ বিশেষ ছাড়ে ঋণ পুনর্গঠন ও পুনঃতফসিলের সুবিধাভোগীই বড় গ্রাহক। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের সংগঠন নাসিবের সভাপতি মির্জা নূরুল গণি শোভন বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতে আমাদের ১০ হাজারের বেশি উদ্যোক্তা রয়েছে। এর মধ্যে তিন হাজারের বেশি উদ্যোক্তা তাদের ব্যবসা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে। অন্যরাও ভালো নেই। ক্রমাগত লোকসানে আছে। এসব উদ্যোক্তার এখনই আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন। না হলে এদের ব্যবসাও বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবে। প্রধানমন্ত্রীর প্রণোদনা প্যাকেজের অর্থঋণ হিসেবে সরবরাহ করা সম্ভব হলে তারা আর্থিক সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে পারবে।

অন্যদিকে বরাবরের মতো ব্যাংকারদের মধ্যেও ক্ষুদ্র গ্রাহকদের ঋণ দিতে অনীহা রয়েছে। এসএমই উদ্যোক্তাদের অনেকে ব্যাংকে গিয়ে ঋণ পাননি, এমন অভিযোগ রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছেও। যদিও ব্যাংকারদের অনেকে ব্যাখ্যা দিচ্ছেনÑ উপযুক্ত গ্রাহক না পাওয়ায় তারা ঋণ দিতে পারছেন না। কিন্তু বাস্তব ঘটনা পুরো উল্টো। মাসের পর মাস ব্যাংকের দরজায় ঘুরেও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের অনেকে ঋণের আশ্বাসটুকুও পাচ্ছেন না। রংপুর ক্র্যাফটের মালিক স্বপ্না সেন ঋণ পেতে বেসরকারি প্রাইম ব্যাংকে গিয়েছিলেন। ব্যাংকটি রাজি থাকলেও মাসখানেক ঘোরানোর পর আর ঋণ দেয়নি। ব্যাংকটি ৯ শতাংশ সুদে ঋণ নেওয়ার প্রস্তাব দিলে স্বপ্না সেন চলে যান সাউথইস্ট ব্যাংকে। সেখান থেকে কম সুদে ১৫ লাখ টাকা ঋণ পায় রংপুর ক্র্যাফট। স্বপ্না সেন বলেন, আমি ব্যবসা ছেড়ে ব্যাংকে গিয়ে দিনের পর দিন বসে থেকেছি। যেদিন টাকা দেবে, সেদিন দুটো চেকের পাতা নিয়ে যাই। শাখা ব্যবস্থাপক বললেন, টাকা শেষ হয়ে গেছে। এই যে হয়রানির মধ্যে পড়লাম, ঋণ দেয়ার আশ্বাস দিয়েও ব্যাংকটি দিলো না, এর বিচার কে করবে?

এছাড়া আরও অনেক ছোট উদ্যোক্তা রয়েছেন যাদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় ব্যাংকে গিয়েও ফিরে আসতে হচ্ছে হতাশ হয়ে। বিশেষ করে অপ্রাতিষ্ঠানিক ছোট উদ্যোক্তারা ঋণ সুবিধা পাচ্ছেন না। অথচ এসব উদ্যোক্তার সংখ্যাও কম নয়। কারণ করোনাকালে অনলাইনে পণ্য বিপণনে অসংখ্য উদ্যোক্তা গড়ে উঠেছে, যাদের কাছে ট্রেড লাইসেন্সসহ যাবতীয় কাগজপত্র নেই। এসব ব্যবসায়ী ঋণ সুবিধার অভাবে পুঁজি হারিয়ে অল্প সময়ে ঝরে পড়ছেন।

এদিকে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকায় কিছুটা গতিশীল হয়েছে দেশের অর্থনীতি। তবে নতুন করে কাঁচামালের চড়া দাম ও পরিবহন খরচ বাড়ায় বিপাকে আছেন ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা। বিএজির ম্যানেজিং পার্টনার আমিরুল ইসলাম বলেন, আমাদের মতো ছোট উদ্যোক্তাদের ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়া খুবই কঠিন। এক বছর বা দেড় বছরের জন্য অর্থ দিয়ে আমার মনে হয় না আমরা খুব ভালো কিছু করতে পারব। আমাদের কমপক্ষে চার থেকে পাঁচ বছরের একটা অর্থ পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করা উচিত। তিনি বলেন, সময়মতো ইন হাউস করা এবং সময়মতো ডেলিভারী দেয়া ছাড়াও পণ্যের যথাযথ দামই নির্ধারণ করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

উদ্যোক্তারা বলছেন, করোনা-পরবর্তী নতুন সম্ভবনায় এখন বড় বাঁধা আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের চড়া দাম ও কন্টেইনারের বাড়তি ভাড়া। এ অবস্থায় বাণিজ্যিক সম্ভাবনা কাজে লাগাতে তৈরি পোশাক খাতের মতোই বিভিন্ন ব্যবসায়িক সুবিধা চান ক্ষুদ্র-মাঝারি খাতের উদ্যোক্তারা। আমিরুল ইসলাম বলেন, একই দেশে ব্যবসা করছি, অথচ লেদার পণ্যের জন্য একধরনের নীতি আর টেক্সটাইল পণ্যের জন্য আরেক ধরনের নীতি। এই বিষয়েগুলোতে সমন্বয় দরকার বলে মনে করেন তিনি।

করোনার কারণে এসএমই খাতের নারী উদ্যোক্তারা বেশি সংকটে পড়েছেনÑ এমন দাবি জানিয়ে নারী উদ্যোক্তাদের সংগঠন ওয়েবের প্রতিষ্ঠাতা সভানেত্রী নাসরিন আউয়াল বলেছেন, করোনা শুরু হওয়ার পর থেকে পহেলা বৈশাখ, চারটি ঈদসহ কোনো পালা-পার্বণে এসএমই উদ্যোক্তারা ব্যবসা করতে পারেনি। কখনো লকডাউন থেকেছে। কখনো গণপরিবহন বন্ধ থেকেছে। পণ্য বানিয়ে বিক্রি করতে পারেনি। কাঁচামাল সংগ্রহ করা যায়নি। করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত এসএমই নারী উদ্যোক্তাদের কাছে সরকারের দেয়া অর্থ অচিরেই পৌঁছে দেওয়া প্রয়োজন। এতে তারা লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারবে। এরই মধ্যে আর্থিক সংকটে অনেক এসএমই নারী উদ্যোক্তার ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে।

করোনায় টানা লোকসানের মুখে গত বছর পুঁজি হারিয়ে অর্ধকোটিরও বেশি ক্ষুদ্র ও অতিক্ষুদ্র ব্যবসায়ী পুঁজি হারিয়ে ব্যবসা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানান বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন। তিনি ইনকিলাবকে বলেন, এ বছরও একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। অনেকেই ব্যবসা হারানোর পথে রয়েছেন। এদের সিংহভাগেরই ব্যবসার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নেই। অনেকের ব্যাংক হিসাবই নেই। সুতরাং এরা ব্যাংক ঋণ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। অন্যদিকে যাদের কাগজপত্র রয়েছে তারাও হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) ‘কোভিড-১৯ এবং বাংলাদেশে ব্যবসায় আস্থা’ শীর্ষক জরিপে উঠে এসেছে, করোনা সঙ্কট কাটিয়ে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের জন্য সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের টাকা পায়নি ৭৯ শতাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। তাদের মধ্যে ৬৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠান কোনো টাকাই পায়নি। ১৪ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের মালিক প্রণোদনা প্যাকেজ সম্পর্কে জানেই না। বাকি ২১ শতাংশের মতো প্রতিষ্ঠান প্রণোদনার অর্থ পেয়েছে। বড়দের তুলনায় ছোট প্রতিষ্ঠান প্রণোদনা প্যাকেজের টাকা কম পাচ্ছে।

জরিপের তথ্য বিশ্লেষণ করে সানেম বলেছে, প্রণোদনা প্যাকেজের টাকা দিতে কারও কারও কাছে ঘুষও চাওয়া হয়েছে। জরিপে অংশ নেয়া ২৯ শতাংশ ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, তাদের কাছে ঘুষ চাওয়া হয়েছে।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের এ সমস্যা পৃথিবীজুড়েই। এসএমই একটি বড় বাজার। কিন্তু সেখানে ঝুঁকিও বেশি। এ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় প্রস্তুতি দরকার। যেটি আমাদের অনেকাংশেই নেই। তবে কোনো কোনো ব্যাংক এ ক্ষেত্রে ভালো করছে। ফলে অনেকেই বঞ্চিত হচ্ছে। এ ছাড়া সরকার সুদের হার বেঁধে দেয়ায় এক ধরনের সঙ্কট তৈরি হয়েছে। ঝুঁকি যেখানে বেশি সেখানে রিটার্ন বেশি দরকার। সেটি সরকার বিবেচনায় নিতে পারে।

সানেমের নির্বাহী পরিচালক প্রফেসর সেলিম রায়হান বলেন, গত দেড় বছরে করোনা মহামারি ও লকডাউনসহ বিভিন্ন ঘাত-প্রতিঘাতের মাঝে কোভিড পরিস্থিতির একটি প্যাটার্ন লক্ষ্য করা যায়। সে ক্ষেত্রে এই প্যাটার্নকে মাথায় রেখে এলাকা ও খাতভিত্তিক প্রোটোকল গ্রহণ করা জরুরি। বিভিন্ন প্রোটোকল বাস্তবায়নে প্রশাসননির্ভর সিদ্ধান্ত না নিয়ে সব স্টেকহোল্ডার, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, শ্রমিক ইউনিয়ন ও জনগণকে সঙ্গে নিয়ে করোনা পরিস্থিতি ও লকডাউনের মাঝেই কীভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবসা পরিচালনা করা যায় সেটি দেখতে হবে।

এ বিষয়ে এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন প্রফেসর ড. মো. মাসুদুর রহমান ইনকিলাবকে বলেন, গত ১০ বছরে দেশের অর্থনীতির সম্প্রসারণ হয়েছে। এর ফলে এসএমই উদ্যোক্তাদের সংখ্যা প্রচুর পরিমাণে বেড়েছে। এই এসএমই প্রতিষ্ঠানগুলো; কিন্তু করোকালীন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেটা সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন জরিপেও উঠে এসেছে। তিনি বলেন, এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে চালানো এবং সামনে এগিয়ে নেয়ার জন্য বিভিন্ন রকমের সহায়তা দরকার, তার একটা অংশ হচ্ছে আর্থিক সহযোগিতা এবং এটা যদি আমরা সংখ্যার দিক দিয়ে বিবেচনা করি, তাহলে আমরা বলতে পারব, যে পরিমাণ টাকা প্রণোদনা হিসেবে দেয়া হয়েছেÑ সেটা কিন্তু আমাদের চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত নয়। তবে এখন ব্যাংকগুলোতে যে পরিমাণ তারল্য আছে, তাতে বাজারে যে চাহিদা আছে তা পূরণ করা সম্ভব মনে করেন তিনি।

এসএমই খাতের প্রতিষ্ঠানে ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংকের অনীহার বিষয়টি উল্লেখ করে ড. মো. মাসুদুর রহমান বলেন, আমাদের ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানগুলোর এসএমই খাতে লোন দেয়ার ক্ষেত্রে তাদের কিছুটা ধীরগতি আছে, এটা আমরা স্বীকার করছি। এই ধীরগতি থাকার পেছনে অনেকগুলো কারণ আছে। এরা বড় বড় ঋণ দিতে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছে। এসএমই খাতের লোন প্রদান করা এবং সেই ব্যবসা পরিচালনা করা বড় লোন দেয়ার চেয়ে একটু অন্যরকম। আমাদের আর্থিক খাতের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানগুলো এখনো সেভাবে অভ্যস্ত নয়। ফলে এসএমই প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে লোন দিতে চায় না। পাশাপাশি তাদের অভিযোগ, বেশিরভাগ এসএমই প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স নেই, ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন নেই, অ্যাকউন্ট রক্ষণাবেক্ষণের কোনো তথ্য তাদের কাছে থাকে না। সুতরাং ব্যাংক যখন ঋণ দেবে, তখন বেশ কিছু শর্ত দেয়, যা আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো পূরণ করতে পারছে না। তারপরও আমরা ব্যাংকগুলোকে অনুরোধ জানাচ্ছি, করোনার দুরবস্থার কথা বিবেচনা করে তারা যেন যতবেশি সম্ভব আমাদের উদ্যোক্তাদের ঋণ দেয়ার প্রবাহকে সহজতর করে।

এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মোহাম্মদ মফিজুর রহমান বলেন, ৩৪ শতাংশ আমাদের ছোট উদ্যোক্তার ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে। ৯৭ শতাংশ উদ্যোক্তা কোনো না কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। তাদের আরও সহজ শর্তে বেশি বেশি করে প্যাকেজ দিতে হবে। পাশাপাশি ঋণের মাধ্যমে আমাদের অভ্যন্তরীণ মার্কেটটা যদি আমরা সচল রাখতে পারি, তাহলে এমএমই মার্কেট এবং অর্থনীতি দু’টোই বেঁচে থাকবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (7)
মোঃ কামরুজ্জামান ২২ নভেম্বর, ২০২১, ১২:৪২ এএম says : 0
মহান আল্লাহ আমাদের সহায় হোন। বহু মানুষ আজ নিশ্বের পতে।
Total Reply(0)
সুশান্ত কুমার্ ২২ নভেম্বর, ২০২১, ১২:৪২ এএম says : 0
করোনায় বহু মাঝারি শিল্প বন্ধ হয়ে গেছে, তাদের জন্য কিছু করার দরকার
Total Reply(0)
মোহাম্মদ রমিজ ২২ নভেম্বর, ২০২১, ১২:৪৩ এএম says : 0
এই শিল্পকে বাচাতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হ্স্তক্ষেপ কামনা করছি।
Total Reply(0)
বিধান কবিরাজ ২২ নভেম্বর, ২০২১, ১২:৪৪ এএম says : 0
মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্পীদের ঋণ সহায়তা দেওয়া হোক।
Total Reply(0)
হুসাইন আহমেদ হেলাল ২২ নভেম্বর, ২০২১, ১২:৪৫ এএম says : 0
আমি সরকারের কাছে দাবি জানাবো, শিল্পগুলোর জন্য কিছু করা হোক।
Total Reply(0)
নিলিমা জাহান তনুশ্রী ২২ নভেম্বর, ২০২১, ১২:৪৫ এএম says : 0
করোনা এসে মানুষের জীবনকে এলোমেলো করে দিয়েছে।
Total Reply(0)
রুদ্র মোহাম্মদ শাকিল ২২ নভেম্বর, ২০২১, ১২:৪৬ এএম says : 0
প্রধানমন্ত্রীই পারেন এই বিপর্যয় ঠেকাতে।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন