শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বিএসইসির সঙ্গে বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি

বাংলাদেশ ব্যাংকের বিজ্ঞপ্তি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০৭ এএম

বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন-বিএসইসির বৈঠকের পর সংস্থাটির পক্ষ থেকে দেয়া বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় গতকাল পুঁজিবাজারে উত্থান হয়। কিন্তু সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে দেয়া একটি বক্তব্যে আবার তৈরি হয়েছে বিভ্রান্তি। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংক এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, গত মঙ্গলবারের বৈঠকে কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। অবশ্য সেই বৈঠকের পর বিএসইসি’র কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদও বলেননি সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি নীতিগতভাবে একমত হওয়ার কথা বলেছিলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক জী এম আবুল কালাম আজাদ সাক্ষরিত এই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সভায় পুঁজিবাজারে তফসিলি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগ সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন, ১৯৯৩ এ পুঁজিবাজারে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগের বিষয়ে বিদ্যমান কতিপয় আইনি সীমাবদ্ধতার বিষয়েও বিএসইসি প্রতিনিধি দলকে স্পষ্টীকরণ করা হয়। তবে এ সব বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসি’র এই বৈঠকের প্রতি বিনিয়োগকারীরা অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় ছিলেন দুই ইস্যুতে। প্রথমত ব্যাংকের শেয়ার কেনার বিনিয়োগসীমা ক্রয়মূল্যে নাকি বাজারমূল্যে বিবেচনা করা হবে; দ্বিতীয়ত, বন্ডের বিনিয়োগ ব্যাংকের এই বিনিয়োগসীমার বাইরে থাকবে কি না।
বৈঠক শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে কেউ কথা বলেননি। তবে বিএসইসির পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দেয়া কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, এক্সপোজার লিমিট নিয়ে আমরা নীতিগত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পেরেছি। আমরা এটা রিভিউ করব। গ্লোবালি এক্সপোজার লিমিট কস্ট প্রাইজের ভিত্তিতে করা হয়। এটি টেকনিক্যাল বিষয়, আরও গভীরভাবে আলোচনা করতে হবে।
বন্ডে ব্যাংকের বিনিয়োগ বিষয়ে তিনি বলেন, তাদের বুঝিয়ে বলেছি, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বন্ডে বাংকের বিনিয়োগ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগসীমার মধ্যে না রাখতে। এতে বাংলাদেশের বন্ড বাজার বড় হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল বলা হয়, সভা শেষে বিএসইসি কমিশন-এর প্রতিনিধির বরাত দিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে উক্ত সভায় কতিপয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের যে সংবাদ প্রচার করা হয়েছে তা সঠিক নয়। অবশ্য শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেননি কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে। তার বক্তব্য ছিল ‘আমরা নীতিগতভাবে একমত হয়েছি। এগুলোর দাপ্তরিক প্রক্রিয়া শেষ করে বিস্তারিত জানানো হবে’। এমনকি বৈঠক শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলামও সাংবাদিকদের বলেন, খুবই সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে আলোচনা হয়েছে। যে বিষয়গুলোতে আলোচনা হয়েছে, সামনে এসব বিষয়ে কিছু সিদ্ধান্ত আসতে পারে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্রের এই ধরনের বক্তব্যের পরদিন আবার এই বিপরীতমুখি বক্তব্য দেয়া হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবারের বৈঠকের বিষয়ে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর একেএম সাজেদুর রহমান খানের সভাপতিত্বে ৩০ নভেম্বর বিএসইসির একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত সভা বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বিএসইসি -এর উদ্যোগে ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড গঠনের ফলে তফসিলি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে সৃষ্ট জটিলতা নিরসন এবং পুঞ্জিভূত লোকসান বিদ্যমান থাকলেও সংশ্লিষ্ট বছরের মুনাফা তে নগদ লভ্যাংশ বিতরণের বিষয়ে আলোচনা হয়। সভায় ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ৩৫(১)(গ) ধারা ও ২২ ধারা এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন, ১৯৯৩ এর ১০ ধারার বিষয়গুলো ব্যাখ্যাপূর্বক ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের অদাবীকৃত তহবিল স্থানান্তরের এবং পুস্তি লোকসান বিদ্যমান থাকলেও সংশ্লিষ্ট বছরের মুনাফা হতে নগদ লভ্যাংশ বিতরণের বিষয়টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে আইনসম্মত নয় বলে বিএসইসি প্রতিনিধিদলকে অবহিত করা হয় এবং এতদবিষয়ে বিএসইসি-এর নোটিফিকেশনে প্রয়োজনীয় সংশোধন আনয়নের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন