রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

কে হতে যাচ্ছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান

প্রকাশের সময় : ২২ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : উরি হামলা পরবর্তী দিনগুলোতে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই যখন চড়ছে, তখন অনেকেরই দৃষ্টি পাকিস্তানের আগামী সেনাপ্রধান মনোনয়নের দিকে। কে হচ্ছেন পাকিস্তানের পরবর্তী সেনাপ্রধান? বর্তমান সেনা প্রধান জেনারেল রাহিল শরীফ নভেম্বরে অবসরে যাচ্ছেন। তিনি ২০১৩ সালে সেনাপ্রধান নিযুক্ত হন। বলা দরকার, পাকিস্তানে রাজনীতিক ও সামরিক বাহিনীর মধ্যকার পারস্পরিক অবিশ^াস তাদের সম্পর্কের উপর চাপ ফেলেছে। পাকিস্তানে সশস্ত্রবাহিনীকে সুপরিচালিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখা হয় এবং সামরিক বাহিনী রাজনীতিকদের দুর্নীতিগ্রস্ত ও দেশকে অব্যবস্থার মধ্যে ঠেলে দেয়ার জন্য দায়ী করে। বেসামরিক নেতারা দেখছেন, সামরিক বাহিনী দেশের ২০ শতাংশ বাজেট নিয়ে নিচ্ছে যার কোনো জবাবদিহিতা নেই। আর তাদের রয়েছে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে অপসারণের ইতিহাস। যেমন ১৯৭৭-এ ভুট্টোর মনোনীত সেনাপ্রধান জেনারেল জিয়া-উল-হক ও ১৯৯৯-এ নওয়াজ শরীফের মনোনীত সেনাপ্রধান জেনারেল পারভেজ মোশাররফ তাদের ক্ষমতাচ্যুত করেন। 

জেনারেল রাহিল শরীফের পূর্বসূরী জেনারেল আশফাক কায়ানির চাকরির মেয়াদ শেষ হলেও দেশে বিদ্যমান পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে তা ৩ বছর বাড়ানো হয়েছিল। কিন্তু রাহিল শরীফ আগেই বলে দিয়েছেন তিনি মেয়াদ বৃদ্ধি চান না। অতএব স্বভাবতই কোনো সিনিয়র জেনারেলের সেনাপ্রধান হওয়ার কথা। ইউরেশিয়া গ্রুপের এক এশিয়া বিশ্লেষক সাশা রাইজার-কসিটস্কি ব্লুমবার্গ রেডিওর সাথে এক সাক্ষাতকারে বলেন, অত্যন্ত জনপ্রিয় রাহিল শরীফ রাজনীতিতে যোগ দিতে পারেন বা মধ্যপ্রাচ্যে নিজের নতুন ক্যারিয়ার গড়তে পারেন।
লন্ডনের রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউট ফর ডিফেন্স অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ-এর রিসার্চ ফেলো এমিলি উইন্টারবথাম বলেন, সেনাপ্রধান নির্বাচনের ক্ষেত্রে কাশ্মীর প্রসঙ্গ নওয়াজ শরীফের চিন্তায় প্রভাব ফেলবে। লন্ডনের ফরেন অফিসার্স ইনস্টিটিউট চ্যাথাম হাউসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো গ্যারেথ প্রাইস বলেন, রাহিল শরীফের অবসরে যাওয়ার প্রত্যাশা সত্ত্বেও বর্তমান অশান্ত অবস্থার প্রেক্ষিতে তার মেয়াদ বাড়ানো হতে পারে।
ইসলামাবাদে সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ-এ নির্বাহী পরিচালক ইমতিয়াজ গুল বলেন, রাহিল শরীফকে তার পদে বহাল রাখা মূলত দেশকে ঘিরে রাখা জটিল ভূূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অবিচ্ছিন্নতা নিশ্চিত করবে।
তবে রাহিল শরীফ যদি অবসরে যান সেক্ষেত্রে সম্ভাব্য সেনাপ্রধান পদের জন্য যাদের নাম বিবেচনায় আসতে পারে তারা হচ্ছেনঃ
লেঃ জেনারেল জুবায়ের মাহমুদ হায়াত। তিনি বর্তমানে জেনারেল স্টাফ প্রধান। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ । বৈদেশিক অপারেশন ও ইন্টেলিজেন্স তার তত্ত্বাবধানে। এর আগে তিনি দক্ষিণ পাঞ্জাবে একটি কোরের কমান্ডে এবং দেশের পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির নিয়ন্ত্রণকারী কৌশলগত পরিকল্পনা বিভাগের নেতৃত্বে ছিলেন।
লেঃ জেনারেল ওমর জাভেদ বাজওয়া। তিনি সেনাবাহিনীর ইন্সপেক্টর জেনারেল অব ট্রেনিং অ্যান্ড ইভাল্যুয়েশন। রাহিল শরীফ সেনাপ্রধান হওয়ার আগে এ পদে ছিলেন। বাজওয়া সশস্ত্র বাহিনীর সদর দপ্তরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ১০ কোরের কমান্ডার ছিলেন।
লেঃ জেনারেল জাভেদ ইকবাল রামদে। বাহওয়ালপুরে একটি কোরের কমান্ডার। তিনি জাতীয় প্রতিরক্ষা বিশ^বিদ্যালয়ের সভাপতি ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর সাথে তার পরিবারের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা আছে। কার এক আত্মীয় আইনপ্রণেতা।
লেঃ জেনারেল ইসফাক নাদিম আহমদ। তিনি কাশ্মীর রেজিমেন্টের এবং দক্ষিণ পাঞ্জাবে মুলতান কোরের কমান্ডার। রাহিল শরিফের আমলে প্রথম যাদের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ করা হয় তিনি তাদের একজন। এর আগে তিনি জেনারেল স্টাফ প্রধান ও মিলিটারি অপারেশন্সের মহাপরিচালক ছিলেন। ২০০৯ সালে দেশের উত্তরপশ্চিমে প্রথম বড় ধরনের সন্ত্রাস বিরোধী অভিযানে নেতৃত্ব দেন। সূত্র : ব্লুমবার্গ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
ফিরোজ ২২ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:২৭ এএম says : 0
এ পরিস্থিতিতে বর্তমান সেনা প্রধান জেনারেল রাহিল শরীফকেই রাখা উচিত হবে।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন