স্টাফ রিপোর্টার : আগামী ৭ অথবা ৮ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের দিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে চায় বিএনপি। এ ব্যাপারে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে দলটি। এছাড়াও ওইদিন র্যালী, শহীদ জিয়ার মাজার জিয়ারতসহ নানা আয়োজন করেছে দলটি।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে যৌথসভা শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই সমাবেশের কথা জানান। এদিকে আওয়ামী লীগের সম্মেলনে যাবে কি না এ নিয়ে দলীয় ফোরামে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে উপলক্ষে আমাদের সবচেয়ে বড় কর্মসূচি হচ্ছে, ৭ অথবা ৮ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কর্তৃপক্ষের কাছে দুইদিনের যেকোনো একদিনের জন্য চাই। আমরা আশা করি, আওয়ামী লীগ যেভাবে দলীয় কর্মসূচি পালন করছে সকল রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে, আমরা ন্যূনতম জনসভা করার অধিকার পাবো, সেটার জন্য তারা আমাদের সহযোগিতা করবেন।
১৯৭৫ সালের রাজনৈতিক পালাবদলের এক পর্যায়ে ৭ নভেম্বর সিপাহী বিপ্লবের মাধ্যমে সেনানিবাসে বন্দি মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান মুক্ত হন। এই দিবসটিকে বিএনপি ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি’ দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।
নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের যৌথসভা হয়। প্রেস ব্রিফিংয়ে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ১০ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপি মহাসচিব। কর্মসূচির মধ্যে আছে, ৭ নভেম্বর ভোরে দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ১০টায় শেরে বাংলা নগরে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে বেগম খালেদা জিয়াসহ নেতৃবৃন্দের পুষ্পমাল্য অর্পণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা এবং মুক্তিযোদ্ধা দলের ঢাকায় শোভাযাত্রা। দিবস উপলক্ষে বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনগুলো পোস্টার ও সংবাদপত্রে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। এছাড়া জেলা ও উপজেলাসহ সকল ইউনিটে দিবসটি পালনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
মির্জা ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় শামসুজ্জামান দুদু, মাহবুবউদ্দিন খোকন, মজিবুর রহমান সারোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, হারুনুর রশীদ, বিলকিস জাহান শিরিন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শামা ওবায়েদ, মাহবুবুর রহমান শামীম, জয়নাল আবেদীন, অধ্যাপক ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, কায়সার কামাল, আমিনুল হক, এবিএম মোশাররফ, আবদুল মোমিন তালুকদার খোকা, শরীফুল আলম, আব্দুস সালাম আজাদ, মাহবুবুল হক নান্নু, আমিরুল ইসলাম আলিম, জয়ন্ত কুন্ড, শহিদুল ইসলাম বাবুল, শাহিন শওকত, আব্দুুল আউয়াল খান, আকন কুদ্দুসুর রহমান, মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ, আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দের মধ্যে ছিলেন, ইউনুস মৃধা, সুলতানা আহমেদ, হাফেজ আব্দুুল মালেক, শাহ নেসারুল হক, রফিকুল ইসলাম মাহতাব, আবুল কালাম আজাদ, আবুল হোসেন, রাজীব আহসান প্রমুখ।
আ’লীগের সম্মেলনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ফোরামে
আওয়ামী লীগের সম্মেলনে যোগ দেয়ার বিষয়টি ‘দলীয় ফোরামে’ সিদ্ধান্ত হবে বলে জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধিদল তাদের কাউন্সিলে যোগ দেয়ার জন্য আমাদের দাওয়াত করেছেন, তারা এসেছিলেন। এজন্য আমরা আওয়ামী লীগকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। দাওয়াত পেয়েছি, যাওয়ার বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নেবো।
গত বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ১১টায় নয়া আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক মৃনাল কান্তি দাসের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এসে দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে শনিবারের সম্মেলনে আমন্ত্রণপত্র পৌঁছিয়ে দেন। আগামীকাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সকাল ১০টায় আওয়ামী লীগের দুইদিনব্যাপী ২০তম জাতীয় কাউন্সিল শুরু হবে।
গত ১৯ মার্চ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণে দলের ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে আওয়ামী লীগের কেউ যোগ না দেয়ায় দুঃখ বোধের কথাও প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, দেখুন আমরা আরো খুশি হতাম যদি আমরা যখন তাদেরকে (আওয়ামী লীগ) আমাদের কাউন্সিলের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম, তারা কাউন্সিলের আসবেন। অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে হলেও সত্যি তারা আসেননি। কেবল তাই নয়, দুঃখজনক সরকার সঠিকভাবে ওই কাউন্সিল অনুষ্ঠানে অনেক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছিলো।
তিনি বলেন, আমরা কাউন্সিলকে ইতিমধ্যে স্বাগত জানিয়েছি। আমরা আশা করি, এই সম্মেলন থেকে বাংলাদেশে যে গণতন্ত্র হারিয়ে গেছে, সেই গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার জন্য তারা উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। এই কাউন্সিল থেকে তারা এর সূচনা করবেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন