স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’ নির্মাণের কাজ ৫০ শতাংশ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। আগামী বছর ডিসেম্বরে উৎক্ষেপণের পর ২০১৮ সালের এপ্রিল নাগাদ এ স্যাটেলাইট বাণিজ্যিক অপারেশন শুরু করতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। গতকাল (শুক্রবার) গুলশানের বিটিসিএল টেলিফোন এক্সচেঞ্জ ভবনে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ প্রকল্পের অগ্রগতি এবং সারা দেশে স্থাপিত অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্ক নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান। তারানা হালিম বলেন, ইতোমধ্যে স্যাটেলাইট সিস্টেম রিকোয়ারমেন্ট রিভিউ (এসআরআর) এবং প্রিলিমিনারি ডিজাইন রিভিউ (পিডিআর) সম্পন্ন হয়েছে। ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ এর ইঞ্জিনিয়ারিং কাজ ৮৩ শতাংশ, অ্যান্টেনা তৈরির কাজ ৫৬ শতাংশ এবং কমিউনিকেশন ও সার্ভিস মডিউল তৈরির কাজ ৬৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১৭ সালের নভেম্বরে এর নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের স্পেসএক্স ও ফ্যালকন ৯ উৎক্ষেপণযান ব্যবহার করে ফ্লোরিডার লঞ্চ প্যাড থেকে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে এ উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করা হবে। ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’ নির্মাণের এই কাজ চলছে ফ্রান্সে থালিস এলিনিয়া স্পেসের ফ্যাসিলিটিতে। নির্মাণ, পরীক্ষা ও পর্যালোচনা শেষে বিশেষ কার্গো বিমানে যুক্তরাষ্ট্রের লঞ্চ সাইট কেপ কার্নিভালে পাঠানো হবে সেটি। উৎক্ষেপণের এক মাস আগে থেকে স্পেসএক্স এর লঞ্চ ফ্যাসিলিটিতে লঞ্চ ভেহিকল ফ্যালকন-৯ এর ইন্ট্রিগ্রেশনসহ প্রয়োজনীয় পরীক্ষা শুরু হবে।
ইতোমধ্যে স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড স্টেশনের ভৌত নির্মাণের ৪০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, থালিস ইতোমধ্যে গ্রাউন্ড স্টেশনের জন্য যন্ত্রপাতি কেনার কাজ শেষ করেছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের প্রকল্প পরিচালক গোলাম রাজ্জাক বলেন, উৎক্ষেপণের আগে লঞ্চ প্যাডে প্রস্তুতিতে দুই মাস সময় লাগে। নির্ধারিত সময়েই উৎক্ষেপণের কাজ শেষ হবে আশা প্রকাশ করেন তিনি। ২০১৫ সালের ২১ অক্টোবর সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’ উৎক্ষেপণে ‘স্যাটেলাইট সিস্টেম’ কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়। এরপর ১১ নভেম্বর ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’ উৎক্ষেপণের জন্য প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার ‘স্যাটেলাইট সিস্টেম’ কিনতে থালিসের সঙ্গে চুক্তি করে বিটিআরসি। গত সেপ্টেম্বরে ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’ উৎক্ষেপণে অর্থায়নের জন্য হংক সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশনের (এইচএসবিসি) সঙ্গে বিটিআরসি প্রায় এক হাজার ৪০০ কোটি টাকার ঋণচুক্তি করে। ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’ উৎক্ষেপণের পর বিদেশি স্যাটেলাইটের ভাড়া বাবদ বছরে ১৪ মিলিয়ন ডলার সাশ্রয় হবে বলে সরকার আশা করছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে ৪০টি ট্রান্সপন্ডার থাকবে, যার ২০টি বাংলাদেশের ব্যবহারের জন্য রাখা হবে এবং বাকিগুলো ভাড়া দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব হবে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের গ্রাউন্ড স্টেশন স্থাপনের জন্য গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর ও রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়ায় দুটি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন