আরিচা-কাজিরহাট এবং পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটের ফেরি সার্ভিসে এমনিতেই নানা ধরনের সমস্যার কারণে যাত্রী এবং যানবাহন শ্রমিকদের ভোগান্তি অব্যাহত রয়েছে। এর মধ্যে গতকাল বুধবার থেকে নতুন করে যোগ হলো ঘণকুয়াশা। এ যেন মড়ার পর খড়ার ঘা।
বিআইডব্লিউটিসির আরিচা আঞ্চলিক কার্যালয় সুত্রে জানা যায়, মধ্যরাত থেকেই নদীতে কুয়াশা পড়তে থাকে। ভোরের দিকে কুয়াশার তীব্রতা বেড়ে গেলে দুর্ঘটনা এড়াতে কর্তৃপক্ষ ভোর সাড়ে ৫টা থেকে সাড়ে সাড়ে ৮টা পর্যন্ত আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে ফেরি চলচল বন্ধ রাখে।
এসময় যাত্রী ও যানবাহন বোঝাই করে ফেরি কপোতি আরিচা থেকে কাজিরহাট যাওয়ার পথে ঘণকুয়াশায় দিক ঠিক না পেয়ে মাঝ নদীতে নোঙর করে থাকে। এছাড়া আরিচায় একটি এবং কাজিরহাট ঘাটে দু’টি ফেরি যানবাহন নিয়ে নোঙর করে থাকতে বাধ্য হয়।
পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটেও ঘণকুয়াশার কারণে গতকাল সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত তিন ঘন্টা ফেরি চলাচল বন্ধ থাকে। ঘণকুয়াশায় নৌপথ দৃষ্টিসীমার বাইরে চলে যাওয়ায় দুর্ঘটনা এড়াতে বাধ্য হয়ে কর্তৃপক্ষ ফেরি চলাচল বন্ধ রাখেন। এ সময় পাটুরিয়া ঘাটে ৮টি ফেরি এবং বাকী ফেরিগুলো যাত্রী ও যানবাহন নিয়ে মাঝ নদীতে এবং দৌলতদিয়া ঘাটে নোঙর করে থাকে। আটকে পড়া এসব ফেরির যাত্রী ও যানবাহন শ্রমিকদেরকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এদিকে ঘণকুয়াশায় ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় যানবাহন পারাপারও কমে গেছে। ফলে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া এবং আরিচা-কাজিরহাট ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় পণ্যবাহী ট্রাকের সংখ্যা বাড়ছে। কুয়াশা কেটে যাওয়ার পর যাত্রীবাহী যানবাহনগুলোকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে পারাপার করা হচ্ছে। এরপরও কুয়াশার কারণে ফেরি বন্ধ থাকায় আগের দিন রাতে আসা নৈশকোচগুলোসহ সকল যাত্রীবাহী যানবাহনগুলোকে ঘাটে এসে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা পর পরের দিন সকালে অথবা দুপুরের নদী পারাপার হতে হচ্ছে। দীর্ঘ এসময় যাত্রীদেরকে বাস ও ফেরির মধ্যেই বসে এবং রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে সময় কাটাতে হচ্ছে। খাবার সঙ্কট এবং প্রকৃতির ডাকে সারা দেওয়াসহ নানা ধরনের ভোগান্তিতে পড়ছেন এসব যাত্রীরা। বিশেষ করে কুয়াশা এবং ঠান্ডার মধ্যে বেশি অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে নারী এবং শিশু যাত্রীদেরকে।
অপরদিকে ঘাট এলাকায় যানজট এড়াতে পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে পাটুরিয়া এবং দৌলতদিয়া ঘাটের টার্মিনালগুলো ভর্তি পর মানিকগঞ্জের ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের উথলী থেকে আরিচা ঘাটে দিকে ৪ কিলোমিটার এবং রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ মোড় এলাকা থকে ৫ কিলোমিটার এলাকা জুরে মহাসড়কের উপর আটকিয়ে রাখছে পুলিশ। এসব ট্রাকের ফেরি পারাপার হতে অনেক সময় লাগছে। দীর্ঘসময় অপক্ষোয় থাকায় হাতে থাকা খরচার টাকা ফুরিয়ে গিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন এসব ট্রাকের শ্রমিকরা।
বিআইডব্লিউটিসি’র আরিচা আঞ্চলিক কার্যালয়ের ডিজিএম মো. জিল্লুর রহমান জানান, ঘণকুয়াশা এটা প্রকৃতিগত সমস্যা। এখানে মানুষের করার কিছুই নেই। কুয়াশার কারণে নৌপথ চোঁখে দেখা যাচ্ছিল না। এমতাবস্থায় ফেরি চালালে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এ আশঙ্কায় ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন